ভাঙ্গুড়ায় সনাতন ধর্মীয় রীতিতে আনুষ্ঠানিকতায় বট ও পাকুড় বৃক্ষের বিবাহ
- প্রকাশিত সময় ০৪:২৫:৩৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ মার্চ ২০২৩
- / 378
পাবনার ভাঙ্গুড়ায় নানান অনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে সনাতন ধর্মীয় রীতিতে বট ও পাকুড় বৃক্ষের বিবাহ সম্পন্ন হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) দিন ব্যাপি আনুষ্ঠানিকতা শেষে রাত সাড়ে ৮টার দিকে বৈদিক মন্ত্র উ”চাণের মধ্য দিয়ে উপজেলার পৌর সদরের মেন্দা মহাশ্মশান চত্বরে অবস্থিত দুটি বৃক্ষ বট ও পাকুড়-এর বিবাহ অনুষ্ঠান সুসম্পন্ন হয়ে চলে মধ্যরাত অবধি। এ সময় শত শত নারী পুরুষের উপস্থিতিতে বিশিষ্ট পুরাহিত শ্রী প্রদীপ কুমার গোস্বামী মন্ত্র পাঠের মাধ্যমে এ বিবাহ সম্পন্ন করেন। এসময় উপস্থিত সনাতন ধর্মাবলম্বী নারীদের উলু ধ্বণিতে মহাশ্মশান চত্বর মুখরিত হয়ে ওঠে।
বট-পাকুর বৃক্ষের বিবাহ হয়-এমন কথা জনশ্রুতিতে শোনা গেলেও বাস্তবে বিবাহের দাওয়াত পত্র তৈরি, বর-কনের উভয় পক্ষকে আমন্ত্রন,বিবাহের অনুষ্ঠানের প্রবেশ পথ ও শ্মশান এলাকা বর্ণিল সাজে সাজানোসহ নানা অনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে সনাতন ধর্মীয় রীতিতে বট-পাকুড়ের বিবাহ সম্পন্ন হয়।
সরেজমিন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে পৌর সদরের মেন্দা খালপাট এলাকায় দেখা গেছে,বট-পাকুড় বিয়ে উপলক্ষে বিবাহের গেট সাজানো হয়েছে। সমগ্র মহাশ্মশান সাজানোও হয়েছে নানা আয়োজনে। আরও সাজানো হয়েছে বট ও পাকুর নামের দুই টি বৃক্ষকে। বৃক্ষ দুটিকে পড়ানো হয়েছে বিবাহের বেনারসী শাড়ি ও ফুলের মালা। সন্ধ্যা গড়িয়ে যেতেই সনাতন ধর্মালম্বীর শত শত নারী পুরুষ জমা হতে থাকে মহাশ্মশান চত্বরে। এক পর্যায়ে বর পক্ষের লোকজনের আগমন ,অতিথি বরণ আপ্যায়নসহ সকল কিছুই সনাতন ধর্মীয় রীতিতে করতে দেখা গেছে। এ সময় অনেকে অধীর আগ্রহ সহকারে জনশ্রæতিতে শোনা বট পাকুর বৃক্ষের বিবাহ এক পলক দেখতে ভীড় জমায় মহাশ্মশান চত্বরে। অবশেষে হিন্দু ধর্মমতে নানান আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিশিষ্ঠ পুরাহিত শ্রী প্রদীপ কুমার গোস্বামী মন্ত্র পাঠের মাধ্যমে বিবাহ অনুষ্ঠান শেষ করেন। চলে মধ্যরাত পর্যন্ত নানান আনুষ্ঠানিকতা।
জানা গেছে, বহুদিন পূর্বে মেন্দা মহাশ্মশান চত্বরে ভাঙ্গুড়া বাজারের পুলক কুমার ধর্ম বৃক্ষ কল্যানীয় পাকুরেশ্বর (পাকুড়) ও মেন্দা কালিবাড়ি এলাকার শ্রী সাগর কুমার পাল ধর্মবৃক্ষ কল্যানীয়া বটেশ্বরী দেবী (বট) রোপন করেন। তারই ধারাবাহিকতায় একজন বরের পিতা ও একজন কন্যার পিতার ভুমিকা পালন করে এই বিবাহের আয়োজন করেন। সনাতন ধর্ম মতে, ধর্মবৃক্ষ বট ও পাকুরের বিবাহ দর্শন মাত্র মঙ্গল হবে। তাই সাগর কুমার পাল ও পুলক কুমার চাকী এ বিবাহের আয়োজন করে।
এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন,কেন্দ্রীয় মহাশ্মশান কমিটির সভাপতি শ্রী সংগীত কুমার পাল, সাধারণ সম্পদক সমর জিৎ গুণ, উপজেলা পুজা উৎযাপন পরিষদের সভাপতি শ্রী মলয় কুমার দেব, হিন্দু -বৈৗদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি নির্মল কুমার রায়, সাংগঠিক সম্পাদক নিরানন্দ দাস, সাবেক ব্যাংকার বিমল চন্দ্র,উত্তম কুমার, শত শত সনাতন ধর্মের নারী পুরুষসহ প্রমুখ।
অন্যান্য ছবি: