ঢাকা ০৯:৪৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি :
সারাদেশের জেলা উপোজেলা পর্যায়ে দৈনিক স্বতঃকণ্ঠে সংবাদকর্মী নিয়োগ চলছে । আগ্রহী প্রার্থীগন জীবন বৃত্তান্ত ইমেইল করুন shatakantha.info@gmail.com // দৈনিক স্বতঃকণ্ঠ অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৭১১-৩৩৩৮১১, ০১৭৪৪-১২৪৮১৪

চটপটি বিক্রি করে জিপিএ-৫ পেলেন তাহিবুল

বিরামপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:
  • প্রকাশিত সময় ০৮:৪৬:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • / 275

পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি। সৌভাগ্য নিয়ে পৃথিবীতে কোন মানুষের জন্ম হয় না। কর্মের মাধ্যমে তার ভাগ্য গড়ে নিতে হয়। তেমনি কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজের ভাগ্য গড়ে তুলেছেন দিনাজপুর জেলা বিরামপুর উপজেলার তাহিবুল ইসলাম। প্রতিদিন দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত ফুটপাতে চটপটি বিক্রয় শেষ করে গভীর রাতে অধ্যয়ন শেষে এইবার এইচএসসিতে চাঁদপুর ফাযিল মাদ্রাসা থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছেন তিনি।

তাহিবুল ইসলাম পৌর শহর পুর্ব পাড়া এলাকার দরিদ্র বাদল হোসেন এর ছেলে। তাহিবুলকে তার বাবা চটপটি ব্যাবসায়ে সব সময় সহযোগিতা করেন। যা এক সময় তার বাবা বাদল হোসেন একাই এই চটপটি বিক্রি করতেন। বাবার সেই ব্যবসা এখন ছেলে তাহিবুল পরিচালনা করেন।

দরিদ্র বাদল তার বড় ছেলেকেও স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করতে সহযোগিতা করেছেন। এক মেয়ে এখন বিরামপুর সরকারি কলেজে একাদশ শ্রেনীতে ও ছোট আরো একটি মেয়ে নর্থ বেংগল কেজি স্কুলে ক্লাস ওয়ানে অধ্যয়নরত আছেন। সমাজে চটপটি বিক্রেতার এ যেন সু-শিক্ষিত পরিবার।

বিরামপুর মেইন রোড হানিফ কোচ কাউন্টার এর সামনে গেলেই চোখে পড়বে একটি ভ্যান গাড়িতে চটপটি বিক্রয় করছে তাহিবুল। পিতার পক্ষে ছেলের লেখাপড়ার খরচ চালানো সম্ভব হচ্ছিলো না। কিন্তু ইচ্ছা আর অদম্য মনোবলের কারণে দারিদ্রতাকে জয় করে চটপটির দোকানে চাটপটি বিক্রয়ের উপার্জিত অর্থে লেখাপড়া চালিয়ে গেছে তাহিবুল। এই কষ্টের পরে মিলেছে সুফলও। এইচএসসিতে পেয়েছেন জিপিএ-৫।

অপরদিকে বিরামপুরের চাঁদপুর ফাযিল মাদ্রাসার এইচএসসি’র ২০২৩ এর ফলাফলে তাহিবুল জিপিএ-৫ পাওয়ায় তার পরিবারসহ ওই এলাকার সবাই খুব খুশি।

তাহিবুল ইসলাম জানায়, ‘মাদ্রাসা শিক্ষকদের আন্তরিকতায় সবকিছু সম্ভব হয়েছে। সারাদিন চটপটি বিক্রয় শেষে রাতের বেলায় যতটুকু সময় পেয়েছি ততটুকু সময় অধ্যয়ন করেই আমার এ সাফল্য অর্জন।’ 

তাহিবুলের স্বপ্ন উচ্চ শিক্ষা লাভ করে ভাল চাকরি করা।

তবে তাহিবুল জানায়, লেখাপড়া চালাতে শুধু চটপটি বিক্রি নয় সম্মানজনক যে কোন কায়িক পরিশ্রম করতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা নেই তার।

মাদ্রাসা প্রিন্সিপাল আ ফ ম হুমায়ুন কবির বলেন, ‘আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকে মোট ৬ জন ছেলে-মেয়ে জিপিএ ৫ পেয়েছেন। এর মধ্যে চটপটি বিক্রেতা তাহিবুল একজন। আমি তাহিবুল এর সাফল্য কামনা করছি।’

বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পরিমল কুমার সরকার বলেন, ‘তাহিবুলের সাথে আমার পরিচয় হয় যখন তখন তাকে একবার কুকুর কামড় দিয়েছিলো। কুকুর কামড় দেবার পর ভ্যাক্সিন ক্রয় করার মত অবস্থা তার ছিলো না। আমি জেনে সাথে সাথেই আমরা বিরামপুর উপজেলা সমাজ সেবা অফিস থেকে ভ্যাক্সিন এর ব্যাবস্থা করি। সে এইবার এইচএসসি তে জিপিএ-৫ পেয়েছে জেনে আমি খুব খুশী হয়েছি। দোয়া করি সে আরো বড় ডিগ্রি অর্জন করে দরিদ্র পিতার মুখ উজ্জ্বল করবে।’

