ঢাকা ০৫:০৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি :
সারাদেশের জেলা উপোজেলা পর্যায়ে দৈনিক স্বতঃকণ্ঠে সংবাদকর্মী নিয়োগ চলছে । আগ্রহী প্রার্থীগন জীবন বৃত্তান্ত ইমেইল করুন shatakantha.info@gmail.com // দৈনিক স্বতঃকণ্ঠ অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৭১১-৩৩৩৮১১, ০১৭৪৪-১২৪৮১৪

ভারতে চলমান দাঙ্গার মধ্যেও বিচারপতির বদলির আদেশ দানা বাঁধছে সন্দেহ

বার্তাকক্ষ
  • প্রকাশিত সময় ১১:২৮:৫৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২০
  • / 91

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ দিল্লিতে চলমান সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা পরিস্থিতির মধ্যেও হাই কোর্টের একজন বিচারপতির বদলি নিয়ে বিতর্ক এবং সন্দেহ দানা বাঁধছে।

দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি এস মুরলীধর এবং আরেক বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত একটি বেঞ্চ গত বুধবার দাঙ্গায় উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে তিনজন বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে বিচার-বিভাগীয় তদন্তের এক আবেদনের শুনানি শুরু করেন।

অভিযুক্ত বিজেপি নেতারা হলেন কাপিল মিশ্র, অনুরাগ ঠাকুর এবং প্রাভেশ ভার্মা।

শুনানি চলাকালিন সময়ে হাইকোর্টের ওই বেঞ্চ বিজেপি নেতাদের বক্তব্য ও বিবৃতির ভিডিও শুনে দিল্লি পুলিশকে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দেন।

এর কয়েক ঘণ্টা বাদেই সরকার তাকে পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টে বদলির নোটিশ ইস্যু করে।

শুনানির আগের দিন বুধবার মধ্যরাতে বিচারপতি মুরলীধর তার নিজের বাড়িতে আদালত বসিয়ে দাঙ্গা সম্পর্কিত অভিযোগের শুনানি শেষে আহতরা যাতে নিরাপদে হাসপাতালে যেতে পারে সেই নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দিল্লি পুলিশকে নির্দেশ দেন।

ভারতের বিভিন্ন মিডিয়ায় লেখা হচ্ছে, দাঙ্গা সম্পর্কিত ঐ সব শুনানির সময় বিচারপতি মুরলীধর পুলিশকে কঠোরভাবে তিরস্কার করেন।

সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম থেকে অবশ্য মুরলীধর সহ তিনজন বিচারপতিকে এ মাসের ১২ তারিখে বদলির সুপারিশ প্রেসিডেন্টের কাছে পাঠানো হয়।

কিন্তু যে প্রেক্ষাপটে প্রেসিডেন্ট দ্রুততার সাথে সেই সুপারিশে অনুমোদন দিলেন এবং সরকারের পক্ষ থেকে সাথে সাথেই তাকে বদলির নির্দেশ দেয়া হলো – তা নিয়ে বড় ধরণের বিতর্ক তৈরি হয়েছে।

কংগ্রেসের দাবি, বিচারপতি মুরলীধরের বদলির পেছনে সরকারের গুরুতর কোন রাজনৈতিক অভিসন্ধি রয়েছে।

কংগ্রেসের জেনারেল সেক্রেটারি প্রিয়াঙ্কা গান্ধী এক টুইট বার্তায় বলেছেন – সরকার বিচারকার্যে যেভাবে হস্তক্ষেপ করেছে তা দুঃখ এবং লজ্জাজনক।

এদিকে কংগ্রেস নেতা মনিশ তিওয়ারি বলেছেন, দিল্লিতে মানুষের জীবন রক্ষার স্বার্থে গভীর রাতে তার বাড়িতে যে বিচারক শুনানি করেছেন তাকে রাতারাতি বদলি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত বোধগম্য নয়।

সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অভিষেক সাংভি টুইটারে তার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি লিখেছেন – আমার সারা জীবনের আইন পেশায় এরকম ঘটনা দেখিনি।
রুচিরা চতুর্বেদী নামে একজন টুইটারে লিখেছেন – যারা সহিংসতায় উস্কানি দিচ্ছে, সরকার তাদের রক্ষার চেষ্টা করছে। ‘মহারাজ নাঙ্গা হয়ে পড়েছেন।’
ভারতের আইনমন্ত্রী রবি শঙ্কর প্রসাদ বলেছেন, বিচারপতি মুরলীধরের বদলি একটি ‘রুটিন কাজ। এবং সুপ্রিম কোর্টের সুপারিশেই তা করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, বিচারপতি মুরলীধর ১৯৮৪ সারে চেন্নাইতে আইন পেশা শুরু করেন। ১৯৮৭ সালে তিনি সুপ্রিম কোর্টে চলে আসেন।

আইনজীবী হিসাবে তিনি জনস্বার্থ বিষয়ক অনেকগুলো বড় বড় মামলা লড়েছেন। তার মধ্যে রয়েছে ভোপালে গ্যাস নিঃসরণের ঘটনায় ক্ষতিপূরণের মামলা এবং বিতর্কিত নর্মদা বাঁধ প্রকল্পে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ মামলা।

