ঢাকা ০২:৫৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি :
সারাদেশের জেলা উপোজেলা পর্যায়ে দৈনিক স্বতঃকণ্ঠে সংবাদকর্মী নিয়োগ চলছে । আগ্রহী প্রার্থীগন জীবন বৃত্তান্ত ইমেইল করুন shatakantha.info@gmail.com // দৈনিক স্বতঃকণ্ঠ অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৭১১-৩৩৩৮১১, ০১৭৪৪-১২৪৮১৪

পাবনায় বেসরকারি হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় প্রকৌশলীর মৃত্যু

পাবনা প্রতিনিধি:
  • প্রকাশিত সময় ১০:৪৭:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২২
  • / 123

প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম (৩০)


পাবনা শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নাকের পলিপাসের অস্ত্রোপচারের সময় চিকিৎসকদের ভুল চিকিৎসা ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় সিরাজুল ইসলাম (৩০) নামের এক টেক্সটাইল প্রকৌশলীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।

শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) দুপরে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) রাতে পাবনার বীনাবাণী হলের সামনের গোপালপুরের লাহিড়ী পাড়াস্থ ডিজিটাল হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।

মৃত সিরাজুল ইসলাম পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের তিলকপুর গ্রামের মৃত আতিয়ার রহমানের ছেলে। তিনি হা-মীম গ্রুপের হা-মীম স্পিনিং মিলসের প্রোডাকশন অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২ বছর বয়সী একটি পুত্র সন্তানের জনক তিনি।

স্বজনরা অভিযোগ করেন, ‘এক সপ্তাহ আগে পাবনা সদর থানা সংলগ্ন ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ডা. মো. হারুন-অর-রশিদের চেম্বারে চিকিৎসা দেন। সেসময় ডা. মো. হারুন-অর-রশিদ তাকে লাহিড়ী পাড়াস্থ ডিজিটাল হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দেন। পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এই সহকারী অধ্যাপকের পরামর্শে সিরাজুল ইসলাম তিনদিনের ছুটি নিয়ে গত মঙ্গলবার ঢাকা থেকে পাবনায় আসছিলেন। পরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে ডা. মো. হারুন-অর-রশিদ ও পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাবেক সহযোগী অধ্যাপক (এনেসথেসিয়া) ডা. শামসুল হকের তত্ত্বাবধানে ডিজিটাল হাসপাতালে নাকের পলিপাসের অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়।

তাদের অভিযোগ, ‘অস্ত্রোপচারের পর চিকিৎসকরা চলে যাওয়ার পরপরই রোগীর অবস্থা অবনতি হতে থাকে। এসময় বার বার চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ডাকাডাকি করলেও গুরুত্ব দেয়নি। এক পর্যায়ে রাত ৭টার দিকে স্বজনদের আহাজারিতে ডাক্তার ও হাসপাতালের ম্যানেজার এসে দেখেন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। অবস্থা বেগতিক দেখে ডা. মো. হারুন-অর-রশিদ, ডা. শামসুল হক এবং হাসপাতালের ম্যানেজারসহ কর্তৃপক্ষ পালিয়ে যান। পরে স্বজনরা ৯৯৯-এ ফোন দিলে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে।’

এব্যাপারে ডা. মো. হারুন-অর-রশিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে এনেসথেসিয়া চিকিৎসক শামসুল হক দাবি করে বলেন, ‘আমি যখন তাকে এনেসথেসিয়া করি তখন সে সুস্থ ছিল। অস্ত্রোপচারের পর তার জ্ঞান ফিরেছিল, সেসময় তার সঙ্গে আমার কথাও হয়েছে। পরে তার মৃত্যু কিভাবে হলো এটা এই মুহুর্তে বলা মুশকিল। তবে আমাদের কোনও ভুল চিকিৎসায় তার মৃত্যু হয়নি।’

এবিষয়ে হাসপাতালের ম্যানেজারকে পাওয়া না গেলেও সহকারী ম্যানেজার রফিকুল ইসলাম ও ওটিই ইনচার্জ সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘কিসের জন্য মারা গেল আমরা সেটা বলতে পারছি না। এখন কেন মারা গেল এটা আল্লাহ ছাড়া তো আর কেউ বলতে পারবে না। তবে তার ফিটনেস রিপোর্ট ভাল ছিল।’

এব্যাপারে পাবনা সিভিল সার্জন ডা. মনিসর চৌধুরী বলেন, ‘অভিযোগ দিলে আমরা তদন্ত করে দেখবো। যেহেতু সেখানে রোগী ও হাসপাতাল দুইটি পক্ষ রয়েছে, এখন কেউ যদি লিখিত অভিযোগ না দেয় তাহলে আমাদের কিছু করণীয় নেই।’ ইতোপুর্বে শহরের অনেক হাসপাতালে ভূল চিকিৎসায় রোগী মৃত্যু হলেও স্বাস্থবিভাগ কোন উদ্যোগ নেয়নি এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সব ঘটনায়ই আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি।