চটপটি বিক্রি করে জিপিএ-৫ পেলেন তাহিবুল

প্রকাশিত সময় ০৮:৪৬:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি। সৌভাগ্য নিয়ে পৃথিবীতে কোন মানুষের জন্ম হয় না। কর্মের মাধ্যমে তার ভাগ্য গড়ে নিতে হয়। তেমনি কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজের ভাগ্য গড়ে তুলেছেন দিনাজপুর জেলা বিরামপুর উপজেলার তাহিবুল ইসলাম। প্রতিদিন দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত ফুটপাতে চটপটি বিক্রয় শেষ করে গভীর রাতে অধ্যয়ন শেষে এইবার এইচএসসিতে চাঁদপুর ফাযিল মাদ্রাসা থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছেন তিনি।

তাহিবুল ইসলাম পৌর শহর পুর্ব পাড়া এলাকার দরিদ্র বাদল হোসেন এর ছেলে। তাহিবুলকে তার বাবা চটপটি ব্যাবসায়ে সব সময় সহযোগিতা করেন। যা এক সময় তার বাবা বাদল হোসেন একাই এই চটপটি বিক্রি করতেন। বাবার সেই ব্যবসা এখন ছেলে তাহিবুল পরিচালনা করেন।

দরিদ্র বাদল তার বড় ছেলেকেও স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করতে সহযোগিতা করেছেন। এক মেয়ে এখন বিরামপুর সরকারি কলেজে একাদশ শ্রেনীতে ও ছোট আরো একটি মেয়ে নর্থ বেংগল কেজি স্কুলে ক্লাস ওয়ানে অধ্যয়নরত আছেন। সমাজে চটপটি বিক্রেতার এ যেন সু-শিক্ষিত পরিবার।

বিরামপুর মেইন রোড হানিফ কোচ কাউন্টার এর সামনে গেলেই চোখে পড়বে একটি ভ্যান গাড়িতে চটপটি বিক্রয় করছে তাহিবুল। পিতার পক্ষে ছেলের লেখাপড়ার খরচ চালানো সম্ভব হচ্ছিলো না। কিন্তু ইচ্ছা আর অদম্য মনোবলের কারণে দারিদ্রতাকে জয় করে চটপটির দোকানে চাটপটি বিক্রয়ের উপার্জিত অর্থে লেখাপড়া চালিয়ে গেছে তাহিবুল। এই কষ্টের পরে মিলেছে সুফলও। এইচএসসিতে পেয়েছেন জিপিএ-৫।

অপরদিকে বিরামপুরের চাঁদপুর ফাযিল মাদ্রাসার এইচএসসি’র ২০২৩ এর ফলাফলে তাহিবুল জিপিএ-৫ পাওয়ায় তার পরিবারসহ ওই এলাকার সবাই খুব খুশি।

তাহিবুল ইসলাম জানায়, ‘মাদ্রাসা শিক্ষকদের আন্তরিকতায় সবকিছু সম্ভব হয়েছে। সারাদিন চটপটি বিক্রয় শেষে রাতের বেলায় যতটুকু সময় পেয়েছি ততটুকু সময় অধ্যয়ন করেই আমার এ সাফল্য অর্জন।’ 

তাহিবুলের স্বপ্ন উচ্চ শিক্ষা লাভ করে ভাল চাকরি করা।

তবে তাহিবুল জানায়, লেখাপড়া চালাতে শুধু চটপটি বিক্রি নয় সম্মানজনক যে কোন কায়িক পরিশ্রম করতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা নেই তার।

মাদ্রাসা প্রিন্সিপাল আ ফ ম হুমায়ুন কবির বলেন, ‘আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকে মোট ৬ জন ছেলে-মেয়ে জিপিএ ৫ পেয়েছেন। এর মধ্যে চটপটি বিক্রেতা তাহিবুল একজন। আমি তাহিবুল এর সাফল্য কামনা করছি।’

বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পরিমল কুমার সরকার বলেন, ‘তাহিবুলের সাথে আমার পরিচয় হয় যখন তখন তাকে একবার কুকুর কামড় দিয়েছিলো। কুকুর কামড় দেবার পর ভ্যাক্সিন ক্রয় করার মত অবস্থা তার ছিলো না। আমি জেনে সাথে সাথেই আমরা বিরামপুর উপজেলা সমাজ সেবা অফিস থেকে ভ্যাক্সিন এর ব্যাবস্থা করি। সে এইবার এইচএসসি তে জিপিএ-৫ পেয়েছে জেনে আমি খুব খুশী হয়েছি। দোয়া করি সে আরো বড় ডিগ্রি অর্জন করে দরিদ্র পিতার মুখ উজ্জ্বল করবে।’