ঢাকা ০১:৫২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি :
সারাদেশের জেলা উপোজেলা পর্যায়ে দৈনিক স্বতঃকণ্ঠে সংবাদকর্মী নিয়োগ চলছে । আগ্রহী প্রার্থীগন জীবন বৃত্তান্ত ইমেইল করুন shatakantha.info@gmail.com // দৈনিক স্বতঃকণ্ঠ অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৭১১-৩৩৩৮১১, ০১৭৪৪-১২৪৮১৪

মহামারী সময়ে তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিকদেরকে টিকে থাকার জন্য সংগ্রাম করতে হচ্ছে

বার্তাকক্ষ
  • প্রকাশিত সময় ০৫:২৪:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ অগাস্ট ২০২০
  • / 131

ডেস্ক নিউজঃ মহামারী সময়ে তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিকদেরকে টিকে থাকার জন্য সংগ্রাম করতে হচ্ছে উল্লেখ করে ট্রেড ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ শ্রমিকদের সহায়তার লক্ষ্যে সরকারকে উদ্যোগী হওয়া আহ্বান জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ-বিল্স এর এফএনভি প্রকল্পের আওতায় রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে “কোভিড-১৯: তৈরি পোশাক শিল্পে শোভন কাজের পরিস্থিতি পর্যালোচনা শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে আজ ২৭ আগস্ট ২০২০ (বৃহস্পতিবার) বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন। সংবাদ সম্মেলনে কোভিড-১৯ মহামারির কারণে তৈরি পোশাক শিল্পের শোভন কাজের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়।

বিল্স ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসাইন এর সভাপতিত্বে এবং বিল্স ভাইস চেয়ারম্যান ও ইন্ডাষ্ট্রিঅল বাংলাদেশ কাউন্সিলের ঢাকা-মিরপুর ক্লাস্টার কমিটির সমন্বয়কারী আমিরুল হক আমিনের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিল্স এর উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ-স্কপ এর যুগ্ম সমন্বয়কারী নইমুল আহসান জুয়েল।

সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন ইন্ডাষ্ট্রিঅল বাংলাদেশ কাউন্সিল-আইবিসি সাধারণ সম্পাদক চায়না রহমান, ইন্ডাষ্ট্রিঅল বাংলাদেশ কাউন্সিল টঙ্গী-গাজীপুর ক্লাস্টার কমিটির সমন্বয়কারী সালাউদ্দিন স্বপন, বাংলাদেশ ফেডারেশন অব ওয়ার্কার্স সলিডারিটির সভাপতি রুহুল আমিন, বাংলাদেশ মুক্ত শ্রমিক ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ বাদল এবং বিল্স পরিচালক নাজমা ইয়াসমীন।

এছাড়া সংবাদ সম্মেলনে তৈরি পোশাক শিল্পের ট্রেড ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ, শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ-স্কপ নেতৃবৃন্দ, ইন্ডাষ্ট্রিঅল বাংলাদেশ কাউন্সিল নেতৃবৃন্দ, গণমাধ্যমের প্রতিনিধিবৃন্দ এবং বিল্স কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন ।

লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, এসডিজির ১৭টি লক্ষ্যের মধ্যে ৮ নং লক্ষ্য সবার জন্য শোভন কাজ নিশ্চিত করা। আর সেই লক্ষ্য অর্জনে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্র উন্নয়নে বাংলাদেশ সরকার নানা পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে। কিন্তু বছর বছর প্রবৃদ্ধির হার উর্ধ্বমুখী হলেও পোশাক শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নের হার নিম্নমুখী। তার অন্যতম প্রধান কারণ হল আমাদের জাতীয় উন্নয়নের সাথে পোশাক শ্রমিকদের মজুরি সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। করোনার ভয়াবহ সংকটের সময় তৈরি পোশাক শিল্প খাতের শ্রমিকদের জীবনযাত্রার শোচনীয়তা আরো প্রকটভাবে আমাদের সামনে আসে। লকডাউন চলাকালীন সময়ে তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের মজুরি না পাওয়া, সরকার ঘোষিত প্রণোদনা পাওয়ার ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা, কারখানা খোলা ও বন্ধ রাখার বিষয়ে বিভ্রান্তিকর সিদ্ধান্তের কারণে এই শিল্পের শ্রমিকরা সীমাহীন দূর্ভোগের শিকার হয়। এছাড়া আবাসস্থল সংকট, বিনা নোটিশে শ্রমিক ছাঁটাই, লেঅফ ঘোষণা ও এই প্রাদুর্ভাবের সময় সামাজিক দুরত্বকে তুচ্ছ করে শ্রমঘন এলাকাগুলোতে বেতন আদায়ের জন্য শ্রমিকদের বিক্ষোভ, সবকিছু মিলিয়ে এই মহামারীর সময়েও তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিকদেরকে টিকে থাকার জন্য সংগ্রাম করতে হচ্ছে।

এতে আরও উল্লেখ করা হয়, বকেয়া বেতন-বোনাস, শ্রমিক ছাঁটাই, নির্যাতন ও কারখানা বন্ধের ইস্যুতে তৈরি পোশাক শিল্পে আন্দোলনের ঘটনা সব থেকে বেশি ঘটে, করোনাকালীন সময়েও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। বেতন-বোনাস নিয়ে অনিশ্চয়তা, শ্রমিক ছাঁটাই, বিনা নোটিসে কারখানা বন্ধ/ লে-অফসহ অন্যান্য ইস্যুতে সামাজিক দূরত্বকে তুচ্ছ করে ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় প্রতিদিনই শ্রমিক বিক্ষোভের ঘটনা ঘটছে। কোভিড-১৯ এর কারণে লাখ লাখ শ্রমজীবী মানুষের নতুনভাবে দারিদ্র্যসীমার নীচে নেমে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শ্রমিককে দরিদ্র্য হিসেবে বিবেচনা না করায় সরকার কর্তৃক ঘোষিত বিভিন্ন প্রণোদনা ও সুরক্ষা প্যাকেজ থেকে তারা বঞ্চিত। এ পরিস্থিতিতে সামনের দিনগুলোতে শ্রমজীবী মানুষ আরও গভীরভাবে অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং মানবিক সংকটে পড়তে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সরকার, শ্রমিক ও সংশ্লিষ্ট অংশীজনসহ সকলকে একসাথে নিয়ে চলমান সংকট মোকাবেলা করতে হবে বলে বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়।

লিখিত বক্তব্যে আরও উল্লেখ করা হয়, বর্তমান সময়ের এই কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে নানা বিপর্যয়ের মধ্যে বেড়েছে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের হার। ৮৭টি কারখানায় শ্রমিক ছাঁটাই হয়েছে সাড়ে ২৬ হাজার এবং অনেক ক্ষেত্রেই আইন না মেনেই ছাঁটাইয়ের ঘটনা ঘটছে। অনেক ক্ষেত্রে শ্রমিকরা বকেয়া বেতন-ভাতা ও ন্যায্য ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন না। করোনাকালীন সংকটে এই খাতে বেকার হয়েছে প্রায় ৩ লক্ষ ২৪ হাজার ৬৮৪ জন শ্রমিক এবং বন্ধ ও লেঅফ হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৯১৫টি কারখানা। এছাড়া দিন দিন সারা বিশ্ব প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে পড়ার কারণে নিশ্চিতভাবে পোশাক খাতেও বাড়বে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার। আর এতে করে এ খাতে কর্মরত ৬০ শতাংশ শ্রমিকের চাকুরি হারানোর আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে ট্রেড ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ বলেন, গণমাধ্যমে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের যে সংবাদ আসে প্রকৃত পক্ষে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের সংখ্যা তার চেয়ে অনেক বেশি। যেসব কারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন রয়েছে সেসব কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে অভিযোগ করে তারা বলেন, কারখানা বন্ধ হচ্ছে, লে অফ হচ্ছে, শ্রমিক ছাঁটাই হচ্ছে সেসব বিষয়ে সরকারের কোন পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু শ্রমিকদের সংগঠিত হওয়া থেকে শুরু করে ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধন সবই বন্ধ রাখা হয়েছে। নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করে বলেন কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য বিধি নিশ্চিত করে কাজ করানোর কথা থাকলেও অধিকাংশ কারখানায় তা মানা হচ্ছে না।

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, কোভিড-১৯ সময়ে কারখানায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় শ্রমিকরা নিরাপত্তা ঝুঁকি, চাকুরির ঝুঁকি ও কাজ করেও সময়মত মজুরি না পাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।

মহামারী সময়ে তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিকদেরকে টিকে থাকার জন্য সংগ্রাম করতে হচ্ছে

প্রকাশিত সময় ০৫:২৪:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ অগাস্ট ২০২০

ডেস্ক নিউজঃ মহামারী সময়ে তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিকদেরকে টিকে থাকার জন্য সংগ্রাম করতে হচ্ছে উল্লেখ করে ট্রেড ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ শ্রমিকদের সহায়তার লক্ষ্যে সরকারকে উদ্যোগী হওয়া আহ্বান জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ-বিল্স এর এফএনভি প্রকল্পের আওতায় রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে “কোভিড-১৯: তৈরি পোশাক শিল্পে শোভন কাজের পরিস্থিতি পর্যালোচনা শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে আজ ২৭ আগস্ট ২০২০ (বৃহস্পতিবার) বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন। সংবাদ সম্মেলনে কোভিড-১৯ মহামারির কারণে তৈরি পোশাক শিল্পের শোভন কাজের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়।

