ইউপি মেম্বারের বখাটে ছেলে কর্তৃক ৯ম শ্রেণীর ছাত্রীকে অপহরণ চেষ্টা

- প্রকাশিত সময় ০৭:৫৫:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ জুলাই ২০২৫
- / 139
পাবনা ঈশ্বরদীতে ইউপি মেম্বারের বখাটে ছেলে কর্তৃক ৯ম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে অপহরণ চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ঐ ছাত্রীর আত্মচিৎকার ও অটোচালকের সাহসী ভূমিকায় অপহরণ হওয়া থেকে রক্ষা পান তিনি।
বুধবার ৯ জুলাই দুপুরে ঈশ্বরদীর পাকশী রেলওয়ে সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এঘটনায় অপহরণকারীদের বিরুদ্ধে থানায় এজাহার দায়ের করেছেন ভুক্তভোগি শিক্ষার্থীরা বাবা।
এরপর থেকে ভুক্তভোগীর সহপাঠী এজাহারে স্বাক্ষী হওয়ায় ৯ম শ্রেনীর অপরছাত্রীর পরিবারকে হুকমি, ধামকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করছেন বখাটে ছেলের বাবা ইউপি সদস্য মো. মনোয়ার হোসেন লিটন। এতে বিপাকে পড়েছেন ভুক্তভোগি শিক্ষার্থীসহ তার বান্ধবী ও তাদের পরিবার।
অপহরণের চেষ্টাকারী বখাটেরা হলো- উপজেলার পাকশী ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নং ওয়ার্ড মেম্বার পাকশী ঝাউতলা এলাকার বাসিন্দা মনোয়ার হোসেন লিটনের ছেলে নাইম হোসেন (১৫) ও একই এলাকার আসাদুল ইসলামের ছেলে তন্ময় (১৫)।
প্রত্যক্ষদর্শী অটোরিক্সা চালক জামাল হোসেন বলেন, ঘটনার সময় দুপুর ১ টার দিকে লিটন মেম্বারের ছেলে নাইম ও তার বন্ধু তন্ময় পাকশী বাজারে তার অটোরিক্সায় উঠে গালর্স স্কুলের সামনে আসে। এর কিছুক্ষণ পরে পরীক্ষা শেষ করে স্কুলের পকেট গেট দিয়ে মেয়েরা বের হয়। এরমধ্যে থেকে ভুক্তভোগী মেয়েকে জোর করে টেনে হিচড়ে অটোর মধ্যে তুলে অপহরণের চেষ্টা করে। এসময় মেয়েটি চিৎকার শুরু করে। তখন তিনি বিষয়টি বুঝতে পেরে অপহরণকারীদের বাধা প্রদান করেন। একই সঙ্গে ভুক্তভোগী ওই মেয়েসহ তার সঙ্গে থাকা অন্যান্য মেয়েরা চিৎকার শুরু করে। এতে আশেপাশের লোকজন ছুটে আসলে ওই দুই বখাটে পালিয়ে যায়।
ভুক্তভোগি শিক্ষার্থীসহ তার ৬-৭ জন বান্ধবীরা অভিযোগ করে জানায়, দীর্ঘদিন ধরে লিটন মেম্বারের ছেলে নাইম তার বন্ধুদের নিয়ে তাদের উত্ত্যক্ত করে আসছিলো। তাদের এক বান্ধবীর ছবি বিভিন্ন স্থান থেকে জোগাড় করে বখাটে নাইম এডিট করে যুক্ত করে মোবাইলে টিকটক হিসেবে ছেড়ে দেয়। বিষয়টি জানার পর তারাসহ তাদের পরিবার লিটন মেম্বারের নিকট বারবার অভিযোগ দিয়েছে। কিন্তু স্থানীয়ভাবে লিটন মেম্বার প্রভাবশালী হওয়ায় কোন প্রতিকার পায়নি।
শিক্ষার্থীসহ তাদের পরিবারের দাবী তারা রেলওয়ে, ইপিজেড ও রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পে চাকরীর সুবাদে দূরদূরান্ত থেকে এসে পাকশীতে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করছে। আর লিটন মেম্বার স্থানীয় লোক হওয়ায় ভয়ে তারা বেশি কিছু বলার সাহস করতো না।
স্থানীয়রা জানান, যেমন বাবা তেমন ছেলে। মাত্র কিছুদিন পুর্বে মনোয়ার হোসেন লিটন মেম্বার অন্য এক মহিলাকে ভাগিয়ে এনে দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে বিয়ে করেছে। তার কিছুদিন পরই তার ছেলে নাইম স্কুলের এক মেধাবী শিক্ষার্থীকে অপহরণের চেষ্টা করলো। তাদের দাবী, মেম্বারের ছেলে উঠতি বয়সি কিশোর হলেও মেম্বার বাবার মদদে পাকশীতে নানা রকম অপরাধমুলক কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীটি ৯ম শ্রেণীর বিজ্ঞান বিভাগের খুবই মেধাবী ছাত্রী। ক্লাশে তার রোল-২। এই শিক্ষার্থী অপহরণ চেষ্টার বিষয়টি বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি রেলওয়ে পাকশী বিভাগীয় ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) সহ সংশ্লিষ্টদের অবগত করা হয়েছে। তাদের পরামর্শে থানায় এজাহার দায়ের করা হয়েছে।
এবিষয়ে ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আ স ম আব্দুন নূর সরকারি মোবাইল নম্বরে একাধিক বার ফোন করলে তিনি ফোন রিসিভ করে নাই।
পাকশী ইপিজেড ফাঁড়ির সহকারী পরিদর্শক (এসআই) মো. মুকুল হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এবিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাবা বাদী হয়ে থানায় এজাহার দায়ের করেছেন। অপহরণের চেষ্টাকারী দুইজনকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
এদিকে থানায় এজাহার দায়েরের পর থেকেই অপহরণের চেষ্টাকারী নাইমের বাবা ইউপি সদস্য মনোয়ার হোসেন লিটন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীসহ এজাহারে স্বাক্ষী হওয়া শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের নানাভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি ধামকি প্রদর্শন করার সত্যতা পাওয়া গেছে।
এবিষয়ে জানতে অপহরণের চেষ্টাকারী বখাটে নাইমের বাবা পাকশী ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নং ওয়ার্ড মেম্বার মনোয়ার হোসেন লিটনের মোবাইল ফোনে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার মোবাইল ফোনে সংযোগ পাওয়া যায়নি।