দিল্লি হাইকোর্টে আইনজীবীদের কাছে খুবই জনপ্রিয় ছিলেন বিচারপতি মুরলীধর।

গত সপ্তাহে দিল্লি হাইকোর্ট বার সমিতির পক্ষ থেকে তাকে বদলির সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য সুপ্রিম কোর্ট কলেজিয়ামের কাছে অনুরোধ জানানো হয়।

সূত্রঃ বিবিসি।

ভারতে চলমান দাঙ্গার মধ্যেও বিচারপতির বদলির আদেশ দানা বাঁধছে সন্দেহ

প্রকাশিত সময় ১১:২৮:৫৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২০

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ দিল্লিতে চলমান সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা পরিস্থিতির মধ্যেও হাই কোর্টের একজন বিচারপতির বদলি নিয়ে বিতর্ক এবং সন্দেহ দানা বাঁধছে।

দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি এস মুরলীধর এবং আরেক বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত একটি বেঞ্চ গত বুধবার দাঙ্গায় উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে তিনজন বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে বিচার-বিভাগীয় তদন্তের এক আবেদনের শুনানি শুরু করেন।

অভিযুক্ত বিজেপি নেতারা হলেন কাপিল মিশ্র, অনুরাগ ঠাকুর এবং প্রাভেশ ভার্মা।

শুনানি চলাকালিন সময়ে হাইকোর্টের ওই বেঞ্চ বিজেপি নেতাদের বক্তব্য ও বিবৃতির ভিডিও শুনে দিল্লি পুলিশকে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দেন।

এর কয়েক ঘণ্টা বাদেই সরকার তাকে পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টে বদলির নোটিশ ইস্যু করে।

শুনানির আগের দিন বুধবার মধ্যরাতে বিচারপতি মুরলীধর তার নিজের বাড়িতে আদালত বসিয়ে দাঙ্গা সম্পর্কিত অভিযোগের শুনানি শেষে আহতরা যাতে নিরাপদে হাসপাতালে যেতে পারে সেই নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দিল্লি পুলিশকে নির্দেশ দেন।

ভারতের বিভিন্ন মিডিয়ায় লেখা হচ্ছে, দাঙ্গা সম্পর্কিত ঐ সব শুনানির সময় বিচারপতি মুরলীধর পুলিশকে কঠোরভাবে তিরস্কার করেন।

সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম থেকে অবশ্য মুরলীধর সহ তিনজন বিচারপতিকে এ মাসের ১২ তারিখে বদলির সুপারিশ প্রেসিডেন্টের কাছে পাঠানো হয়।

কিন্তু যে প্রেক্ষাপটে প্রেসিডেন্ট দ্রুততার সাথে সেই সুপারিশে অনুমোদন দিলেন এবং সরকারের পক্ষ থেকে সাথে সাথেই তাকে বদলির নির্দেশ দেয়া হলো – তা নিয়ে বড় ধরণের বিতর্ক তৈরি হয়েছে।

কংগ্রেসের দাবি, বিচারপতি মুরলীধরের বদলির পেছনে সরকারের গুরুতর কোন রাজনৈতিক অভিসন্ধি রয়েছে।

কংগ্রেসের জেনারেল সেক্রেটারি প্রিয়াঙ্কা গান্ধী এক টুইট বার্তায় বলেছেন – সরকার বিচারকার্যে যেভাবে হস্তক্ষেপ করেছে তা দুঃখ এবং লজ্জাজনক।

এদিকে কংগ্রেস নেতা মনিশ তিওয়ারি বলেছেন, দিল্লিতে মানুষের জীবন রক্ষার স্বার্থে গভীর রাতে তার বাড়িতে যে বিচারক শুনানি করেছেন তাকে রাতারাতি বদলি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত বোধগম্য নয়।

সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অভিষেক সাংভি টুইটারে তার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি লিখেছেন – আমার সারা জীবনের আইন পেশায় এরকম ঘটনা দেখিনি।
রুচিরা চতুর্বেদী নামে একজন টুইটারে লিখেছেন – যারা সহিংসতায় উস্কানি দিচ্ছে, সরকার তাদের রক্ষার চেষ্টা করছে। ‘মহারাজ নাঙ্গা হয়ে পড়েছেন।’
ভারতের আইনমন্ত্রী রবি শঙ্কর প্রসাদ বলেছেন, বিচারপতি মুরলীধরের বদলি একটি ‘রুটিন কাজ। এবং সুপ্রিম কোর্টের সুপারিশেই তা করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, বিচারপতি মুরলীধর ১৯৮৪ সারে চেন্নাইতে আইন পেশা শুরু করেন। ১৯৮৭ সালে তিনি সুপ্রিম কোর্টে চলে আসেন।

আইনজীবী হিসাবে তিনি জনস্বার্থ বিষয়ক অনেকগুলো বড় বড় মামলা লড়েছেন। তার মধ্যে রয়েছে ভোপালে গ্যাস নিঃসরণের ঘটনায় ক্ষতিপূরণের মামলা এবং বিতর্কিত নর্মদা বাঁধ প্রকল্পে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ মামলা।

দিল্লি হাইকোর্টে আইনজীবীদের কাছে খুবই জনপ্রিয় ছিলেন বিচারপতি মুরলীধর।

গত সপ্তাহে দিল্লি হাইকোর্ট বার সমিতির পক্ষ থেকে তাকে বদলির সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য সুপ্রিম কোর্ট কলেজিয়ামের কাছে অনুরোধ জানানো হয়।

সূত্রঃ বিবিসি।