ঢাকা ০২:০৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ২৩ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি :
সারাদেশের জেলা উপোজেলা পর্যায়ে দৈনিক স্বতঃকণ্ঠে সংবাদকর্মী নিয়োগ চলছে । আগ্রহী প্রার্থীগন জীবন বৃত্তান্ত ইমেইল করুন shatakantha.info@gmail.com // দৈনিক স্বতঃকণ্ঠ অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৭১১-৩৩৩৮১১, ০১৭৪৪-১২৪৮১৪

থানায় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত লাশঘর অথচ হাসপাতালের বারান্দায় কিশোরীর লাশ

ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত সময় ০৮:০০:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / 25



পাবনার ঈশ্বরদীতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়ে অজ্ঞাত এক স্কুলছাত্রীর (কিশোরী) মরদেহ ৫ ঘন্টা যাবত পড়ে রয়েছে হাসপাতালের বারান্দায় অথচ সদ্য নির্মিত থানার শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত লাশঘরটি পড়ে রয়েছে ফাঁকা।

থানায় প্রথম শ্রেণীর একটি লাশঘর থাকা সত্বেও মরদেহ পড়ে রয়েছে হাসপাতালের বারান্দায় এমন ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। তবে এ ব্যাপারে পুলিশ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কেবল অজুহাত দিয়েছেন “ছাড়পত্রের”।

মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের মাধবপুর এলাকায় এক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন অজ্ঞাত ওই কিশোরী।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকাল ৮ টার দিকে উপজেলার আওতাপাড়া থেকে রূপপুরগামী একটি সিএনজিতে করে রুপপুর যাওয়ার পথে সিএনজি উল্টে গুরুতর আহত হন ওই স্কুলছাত্রী। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষনা করেন। পরে পুলিশ এসে আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে চলে যান। তবে ঘটনার ৫ ঘন্টা অতিবাহিত হলেও ওই স্কুলছাত্রীর পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। এতে মরদেহটিও পড়ে রয়েছে হাসপাতালের বারান্দায়।

এদিকে গত ৮ সেপ্টেম্বর সাবেক ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) সূবীর কুমার দাশ থানায় প্রথম শ্রেণীর একটি শীতাতাপ নিয়ন্ত্রীত লাশঘর সদ্য উদ্বোধন করে গিয়েছেন। থানায় লাশঘর রয়েছে তবুও অজ্ঞাত কিশোরীর মরদেহ হাসপাতালের বারান্দায় ৫ ঘন্টা পড়ে আছে। সদ্য উদ্বোধন হওয়া সেই লাশঘরের কাজ কি? এমন প্রশ্নে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও শুরু হয়েছে নানা সমালোচনা।

সরেজমিনে থানায় গিয়ে দেখা যায়, লাশঘরের দরজাটি বন্ধ, তেমন কার্যক্রমও নেই। লাশঘরটির দায়িত্বেও কাউকে পাওয়া যায়নি।

হাসপাতালের বারান্দায় পড়ে থাকা অজ্ঞাত কিশোরীর মরদেহ দেখতে ভিড় করছেন উৎসুক জনতা। ৫ ঘন্টা যাবত মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে থানার লাশঘর নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন কয়েকজন। তারা বলেন, শুনেছি নতুন একটি শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত লাশঘর তৈরি হয়েছে থানায়। তারপরও এই মরদেহটি এভাবে হাসপাতালের বারান্দায় ঘন্টার পর ঘন্টা পড়ে রয়েছে। পুলিশ কেন মরদেহটি লাশঘরে নেয়নি? এমন অনেক প্রশ্ন ও ক্ষোভ তাদের মনে।

এ ব্যাপারে ঘটনাস্থলে দায়িত্বরত পুলিশ পরিদর্শক(এস আই) মোঃ আতাউল ইসলাম বলেন, সকাল থেকে এটা নিয়েই কাজ করছি। মেয়েটির পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। হাসপাতাল থেকে মরদেহের কোন ছাড়পত্র না পাওয়ার কারনে মরদেহটি হাসপাতালেই রাখা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে ঈশ্বরদী থানার ওসি মোঃ আ স ম আব্দুন নূরের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তা সম্ভব হয়নি।

ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রণব কুমার দাশ বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মরদেহটি কেন বারান্দায় রেখেছে এটা তারাই বলতে পারবে। কোন মরদেহ উদ্ধার করে যখন থানায় আনা হবে তখন সেটা লাশঘরেই রাখা হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যেহেতু মরদেহটির কোন ছাড়পত্র দেয়নি সেহেতু মরদেহটি আমরা নিয়ে আসতে পারিনা। ইতিমধ্যে নিহত স্কুলছাত্রীর পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া চলমান।

ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ড.আলী এহসানের বরাত দিয়ে আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. শাহেদুল ইসলাম শিশির বলেন, নিহত কিশোরীর কোন অভিভাবক নেই যেকারনে একমাত্র পুলিশই এ মরদেহটির পরিচয় শনাক্ত ও দায়িত্ব নিতে পারে। ছাড়পত্র ইস্যুতে একটি মরদেহ এভাবে ৫ ঘন্টা পড়ে থাকতে পারেনা। ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ অফিসার তার আইনি কাজে যখন যেটা প্রয়োজন তা চাওয়া মাত্র আমরা দিয়ে দিব। ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি এটা কোন কথা নয়, ২৪ ঘন্টা হাসপাতালে চিকিৎসক রয়েছে, তারা ছাড়পত্র না চাইলে আমরা সেটা কার কাছে দিব? যেহেতু নিহত স্কুলছাত্রীর পরিবারের কেউ নেই!

