রেলিংয়ে গলায় ফাঁস নিয়ে ঝুলছিল মাদ্রাসা ছাত্র

- প্রকাশিত সময় ১০:৫৬:৩২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ এপ্রিল ২০২২
- / 107
ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৯:৪৭ রাত, এপ্রিল ১৫, ২০২২
ঈশ্বরদীতে মাদ্রাসার রেলিংয়ে গলায় ফাঁস নিয়ে ঝুলছিল ছাত্র ধামাচাপা দিতে মরিয়া র্কতৃপক্ষ।
পাবনার ঈশ্বরদীতে মাদ্রাসার রেলিংয়ে গলায় গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় এক ছাত্রকে উদ্ধার করেছে কয়েকজন পথচারী। সেই আত্মহত্যা চেষ্টার ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে মাদ্রসা র্কতৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রলি) সকাল আনুমানিক সাড়ে ৭ টার সময় ঈশ্বরদী পৌর এলাকার নিউকলোনি রওজাতুল কুরআন রহমানিয়া মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটছে।
সরেজমিন পরিদর্শনে জানা যায়, সাত মাস আগে দ্বীনের শিক্ষা নিতে অত্র মাদ্রাসায় মক্তব ১ম শ্রেণিতে ভর্তি হয় নাটোর জেলার লালপুর থানাধীন আব্দুলপুর পুকুরপাড়া এলাকার মো. জিন্নাত আলী সরকারের পুত্র মো. আল আমনি (১১)। মাসিক ২ হাজার টাকা খরচ প্রদানের বিনিময়ে আবাসিক শাখায় বেশ ভালোই লেখা-পড়া চলছিল আল আমিনের। বেশ মেধাবী এবং নম্র স্বভাবের ছেলে আল আমিন র্বতমানে অত্র মাদ্রাসার মক্তব দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র ছিল। প্রতিদিনের মত রাতে সেহেরি খাওয়ার পর সবার সাথে ঘুমিয়ে পড়েছিল আল আমিন।
কিন্তু সকালে কোন এক সময় আল আমনের ঘুম ভেঙ্গে গেলে সে তার বেডিংপত্র বাঁধা পাটের দঁড়ি দিয়ে মাদ্রাসার দোতলার রেলিংয়ের সাথে বেঁধে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলে পড়ে নিচে। এসময় রূপপুর পারমাণবিকের একজন কর্মী কাজে যাওয়ার সময় শিশু আল আমিনকে দোতলার রেলিংয়ের সাথে ঝুলতে দেখে চিৎকার দিলে মূর্হূতইে সেখানে আশেপাশের লোকজন ভীড় জমায়। এবং পথচারীদের তিনজন মিলে মাদ্রাসার সীমানা প্রাচীরের উপর দাঁড়িয়ে ঝুলন্ত শিশুটিকে জাপটে ধরে, মাদ্রাসা সংলগ্ন মুদি দোকান থেকে দোকানি একটি চাকু ও ব্লেড দিয়ে ফাঁসের দড়ি কেটে শিশুটিকে নামায় এবং মাথায় পানি দিয়ে সেবা-শুশ্রষা করে খানিকটা সুস্থ্য করে তোলে। এসময় মাদ্রসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সবাই ঘুমিয়ে ছিল বলে জানান উপস্থস্থিত লোকজন।
এসময় উপস্থিত লোকজনের চেঁচামেচিতে ঘুম ভাঙ্গে মাদ্রাসার শিক্ষকদের -জানান, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মুদি দোকানি রোকসানা বেগম। এ সময় শিক্ষক র্কতৃক ছাত্রদের উপর অত্যাচার-নির্যাতনের কথাও বলেন এলাকাবাসী।
মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মাওলানা গোলাম মোস্তফা দৈনিক স্বতঃকন্ঠকে বলেন, আমরা বাচ্চাদের কোন প্রকার অত্যাচার করিনি। আল আমনের পারিবারিক কলহের কারণে সে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। আল আমিনের বাবা গত তিন মাস কোন খবর নেয়নি বলেও জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, ওসব ঘটনার কারণেও সে এমনটা করতে পারে।
প্রধান শিক্ষক আরও বলেন, সুস্থ হওয়ার পর আল আমিনকে আত্মহত্যা চেষ্টার কারণ জানতে চাওয়ায় সে বলেছে যে আমি আমার মৃত মাকে স্বপ্নে দেখেছি। মা আমাকে তার কাছে ডাকছে তাই আমি আত্মহত্যা করতে চেয়েছি।
আল আমিনকে উদ্ধার করে প্রসাশন বা হাসপাতালে নেয়া হয়নি কেন? জানতে চাইলে প্রশ্নের কোন সদুত্তর দেননি মাদ্রাসার প্রধান শক্ষিক মওলানা গোলাম মোস্তফা। এ সময় উপস্থিত এলাকাবাসী মাদ্রাসার হুজুরদের আচরনেরও নানা সমালোচনা করেন।
ছেলের সঙ্গে টানা তিন মাস যোগাযোগ না করার কারণ জানতে চাইলে আল আমিনের পিতা মো. জিন্নাত আলী সরকার দৈনিক স্বতঃকন্ঠকে জানান, আমি র্নথবঙ্গেল সুগার মিলে চাকরি করি এবং আমার জমিতে চৈতালি থাকার কারণে মাস খানেক আমি ছেলেকে দেখতে যেতে পারি নি । তবে আমি প্রতিদিনই সকাল ১০ টা থেকে সাড়ে দশটা নাগাদ হুজুদের মোবাইলে ফোন করি কিন্তু হুজুররা ইদানিং আমার ফোন ধরে না। তাই ছেলের সাথে কথা হয়নি কয়েকদিন।
জিন্নাত আলী আরও বলেন, আমি যেতে না পারলেও আমার ভাতিজাকে দিয়ে আমার ছেলের মাসিক খরচের টাকা পাঠিয়েছি তাছাড়া তার মাধ্যমে বাড়িতেও আনা হয়েছে বেড়িয়ে যাওয়ার জন্য। সুতরাং আমি যোগাযোগ রাখিনা এমন অভিযোগ সর্ম্পুণ মিথ্যা ও বানোয়াট।
উল্লেখ্য, ১৯৮৫ সাল থেকে দ্বীনের শিক্ষা দিয়ে আসছে অত্র মাদ্রাসাটি। আবাসিক অনাবাসিক মিলিয়ে প্রায় ১৬০ জন শিক্ষার্থী আছে এই মাদ্রাসায়, আছেন মোট ১০ জন শিক্ষক ও মাদ্রাসা পরচিালনা কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুনঃ
রমনা বটমূলে বোমা হামলা: মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি মুফতি শফিকুল গ্রেপ্তার
লালপুরে অগ্নিকান্ডে তিন দোকান ভষ্মিভুত ১০ লাখ টাকার ক্ষতি
পুঠিয়ায় রিকসা ভ্যান থামিয়ে প্রতিবন্ধী স্কুল ছাত্রীকে র্ধষণ
মাদক ব্যবসায়ীদের গুলিতে সাংবাদিক নিহত
পাবনায় বর্ণাঢ্য আয়োজনে বাংলা নববর্ষ ১৪২৯ উদযাপন
পাবনায় নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা সচেতনতামূলক কর্মশালা অনুষ্ঠিত
২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে পাবনা জেলা শিল্পকলা একাডেমীর নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
পদ্মা নদী তীরবর্তী নাটোর, ঈশ্বরদী প্রভৃতি অঞ্চলগুলোতে বালু নিয়ে অবৈধ কারবার চলে আসছে দীর্ঘদিন থেকে। এর একটা সুরাহা হওয়া দরকার
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অভিনন্দন জানিয়েছেন পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফকে