ঢাকা ০৯:০৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি :
সারাদেশের জেলা উপোজেলা পর্যায়ে দৈনিক স্বতঃকণ্ঠে সংবাদকর্মী নিয়োগ চলছে । আগ্রহী প্রার্থীগন জীবন বৃত্তান্ত ইমেইল করুন shatakantha.info@gmail.com // দৈনিক স্বতঃকণ্ঠ অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৭১১-৩৩৩৮১১, ০১৭৪৪-১২৪৮১৪

দহরশৈল গ্রামের দুঃখ ঢাকা-উত্তরাঞ্চলা রেললাইন

ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত সময় ০১:৫৫:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪
  • / 59

ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশনের পার্শ্ববর্তী দহরশৈল গ্রামবাসী রেলগেট স্থাপনের দাবিতে অবস্থান। ছবিঃ সৌরভ কুমার দেবনাথ।



লালপুর উপজেলার এবি ইউনইয়নের দহরশৈল গ্রামে প্রায় ৬ শত পরিবারের বসবাস। ১৯৯৯ সালে যমুনা নদীর উপর ৪.৮ কিলোমিটার দীর্ঘ বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণ হয়। রেলওয়ে ব্যবস্থার পূর্ব অংশটি পশ্চিমাঞ্চলের সাথে সংযুক্ত করার জন্য, জয়দেবপুর থেকে জামতৈল পর্যন্ত ৯৯ কিলোমিটার (৬২ মাইল) দীর্ঘ নতুন ডুয়েলগেজ লাইন তৈরি করা হয়। এই রেল লাইনটি দহরশৈল গ্রামটিকে দুইভাগে বিভক্ত করে ফেলে। যার ফলে গ্রামের এক পাশে থাকে ৪ শত পরিবার এবং অপর পাশের ২ শত পরিবার।

এই পরিবার গুলোর ব্যবহৃত শত বছরের কাঁচা রাস্তাটি রেল লাইনের কারনে বিভক্ত হয়ে পড়ে। ফলে সীমাহীন ভোগান্তির শিকার হন রেল লাইনের অপর পাশে অবস্থিত ৪ শত পরিবার। বিগত পঁচিশ বছর যাবৎ তারা এই দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

দহরশৈল গ্রামটি নাটোর জেলার লালপুর উপজেলায় অবস্থিত হলেও ভৌগলিক অবস্থানের কারনে তাদের প্রায় সকল প্রকার সামাজিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার সাথে। বাজার-ঘাট, শিক্ষা, চিকিৎসা সহ সবকিছুর সম্পর্ক ঈশ্বরদী উপজেলা ও পৌর শহরের সঙ্গে।

এছাড়াও ৪ শত পরিবারের জন্য যে গোরস্থান সেটিও রেললাইনের অপর পাশে। ফলে মৃতদেহ দাফন, শিক্ষা, চিকিৎসার জন্য এই ৪ শত পরিবারের সহস্রাধিক মানুষকে প্রায় ৩-৪ কিলোমিটার ঘুরে রেললাইন অতিক্রম করতে হয় এবং ঈশ্বরদীর সাথে সংযোগ সড়কে উঠতে হয়। এতে ঐ গ্রামের মানুষদের প্রায় দীর্ঘ ২৫ বছরের অধিক সময় ধরে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ফলে দহরশৈল গ্রামের দুঃখ হয়ে দাড়িয়েছে ঢাকা-উত্তরাঞ্চলা রেললাইন।

সম্প্রতি দহরশৈল গ্রামের ঐ ৪ শত পরিবার নিজ উদ্যোগ এবং নিজস্ব অর্থায়নে তাদের কষ্ট লাগবের জন্য সোহেলের বাড়ি থেকে রেললাইন পর্যন্ত নিজস্ব জমি ছেড়ে দিয়ে ১০ ফুট প্রশস্থ এবং ১ হাজার ২০ ফুট দীর্ঘ পাকা রাস্তা নির্মান করছেন। এখন তাদের একটাই দাবি তাদের দুর্ভোগের কারন রেললাইনের উপর একটি রেলগেট স্থাপন ও গেটম্যান নিয়োগ।