এব্যাপারে পাবনা পুলিশ সুপার (এসপি) আকবর আলী মুন্সি বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠিয়েছি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অথবা স্বজনদের লিখিত অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর এইসব ক্লিনিক-হাসপাতালের বিরুদ্ধে সিভিল সার্জনসহ সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

এই রকম আরও টপিক

পাবনায় বেসরকারি হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় প্রকৌশলীর মৃত্যু

প্রকাশিত সময় ১০:৪৭:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২২

পাবনা শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নাকের পলিপাসের অস্ত্রোপচারের সময় চিকিৎসকদের ভুল চিকিৎসা ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় সিরাজুল ইসলাম (৩০) নামের এক টেক্সটাইল প্রকৌশলীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।

শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) দুপরে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) রাতে পাবনার বীনাবাণী হলের সামনের গোপালপুরের লাহিড়ী পাড়াস্থ ডিজিটাল হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।

মৃত সিরাজুল ইসলাম পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের তিলকপুর গ্রামের মৃত আতিয়ার রহমানের ছেলে। তিনি হা-মীম গ্রুপের হা-মীম স্পিনিং মিলসের প্রোডাকশন অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২ বছর বয়সী একটি পুত্র সন্তানের জনক তিনি।

স্বজনরা অভিযোগ করেন, ‘এক সপ্তাহ আগে পাবনা সদর থানা সংলগ্ন ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ডা. মো. হারুন-অর-রশিদের চেম্বারে চিকিৎসা দেন। সেসময় ডা. মো. হারুন-অর-রশিদ তাকে লাহিড়ী পাড়াস্থ ডিজিটাল হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দেন। পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এই সহকারী অধ্যাপকের পরামর্শে সিরাজুল ইসলাম তিনদিনের ছুটি নিয়ে গত মঙ্গলবার ঢাকা থেকে পাবনায় আসছিলেন। পরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে ডা. মো. হারুন-অর-রশিদ ও পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাবেক সহযোগী অধ্যাপক (এনেসথেসিয়া) ডা. শামসুল হকের তত্ত্বাবধানে ডিজিটাল হাসপাতালে নাকের পলিপাসের অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়।

তাদের অভিযোগ, ‘অস্ত্রোপচারের পর চিকিৎসকরা চলে যাওয়ার পরপরই রোগীর অবস্থা অবনতি হতে থাকে। এসময় বার বার চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ডাকাডাকি করলেও গুরুত্ব দেয়নি। এক পর্যায়ে রাত ৭টার দিকে স্বজনদের আহাজারিতে ডাক্তার ও হাসপাতালের ম্যানেজার এসে দেখেন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। অবস্থা বেগতিক দেখে ডা. মো. হারুন-অর-রশিদ, ডা. শামসুল হক এবং হাসপাতালের ম্যানেজারসহ কর্তৃপক্ষ পালিয়ে যান। পরে স্বজনরা ৯৯৯-এ ফোন দিলে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে।’

এব্যাপারে ডা. মো. হারুন-অর-রশিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে এনেসথেসিয়া চিকিৎসক শামসুল হক দাবি করে বলেন, ‘আমি যখন তাকে এনেসথেসিয়া করি তখন সে সুস্থ ছিল। অস্ত্রোপচারের পর তার জ্ঞান ফিরেছিল, সেসময় তার সঙ্গে আমার কথাও হয়েছে। পরে তার মৃত্যু কিভাবে হলো এটা এই মুহুর্তে বলা মুশকিল। তবে আমাদের কোনও ভুল চিকিৎসায় তার মৃত্যু হয়নি।’

এবিষয়ে হাসপাতালের ম্যানেজারকে পাওয়া না গেলেও সহকারী ম্যানেজার রফিকুল ইসলাম ও ওটিই ইনচার্জ সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘কিসের জন্য মারা গেল আমরা সেটা বলতে পারছি না। এখন কেন মারা গেল এটা আল্লাহ ছাড়া তো আর কেউ বলতে পারবে না। তবে তার ফিটনেস রিপোর্ট ভাল ছিল।’

এব্যাপারে পাবনা সিভিল সার্জন ডা. মনিসর চৌধুরী বলেন, ‘অভিযোগ দিলে আমরা তদন্ত করে দেখবো। যেহেতু সেখানে রোগী ও হাসপাতাল দুইটি পক্ষ রয়েছে, এখন কেউ যদি লিখিত অভিযোগ না দেয় তাহলে আমাদের কিছু করণীয় নেই।’ ইতোপুর্বে শহরের অনেক হাসপাতালে ভূল চিকিৎসায় রোগী মৃত্যু হলেও স্বাস্থবিভাগ কোন উদ্যোগ নেয়নি এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সব ঘটনায়ই আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি।

এব্যাপারে পাবনা পুলিশ সুপার (এসপি) আকবর আলী মুন্সি বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠিয়েছি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অথবা স্বজনদের লিখিত অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর এইসব ক্লিনিক-হাসপাতালের বিরুদ্ধে সিভিল সার্জনসহ সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’