ঢাকা ০৮:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি :
সারাদেশের জেলা উপোজেলা পর্যায়ে দৈনিক স্বতঃকণ্ঠে সংবাদকর্মী নিয়োগ চলছে । আগ্রহী প্রার্থীগন জীবন বৃত্তান্ত ইমেইল করুন shatakantha.info@gmail.com // দৈনিক স্বতঃকণ্ঠ অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৭১১-৩৩৩৮১১, ০১৭৪৪-১২৪৮১৪

পাঁচ বছরেও আটঘরিয়ার আখি হত্যার বিচার পাননি পিতা

বার্তাকক্ষ
  • প্রকাশিত সময় ০১:২৪:২৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ মার্চ ২০২০
  • / 72

বার্তা সংস্থা পিপঃ যৌতুকের দাবিতে শশুর বাড়ির লোকজনের মারধরের পরে মুখে বিষ ঢেলে হত্যা করা হয় আখিকে। পেরিয়ে গেছে পাঁচ বছর। একমাত্র সন্তান আখি হত্যার বিচার পাননি আটঘরিয়ার চাঁদভা ইউনিয়নের কুষ্টিয়া পাড়ার হতভাগ্য দরিদ্র পিতা আতাউর হক।

তবে আজো সে বিশ্বাসী যে অন্যায়ভাবে যারা তার মেয়েকে হত্যা করেছে তাদের বিচার হবেই।

২০১৫ সালের ২০ জানুয়ারি যৌতুকের দাবিতে আখিকে বেধরকভাবে মারধরের পরে গলার ভেতরে জোরপূর্বক কীটনাশক ঢুকিয়ে দিয়ে গিলে ফেলতে বাধ্য করে স্বামী ও শশুরবাড়ির লোকজন বলে অভিযোগ তার পরিবারের।

২০১১ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর কদমডাঙ্গা গ্রামের আজগর সরদারের ছেলে আব্দুস সাত্তার সরদারের সাথে বিয়ে হয় আখির। কদমডাঙ্গা গ্রামে একান্নবতি পরিবারে অবস্থান করা ঘরবধূ আখির জীবনের শুরু থেকেই নেমে আসে যৌতুকের কালো থাবা। শশুড়, স্বামী, শাশুড়ি ২ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে তাকে অবিরত। পিতা গরিব মানুষ টাকা দেওয়ার ক্ষমতা নেই জানালে আখির ওপরে মেনে আসে কঠোর নির্যাতন। এরই এক পর্যায়ে তাকে নির্মমতার শিকার হয়ে নিজের জীবনকে দিয়ে দিতে হয় যৌতুক নামের অভিশাপের বলিতে। পাবনা সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয় আখির।

ঐ সময়ে থানা পুলিশ মামলা গ্রহন করেনি বলে অভিযোগ করে আখির পিতা জানান, পরবর্তিতে তার স্ত্রী (আখির মা) জয়নব খাতুন বাদী হয়ে জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে মামলা (নম্বর-২৩৭/২০১৫) দায়ের করেন।

মামলার আসামিরা হলেন কদমডাঙ্গা গ্রামের আজগর সরদারের ছেলে আব্দুস সাত্তার সরদার, মরহুম আব্বাস সরদারের ছেলে আজগর সরদার, আজগর সরদারের স্ত্রী মর্জিনা খাতুন এবং সিংগুরিয়া গ্রামের রহমত আলীর স্ত্রী হাসি খাতুন।

আখির মৃত্যুর ঘটনার পরে আটঘরিয়া থানা পুলিশ ঐদিন একটি অপমৃত্যু মামলা (নম্বর-০২/১৫) রুজু করে। যা কোনভাবেই মানতে রাজি নন আখির পিতা আতাউর রহমান। ঐ সময়ে থানাতে এজাহার দিতে গেলে থানা পুলিশের পক্ষ থেকে এজাহার না গ্রহন করে আদালতে মোকদ্দমা করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয় বাদীনি জয়নব খাতুনকে।

তবে এবিষয়ে আটঘরিয়া থানা পুলিশ জানায়, ২০১৫ সালের ২০ জানুয়ারিতে আখির পিতা আতাউর হক থানাকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন যে সাংসারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমার মেয়ে আখির সাথে স্বামী ও পরিবারের সদস্যদের কথা কাটাকাটি হয়। এরই প্রেক্ষিতে পরিবারের সকল সদস্যদের অগোচরে সে কীটনাশক পান করে ছটফট করতে থাকে। তার এ অবস্থা দেখে তার স্বামী ও শশুরবাড়ির লোকজন উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রথমে আটঘরিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরবর্তিতে পাবনা সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে সে মারা যায়।

থানা পুলিশ জানায়, সে তো থানাতে আবেদনপত্রে লিখেছে যে তার মেয়ে সকলের অগোচরে কীটনাশক পান করেছে।

তবে এবিষয়ে আতাউর জানান, আমি মুর্খ মানুষ। লেখাপড়া জানিনা থানা থেকে যা লিখে দিয়েছে তাই আছে। এখন পরে লোকজনের মাধ্যমে জানি যে এটা লেখা হয়েছে।

তবে তিনি বলেন, তার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে এবং মেয়ে হত্যার বিচার চান তিনি। তার স্ত্রী আদালতে মামলা করলেও এতোদিন পার হলেও কেউ গ্রেফতার হয়নি।