দহরশৈল গ্রামবাসী শুক্রবার ১৮ অক্টোবর সকালে ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশনের পার্শ্ববর্তী উত্তরাঞ্চলে থেকে ঢাকা অভিমুখী রেললাইনের উপর অবস্থান নিয়ে রেলগেট স্থাপন ও গেটম্যান নিয়োগের দাবি জানান।

শত শত নারী-পুরুষ, বৃদ্ধ, শিশু-কিশোর রেলগেট স্থাপন ও গেটম্যান নিয়োগের দাবি বাস্তবায়নের জন্য রেললাইনের উপর অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।

এসময় তারা পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের ব্যবস্থাপকের নিকট রেলগেট স্থাপন ও গেটম্যান নিয়োগের দাবি জানিয়ে বলেন, যদি ৩ দিনের মধ্যে কোন দৃশ্যমান পদক্ষেপ না নেওয়া হয় তাহলে আমরা রেললাইনের উপর আমরণ অনশন কর্মসূচী পালন করবো।

এবিষয়ে পশ্চিমাঞ্চল বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক শাহ্ সূফী নূর মোহাম্মদ জানান, ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশনের পার্শ্ববর্তী গ্রামবাসী সেখানে রেলগেট স্থাপন ও গেটম্যান নিয়োগের দাবিতে রেল লাইনের উপর অবস্থান কর্মসূচী করছে বলে শুনেছি। কিন্তু তারা আমাদের নিকট কোন লিখিত আবদন করেননি বা সরাসরি এসে কেউ যোগাযোগও করেননি।

রেলগেট স্থাপন ও ৩ দিনের আল্টিমেটামের বিষয়ে তিনি বলেন, রেলগেট স্থাপনের ক্ষেত্রে সরকারের কিছু নিয়ম-পদ্ধতি, আইন-কানুন আছে। আমরা সে অনুযায়ীই রেল ক্রসিং এর নির্মাণ করি। এখন সবাই যদি তার নিজ নিজ গ্রামে বা বাড়ির সামনে নিজেরাই রাস্তা বানিয়ে রেলগেট নির্মাণের দাবি করে সেটিতো সম্ভব নয়। বরং সেটিকে আমাদের বাধা দিতে হবে। আর ঘরে বসে কিংবা সাংবাদিকদের জানিয়ে আল্টিমেটাম দেওয়াতো কোন সুনাগরিকের কাজ নয়। এটা তো জোর যার মুল্লুক তার টাইপের কাজ। আর আল্টিমেটাম দেওয়ারতো কিছু নিয়ম-কানুন, বিধি-বিধান আছে।

এই রকম আরও টপিক

দহরশৈল গ্রামের দুঃখ ঢাকা-উত্তরাঞ্চলা রেললাইন

প্রকাশিত সময় ০১:৫৫:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪



লালপুর উপজেলার এবি ইউনইয়নের দহরশৈল গ্রামে প্রায় ৬ শত পরিবারের বসবাস। ১৯৯৯ সালে যমুনা নদীর উপর ৪.৮ কিলোমিটার দীর্ঘ বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণ হয়। রেলওয়ে ব্যবস্থার পূর্ব অংশটি পশ্চিমাঞ্চলের সাথে সংযুক্ত করার জন্য, জয়দেবপুর থেকে জামতৈল পর্যন্ত ৯৯ কিলোমিটার (৬২ মাইল) দীর্ঘ নতুন ডুয়েলগেজ লাইন তৈরি করা হয়। এই রেল লাইনটি দহরশৈল গ্রামটিকে দুইভাগে বিভক্ত করে ফেলে। যার ফলে গ্রামের এক পাশে থাকে ৪ শত পরিবার এবং অপর পাশের ২ শত পরিবার।

এই পরিবার গুলোর ব্যবহৃত শত বছরের কাঁচা রাস্তাটি রেল লাইনের কারনে বিভক্ত হয়ে পড়ে। ফলে সীমাহীন ভোগান্তির শিকার হন রেল লাইনের অপর পাশে অবস্থিত ৪ শত পরিবার। বিগত পঁচিশ বছর যাবৎ তারা এই দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

দহরশৈল গ্রামটি নাটোর জেলার লালপুর উপজেলায় অবস্থিত হলেও ভৌগলিক অবস্থানের কারনে তাদের প্রায় সকল প্রকার সামাজিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার সাথে। বাজার-ঘাট, শিক্ষা, চিকিৎসা সহ সবকিছুর সম্পর্ক ঈশ্বরদী উপজেলা ও পৌর শহরের সঙ্গে।

