ঢাকা ১১:৪৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি :
সারাদেশের জেলা উপোজেলা পর্যায়ে দৈনিক স্বতঃকণ্ঠে সংবাদকর্মী নিয়োগ চলছে । আগ্রহী প্রার্থীগন জীবন বৃত্তান্ত ইমেইল করুন shatakantha.info@gmail.com // দৈনিক স্বতঃকণ্ঠ অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৭১১-৩৩৩৮১১, ০১৭৪৪-১২৪৮১৪

পাবনায় প্রায় ৫ শতাধিক ডেকোরেটর মালিক ও শ্রমিক মানবেতর জীবন যাপন করছে

বার্তাকক্ষ
  • প্রকাশিত সময় ০৩:২৭:০৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ জুন ২০২০
  • / 366

স্টাফ রিপোর্টারঃ পাবনার প্রায় ৫ শতাধিক ডেকোরেটর মালিক ও শ্রমিকের জীবন ও জীবিকা করোনার ভয়াল থাবায় হয়ে পড়েছে মানবেতর। অমানবিক চাপা বোবা কষ্টে দিন কাটছে তাদের। সদরের প্রায় সত্তরটিসহ গোটা জেলার প্রায় ৫ শতাধিক এই ডেকোরেটর মালিক ও শ্রমিকেরা পরিবার নিয়ে চরম সংকটে দিনাতিপাত করছেন।

রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় নানা আয়োজন বন্ধ হয়ে গেছে করোনার সর্বনাশী ভয়াল থাবায়। তিনমাস হলো প্রতিষ্ঠান বন্ধ, নেই কোন কার্যক্রম। অনেকেরই ডেকোরেটর মালামাল অন্যের ভাড়া করা জায়গাতে রেখে দেওয়ার কারনে প্রতিমাসে একটি টাকা কামাই না হলেও তাদের টানতে হচ্ছে মাসিক ভাড়া।

দেশে করোনা ভাইরাস পাদুর্ভাবের শুরুর দিকে সরকারিভাবে লকডাউনের পূর্বে গত ১৬ মার্চ জেলা প্রশাসক তার কার্যালয়ে জেলা ডেকোরেটর মালিক সমিতির সভাপতি ও সাধারন সম্পাদককে ডেকে জেলার সমস্ত ডেকোরেটরের ব্যবসা বন্ধ রাখতে মৌখিকভাবে অনুরোধ জানান। সে কারনে জনস্বার্থ বিবেচনায় ও জেলা প্রশাসকের আহবানে সাড়া দিয়ে জেলার সমস্ত ডেকোরেটর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষনা করা হয়, যেগুলো অদ্যাবধি বন্ধ রয়েছে।

ইতোমধ্যেই সরকারিভাবে প্রনোদনা ঘোষনা করা হয়েছে বিভিন্ন শ্রেনীর ব্যবসায়ীদের মাঝে। জেলার ডেকোরেটর ব্যবসায়ীরা সরকারিভাবে কোন ধরনের প্রনোদনা বা কোন ধরনের সহযোগিতা তারা পাননি বলে জানান।

কয়েকজন ডেকোরেটর ব্যবসায়ীর সাথে কথা বলে জানা যায়, বর্তমান অবস্থায় তাদের পক্ষে দোকান ভাড়া, গোডাউন ভাড়া, শ্রমিক কর্মচারীদের বেতন পরিশোধ করা কোনভাবেই সম্ভব হচ্ছেনা তাদের। একারনে একদিকে পরিবার নিয়ে কোন রকমে টিকে থাকা, অপরদিকে মালামাল ভাড়া জায়গাতে গোডাউনে ও দোকানে ভাড়া দেওয়া, সবকিছু মিলিয়ে তাদের জীবন জেরবার অবস্থা। এখন মালামাল বিক্রি করে ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া যেন কোন আর রাস্তা খোলা নেই তাদের বলে জানান কয়েকজন ব্যবসায়ী।

এদিকে কয়েকজন শ্রমিক জানান, বাড়িতে তাদের খাবার সংকটে আছেন তারা। ঘুরে ঘুরে মহাজনের কাছেই তো যেতে হয় তাদের। মহাজনের কোন কামাই নেই, তারপরও যেটুকু পারে দেয়, তা দিয়েই চলি। এতো বড় কঠিন সময়েও মহাজনদের কাছে গেলে যতো সমস্যায় হোক খালি হাতে ফেরাই না তারা, এটাই তাদের কাছে এক ভালো লাগা। এভাবে চলতে থাকলে তো ডেকোরেটর সব একবারে বন্ধ হয়ে যাবে বলে শংকা প্রকাশ করেন এসব শ্রমিকেরা।

আর ডেকোরেটর মালিকেরা জানান, করোনার এই ভয়াবহতা সহসায় কেটে না গেলে এই সেবাখাতটি যেমন ধ্বংসের মুখে পড়বে, ঠিক তেমনই অনেক ব্যবসায়ী আর্থিকভাবে পঙ্গু হয়ে যাবেন। ফলে এই সেবাখাতকে বাঁচিয়ে রাখতে স্বল্পসুদে ব্যাংক ঋণসহ কিছু সুবিধা প্রদানের ব্যবস্থা করা এখন জরুরী হয়ে পড়েছে।

এসব বিষয় নিয়ে কথা বললে জেলা ডেকোরেটর মালিক সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুল হান্নান ও সাধারন সম্পাদক সৌমেন সাহা ভানু জানান, একটি ডেকোরেটর দোকান চালু করতে কমপক্ষে ৫ থেকে ৭ লাখ টাকা বিনিয়োগ করতে হয়। কিন্তু ডেকোরেটর ব্যবসায়ীদেরকে ব্যাংক থেকে এ বাবদ কোন ধরনের ব্যাংক ঋণ বা কোন ধরনের সুবিধা দেওয়া হয় না।

তারা এও বলেন, এদেশে ১০ হাজার টাকা বিনিয়োগের চায়ের দোকানীকে ব্যাংক থেকে সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়। কিন্তু তাদের কোন খোঁজখবর বা সুবিধার বিষয়টি চিন্তা করেনা কেউ, এটাই তাদের ভেতরে চাপা এক কষ্ট।

ডেকোরেটর ব্যবসা শুধু একটি ব্যবসায় নয়। এটি জনকল্যাণমূলক একটি সেবাখাত উল্লেখ করে তারা বলেন, এমন ভয়াবহ পরিস্থিতিতে ডেকোরেটর মালিকদের সহযোগিতার মাধ্যমে এই সেবাখাতকে টিকিয়ে রাখতে সরকারি উদ্যোগ গ্রহন না করলে এটি বিলুপ্ত হয়ে পড়ার শংকা রয়েছে। একারনে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেন তারা।

এই রকম আরও টপিক

পাবনায় প্রায় ৫ শতাধিক ডেকোরেটর মালিক ও শ্রমিক মানবেতর জীবন যাপন করছে

প্রকাশিত সময় ০৩:২৭:০৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ জুন ২০২০

স্টাফ রিপোর্টারঃ পাবনার প্রায় ৫ শতাধিক ডেকোরেটর মালিক ও শ্রমিকের জীবন ও জীবিকা করোনার ভয়াল থাবায় হয়ে পড়েছে মানবেতর। অমানবিক চাপা বোবা কষ্টে দিন কাটছে তাদের। সদরের প্রায় সত্তরটিসহ গোটা জেলার প্রায় ৫ শতাধিক এই ডেকোরেটর মালিক ও শ্রমিকেরা পরিবার নিয়ে চরম সংকটে দিনাতিপাত করছেন।

রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় নানা আয়োজন বন্ধ হয়ে গেছে করোনার সর্বনাশী ভয়াল থাবায়। তিনমাস হলো প্রতিষ্ঠান বন্ধ, নেই কোন কার্যক্রম। অনেকেরই ডেকোরেটর মালামাল অন্যের ভাড়া করা জায়গাতে রেখে দেওয়ার কারনে প্রতিমাসে একটি টাকা কামাই না হলেও তাদের টানতে হচ্ছে মাসিক ভাড়া।

দেশে করোনা ভাইরাস পাদুর্ভাবের শুরুর দিকে সরকারিভাবে লকডাউনের পূর্বে গত ১৬ মার্চ জেলা প্রশাসক তার কার্যালয়ে জেলা ডেকোরেটর মালিক সমিতির সভাপতি ও সাধারন সম্পাদককে ডেকে জেলার সমস্ত ডেকোরেটরের ব্যবসা বন্ধ রাখতে মৌখিকভাবে অনুরোধ জানান। সে কারনে জনস্বার্থ বিবেচনায় ও জেলা প্রশাসকের আহবানে সাড়া দিয়ে জেলার সমস্ত ডেকোরেটর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষনা করা হয়, যেগুলো অদ্যাবধি বন্ধ রয়েছে।