বরং তারা বিভিন্ন স্থানে বলে বেড়াচ্ছে যে এই মামলা ঠিক হয়ে গেছে, আমরা আপোস করে ফেলেছি। সব মিলিয়ে কিছুই বুঝে উঠতে পারছেন না দরিদ্র ও লেখাপড়া না জানা আতাউর হক। তিনি আখি হত্যার ঘটনার প্রকৃত তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

পাঁচ বছরেও আটঘরিয়ার আখি হত্যার বিচার পাননি পিতা

প্রকাশিত সময় ০১:২৪:২৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ মার্চ ২০২০

বার্তা সংস্থা পিপঃ যৌতুকের দাবিতে শশুর বাড়ির লোকজনের মারধরের পরে মুখে বিষ ঢেলে হত্যা করা হয় আখিকে। পেরিয়ে গেছে পাঁচ বছর। একমাত্র সন্তান আখি হত্যার বিচার পাননি আটঘরিয়ার চাঁদভা ইউনিয়নের কুষ্টিয়া পাড়ার হতভাগ্য দরিদ্র পিতা আতাউর হক।

তবে আজো সে বিশ্বাসী যে অন্যায়ভাবে যারা তার মেয়েকে হত্যা করেছে তাদের বিচার হবেই।

২০১৫ সালের ২০ জানুয়ারি যৌতুকের দাবিতে আখিকে বেধরকভাবে মারধরের পরে গলার ভেতরে জোরপূর্বক কীটনাশক ঢুকিয়ে দিয়ে গিলে ফেলতে বাধ্য করে স্বামী ও শশুরবাড়ির লোকজন বলে অভিযোগ তার পরিবারের।

২০১১ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর কদমডাঙ্গা গ্রামের আজগর সরদারের ছেলে আব্দুস সাত্তার সরদারের সাথে বিয়ে হয় আখির। কদমডাঙ্গা গ্রামে একান্নবতি পরিবারে অবস্থান করা ঘরবধূ আখির জীবনের শুরু থেকেই নেমে আসে যৌতুকের কালো থাবা। শশুড়, স্বামী, শাশুড়ি ২ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে তাকে অবিরত। পিতা গরিব মানুষ টাকা দেওয়ার ক্ষমতা নেই জানালে আখির ওপরে মেনে আসে কঠোর নির্যাতন। এরই এক পর্যায়ে তাকে নির্মমতার শিকার হয়ে নিজের জীবনকে দিয়ে দিতে হয় যৌতুক নামের অভিশাপের বলিতে। পাবনা সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয় আখির।

ঐ সময়ে থানা পুলিশ মামলা গ্রহন করেনি বলে অভিযোগ করে আখির পিতা জানান, পরবর্তিতে তার স্ত্রী (আখির মা) জয়নব খাতুন বাদী হয়ে জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে মামলা (নম্বর-২৩৭/২০১৫) দায়ের করেন।

মামলার আসামিরা হলেন কদমডাঙ্গা গ্রামের আজগর সরদারের ছেলে আব্দুস সাত্তার সরদার, মরহুম আব্বাস সরদারের ছেলে আজগর সরদার, আজগর সরদারের স্ত্রী মর্জিনা খাতুন এবং সিংগুরিয়া গ্রামের রহমত আলীর স্ত্রী হাসি খাতুন।

আখির মৃত্যুর ঘটনার পরে আটঘরিয়া থানা পুলিশ ঐদিন একটি অপমৃত্যু মামলা (নম্বর-০২/১৫) রুজু করে। যা কোনভাবেই মানতে রাজি নন আখির পিতা আতাউর রহমান। ঐ সময়ে থানাতে এজাহার দিতে গেলে থানা পুলিশের পক্ষ থেকে এজাহার না গ্রহন করে আদালতে মোকদ্দমা করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয় বাদীনি জয়নব খাতুনকে।

তবে এবিষয়ে আটঘরিয়া থানা পুলিশ জানায়, ২০১৫ সালের ২০ জানুয়ারিতে আখির পিতা আতাউর হক থানাকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন যে সাংসারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমার মেয়ে আখির সাথে স্বামী ও পরিবারের সদস্যদের কথা কাটাকাটি হয়। এরই প্রেক্ষিতে পরিবারের সকল সদস্যদের অগোচরে সে কীটনাশক পান করে ছটফট করতে থাকে। তার এ অবস্থা দেখে তার স্বামী ও শশুরবাড়ির লোকজন উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রথমে আটঘরিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরবর্তিতে পাবনা সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে সে মারা যায়।

থানা পুলিশ জানায়, সে তো থানাতে আবেদনপত্রে লিখেছে যে তার মেয়ে সকলের অগোচরে কীটনাশক পান করেছে।

তবে এবিষয়ে আতাউর জানান, আমি মুর্খ মানুষ। লেখাপড়া জানিনা থানা থেকে যা লিখে দিয়েছে তাই আছে। এখন পরে লোকজনের মাধ্যমে জানি যে এটা লেখা হয়েছে।

তবে তিনি বলেন, তার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে এবং মেয়ে হত্যার বিচার চান তিনি। তার স্ত্রী আদালতে মামলা করলেও এতোদিন পার হলেও কেউ গ্রেফতার হয়নি।

বরং তারা বিভিন্ন স্থানে বলে বেড়াচ্ছে যে এই মামলা ঠিক হয়ে গেছে, আমরা আপোস করে ফেলেছি। সব মিলিয়ে কিছুই বুঝে উঠতে পারছেন না দরিদ্র ও লেখাপড়া না জানা আতাউর হক। তিনি আখি হত্যার ঘটনার প্রকৃত তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।