এছাড়াও ৪ শত পরিবারের জন্য যে গোরস্থান সেটিও রেললাইনের অপর পাশে। ফলে মৃতদেহ দাফন, শিক্ষা, চিকিৎসার জন্য এই ৪ শত পরিবারের সহস্রাধিক মানুষকে প্রায় ৩-৪ কিলোমিটার ঘুরে রেললাইন অতিক্রম করতে হয় এবং ঈশ্বরদীর সাথে সংযোগ সড়কে উঠতে হয়। এতে ঐ গ্রামের মানুষদের প্রায় দীর্ঘ ২৫ বছরের অধিক সময় ধরে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ফলে দহরশৈল গ্রামের দুঃখ হয়ে দাড়িয়েছে ঢাকা-উত্তরাঞ্চলা রেললাইন।

সম্প্রতি দহরশৈল গ্রামের ঐ ৪ শত পরিবার নিজ উদ্যোগ এবং নিজস্ব অর্থায়নে তাদের কষ্ট লাগবের জন্য সোহেলের বাড়ি থেকে রেললাইন পর্যন্ত নিজস্ব জমি ছেড়ে দিয়ে ১০ ফুট প্রশস্থ এবং ১ হাজার ২০ ফুট দীর্ঘ পাকা রাস্তা নির্মান করছেন। এখন তাদের একটাই দাবি তাদের দুর্ভোগের কারন রেললাইনের উপর একটি রেলগেট স্থাপন ও গেটম্যান নিয়োগ।

দহরশৈল গ্রামবাসী শুক্রবার ১৮ অক্টোবর সকালে ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশনের পার্শ্ববর্তী উত্তরাঞ্চলে থেকে ঢাকা অভিমুখী রেললাইনের উপর অবস্থান নিয়ে রেলগেট স্থাপন ও গেটম্যান নিয়োগের দাবি জানান।

শত শত নারী-পুরুষ, বৃদ্ধ, শিশু-কিশোর রেলগেট স্থাপন ও গেটম্যান নিয়োগের দাবি বাস্তবায়নের জন্য রেললাইনের উপর অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।

এসময় তারা পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের ব্যবস্থাপকের নিকট রেলগেট স্থাপন ও গেটম্যান নিয়োগের দাবি জানিয়ে বলেন, যদি ৩ দিনের মধ্যে কোন দৃশ্যমান পদক্ষেপ না নেওয়া হয় তাহলে আমরা রেললাইনের উপর আমরণ অনশন কর্মসূচী পালন করবো।

এবিষয়ে পশ্চিমাঞ্চল বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক শাহ্ সূফী নূর মোহাম্মদ জানান, ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশনের পার্শ্ববর্তী গ্রামবাসী সেখানে রেলগেট স্থাপন ও গেটম্যান নিয়োগের দাবিতে রেল লাইনের উপর অবস্থান কর্মসূচী করছে বলে শুনেছি। কিন্তু তারা আমাদের নিকট কোন লিখিত আবদন করেননি বা সরাসরি এসে কেউ যোগাযোগও করেননি।

রেলগেট স্থাপন ও ৩ দিনের আল্টিমেটামের বিষয়ে তিনি বলেন, রেলগেট স্থাপনের ক্ষেত্রে সরকারের কিছু নিয়ম-পদ্ধতি, আইন-কানুন আছে। আমরা সে অনুযায়ীই রেল ক্রসিং এর নির্মাণ করি। এখন সবাই যদি তার নিজ নিজ গ্রামে বা বাড়ির সামনে নিজেরাই রাস্তা বানিয়ে রেলগেট নির্মাণের দাবি করে সেটিতো সম্ভব নয়। বরং সেটিকে আমাদের বাধা দিতে হবে। আর ঘরে বসে কিংবা সাংবাদিকদের জানিয়ে আল্টিমেটাম দেওয়াতো কোন সুনাগরিকের কাজ নয়। এটা তো জোর যার মুল্লুক তার টাইপের কাজ। আর আল্টিমেটাম দেওয়ারতো কিছু নিয়ম-কানুন, বিধি-বিধান আছে।