এই রকম আরও টপিক

থানায় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত লাশঘর অথচ হাসপাতালের বারান্দায় কিশোরীর লাশ

প্রকাশিত সময় ০৮:০০:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫



পাবনার ঈশ্বরদীতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়ে অজ্ঞাত এক স্কুলছাত্রীর (কিশোরী) মরদেহ ৫ ঘন্টা যাবত পড়ে রয়েছে হাসপাতালের বারান্দায় অথচ সদ্য নির্মিত থানার শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত লাশঘরটি পড়ে রয়েছে ফাঁকা।

থানায় প্রথম শ্রেণীর একটি লাশঘর থাকা সত্বেও মরদেহ পড়ে রয়েছে হাসপাতালের বারান্দায় এমন ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। তবে এ ব্যাপারে পুলিশ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কেবল অজুহাত দিয়েছেন “ছাড়পত্রের”।

মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের মাধবপুর এলাকায় এক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন অজ্ঞাত ওই কিশোরী।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকাল ৮ টার দিকে উপজেলার আওতাপাড়া থেকে রূপপুরগামী একটি সিএনজিতে করে রুপপুর যাওয়ার পথে সিএনজি উল্টে গুরুতর আহত হন ওই স্কুলছাত্রী। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষনা করেন। পরে পুলিশ এসে আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে চলে যান। তবে ঘটনার ৫ ঘন্টা অতিবাহিত হলেও ওই স্কুলছাত্রীর পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। এতে মরদেহটিও পড়ে রয়েছে হাসপাতালের বারান্দায়।

এদিকে গত ৮ সেপ্টেম্বর সাবেক ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) সূবীর কুমার দাশ থানায় প্রথম শ্রেণীর একটি শীতাতাপ নিয়ন্ত্রীত লাশঘর সদ্য উদ্বোধন করে গিয়েছেন। থানায় লাশঘর রয়েছে তবুও অজ্ঞাত কিশোরীর মরদেহ হাসপাতালের বারান্দায় ৫ ঘন্টা পড়ে আছে। সদ্য উদ্বোধন হওয়া সেই লাশঘরের কাজ কি? এমন প্রশ্নে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও শুরু হয়েছে নানা সমালোচনা।

সরেজমিনে থানায় গিয়ে দেখা যায়, লাশঘরের দরজাটি বন্ধ, তেমন কার্যক্রমও নেই। লাশঘরটির দায়িত্বেও কাউকে পাওয়া যায়নি।

হাসপাতালের বারান্দায় পড়ে থাকা অজ্ঞাত কিশোরীর মরদেহ দেখতে ভিড় করছেন উৎসুক জনতা। ৫ ঘন্টা যাবত মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে থানার লাশঘর নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন কয়েকজন। তারা বলেন, শুনেছি নতুন একটি শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত লাশঘর তৈরি হয়েছে থানায়। তারপরও এই মরদেহটি এভাবে হাসপাতালের বারান্দায় ঘন্টার পর ঘন্টা পড়ে রয়েছে। পুলিশ কেন মরদেহটি লাশঘরে নেয়নি? এমন অনেক প্রশ্ন ও ক্ষোভ তাদের মনে।

এ ব্যাপারে ঘটনাস্থলে দায়িত্বরত পুলিশ পরিদর্শক(এস আই) মোঃ আতাউল ইসলাম বলেন, সকাল থেকে এটা নিয়েই কাজ করছি। মেয়েটির পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। হাসপাতাল থেকে মরদেহের কোন ছাড়পত্র না পাওয়ার কারনে মরদেহটি হাসপাতালেই রাখা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে ঈশ্বরদী থানার ওসি মোঃ আ স ম আব্দুন নূরের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তা সম্ভব হয়নি।

ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রণব কুমার দাশ বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মরদেহটি কেন বারান্দায় রেখেছে এটা তারাই বলতে পারবে। কোন মরদেহ উদ্ধার করে যখন থানায় আনা হবে তখন সেটা লাশঘরেই রাখা হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যেহেতু মরদেহটির কোন ছাড়পত্র দেয়নি সেহেতু মরদেহটি আমরা নিয়ে আসতে পারিনা। ইতিমধ্যে নিহত স্কুলছাত্রীর পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া চলমান।

ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ড.আলী এহসানের বরাত দিয়ে আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. শাহেদুল ইসলাম শিশির বলেন, নিহত কিশোরীর কোন অভিভাবক নেই যেকারনে একমাত্র পুলিশই এ মরদেহটির পরিচয় শনাক্ত ও দায়িত্ব নিতে পারে। ছাড়পত্র ইস্যুতে একটি মরদেহ এভাবে ৫ ঘন্টা পড়ে থাকতে পারেনা। ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ অফিসার তার আইনি কাজে যখন যেটা প্রয়োজন তা চাওয়া মাত্র আমরা দিয়ে দিব। ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি এটা কোন কথা নয়, ২৪ ঘন্টা হাসপাতালে চিকিৎসক রয়েছে, তারা ছাড়পত্র না চাইলে আমরা সেটা কার কাছে দিব? যেহেতু নিহত স্কুলছাত্রীর পরিবারের কেউ নেই!