ইতোমধ্যেই সরকারিভাবে প্রনোদনা ঘোষনা করা হয়েছে বিভিন্ন শ্রেনীর ব্যবসায়ীদের মাঝে। জেলার ডেকোরেটর ব্যবসায়ীরা সরকারিভাবে কোন ধরনের প্রনোদনা বা কোন ধরনের সহযোগিতা তারা পাননি বলে জানান।

কয়েকজন ডেকোরেটর ব্যবসায়ীর সাথে কথা বলে জানা যায়, বর্তমান অবস্থায় তাদের পক্ষে দোকান ভাড়া, গোডাউন ভাড়া, শ্রমিক কর্মচারীদের বেতন পরিশোধ করা কোনভাবেই সম্ভব হচ্ছেনা তাদের। একারনে একদিকে পরিবার নিয়ে কোন রকমে টিকে থাকা, অপরদিকে মালামাল ভাড়া জায়গাতে গোডাউনে ও দোকানে ভাড়া দেওয়া, সবকিছু মিলিয়ে তাদের জীবন জেরবার অবস্থা। এখন মালামাল বিক্রি করে ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া যেন কোন আর রাস্তা খোলা নেই তাদের বলে জানান কয়েকজন ব্যবসায়ী।

এদিকে কয়েকজন শ্রমিক জানান, বাড়িতে তাদের খাবার সংকটে আছেন তারা। ঘুরে ঘুরে মহাজনের কাছেই তো যেতে হয় তাদের। মহাজনের কোন কামাই নেই, তারপরও যেটুকু পারে দেয়, তা দিয়েই চলি। এতো বড় কঠিন সময়েও মহাজনদের কাছে গেলে যতো সমস্যায় হোক খালি হাতে ফেরাই না তারা, এটাই তাদের কাছে এক ভালো লাগা। এভাবে চলতে থাকলে তো ডেকোরেটর সব একবারে বন্ধ হয়ে যাবে বলে শংকা প্রকাশ করেন এসব শ্রমিকেরা।

আর ডেকোরেটর মালিকেরা জানান, করোনার এই ভয়াবহতা সহসায় কেটে না গেলে এই সেবাখাতটি যেমন ধ্বংসের মুখে পড়বে, ঠিক তেমনই অনেক ব্যবসায়ী আর্থিকভাবে পঙ্গু হয়ে যাবেন। ফলে এই সেবাখাতকে বাঁচিয়ে রাখতে স্বল্পসুদে ব্যাংক ঋণসহ কিছু সুবিধা প্রদানের ব্যবস্থা করা এখন জরুরী হয়ে পড়েছে।

এসব বিষয় নিয়ে কথা বললে জেলা ডেকোরেটর মালিক সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুল হান্নান ও সাধারন সম্পাদক সৌমেন সাহা ভানু জানান, একটি ডেকোরেটর দোকান চালু করতে কমপক্ষে ৫ থেকে ৭ লাখ টাকা বিনিয়োগ করতে হয়। কিন্তু ডেকোরেটর ব্যবসায়ীদেরকে ব্যাংক থেকে এ বাবদ কোন ধরনের ব্যাংক ঋণ বা কোন ধরনের সুবিধা দেওয়া হয় না।

তারা এও বলেন, এদেশে ১০ হাজার টাকা বিনিয়োগের চায়ের দোকানীকে ব্যাংক থেকে সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়। কিন্তু তাদের কোন খোঁজখবর বা সুবিধার বিষয়টি চিন্তা করেনা কেউ, এটাই তাদের ভেতরে চাপা এক কষ্ট।

ডেকোরেটর ব্যবসা শুধু একটি ব্যবসায় নয়। এটি জনকল্যাণমূলক একটি সেবাখাত উল্লেখ করে তারা বলেন, এমন ভয়াবহ পরিস্থিতিতে ডেকোরেটর মালিকদের সহযোগিতার মাধ্যমে এই সেবাখাতকে টিকিয়ে রাখতে সরকারি উদ্যোগ গ্রহন না করলে এটি বিলুপ্ত হয়ে পড়ার শংকা রয়েছে। একারনে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেন তারা।