বিল্স ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসাইন এর সভাপতিত্বে এবং বিল্স ভাইস চেয়ারম্যান ও ইন্ডাষ্ট্রিঅল বাংলাদেশ কাউন্সিলের ঢাকা-মিরপুর ক্লাস্টার কমিটির সমন্বয়কারী আমিরুল হক আমিনের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিল্স এর উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ-স্কপ এর যুগ্ম সমন্বয়কারী নইমুল আহসান জুয়েল।

সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন ইন্ডাষ্ট্রিঅল বাংলাদেশ কাউন্সিল-আইবিসি সাধারণ সম্পাদক চায়না রহমান, ইন্ডাষ্ট্রিঅল বাংলাদেশ কাউন্সিল টঙ্গী-গাজীপুর ক্লাস্টার কমিটির সমন্বয়কারী সালাউদ্দিন স্বপন, বাংলাদেশ ফেডারেশন অব ওয়ার্কার্স সলিডারিটির সভাপতি রুহুল আমিন, বাংলাদেশ মুক্ত শ্রমিক ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ বাদল এবং বিল্স পরিচালক নাজমা ইয়াসমীন।

এছাড়া সংবাদ সম্মেলনে তৈরি পোশাক শিল্পের ট্রেড ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ, শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ-স্কপ নেতৃবৃন্দ, ইন্ডাষ্ট্রিঅল বাংলাদেশ কাউন্সিল নেতৃবৃন্দ, গণমাধ্যমের প্রতিনিধিবৃন্দ এবং বিল্স কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন ।

লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, এসডিজির ১৭টি লক্ষ্যের মধ্যে ৮ নং লক্ষ্য সবার জন্য শোভন কাজ নিশ্চিত করা। আর সেই লক্ষ্য অর্জনে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্র উন্নয়নে বাংলাদেশ সরকার নানা পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে। কিন্তু বছর বছর প্রবৃদ্ধির হার উর্ধ্বমুখী হলেও পোশাক শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নের হার নিম্নমুখী। তার অন্যতম প্রধান কারণ হল আমাদের জাতীয় উন্নয়নের সাথে পোশাক শ্রমিকদের মজুরি সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। করোনার ভয়াবহ সংকটের সময় তৈরি পোশাক শিল্প খাতের শ্রমিকদের জীবনযাত্রার শোচনীয়তা আরো প্রকটভাবে আমাদের সামনে আসে। লকডাউন চলাকালীন সময়ে তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের মজুরি না পাওয়া, সরকার ঘোষিত প্রণোদনা পাওয়ার ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা, কারখানা খোলা ও বন্ধ রাখার বিষয়ে বিভ্রান্তিকর সিদ্ধান্তের কারণে এই শিল্পের শ্রমিকরা সীমাহীন দূর্ভোগের শিকার হয়। এছাড়া আবাসস্থল সংকট, বিনা নোটিশে শ্রমিক ছাঁটাই, লেঅফ ঘোষণা ও এই প্রাদুর্ভাবের সময় সামাজিক দুরত্বকে তুচ্ছ করে শ্রমঘন এলাকাগুলোতে বেতন আদায়ের জন্য শ্রমিকদের বিক্ষোভ, সবকিছু মিলিয়ে এই মহামারীর সময়েও তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিকদেরকে টিকে থাকার জন্য সংগ্রাম করতে হচ্ছে।

এতে আরও উল্লেখ করা হয়, বকেয়া বেতন-বোনাস, শ্রমিক ছাঁটাই, নির্যাতন ও কারখানা বন্ধের ইস্যুতে তৈরি পোশাক শিল্পে আন্দোলনের ঘটনা সব থেকে বেশি ঘটে, করোনাকালীন সময়েও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। বেতন-বোনাস নিয়ে অনিশ্চয়তা, শ্রমিক ছাঁটাই, বিনা নোটিসে কারখানা বন্ধ/ লে-অফসহ অন্যান্য ইস্যুতে সামাজিক দূরত্বকে তুচ্ছ করে ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় প্রতিদিনই শ্রমিক বিক্ষোভের ঘটনা ঘটছে। কোভিড-১৯ এর কারণে লাখ লাখ শ্রমজীবী মানুষের নতুনভাবে দারিদ্র্যসীমার নীচে নেমে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শ্রমিককে দরিদ্র্য হিসেবে বিবেচনা না করায় সরকার কর্তৃক ঘোষিত বিভিন্ন প্রণোদনা ও সুরক্ষা প্যাকেজ থেকে তারা বঞ্চিত। এ পরিস্থিতিতে সামনের দিনগুলোতে শ্রমজীবী মানুষ আরও গভীরভাবে অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং মানবিক সংকটে পড়তে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সরকার, শ্রমিক ও সংশ্লিষ্ট অংশীজনসহ সকলকে একসাথে নিয়ে চলমান সংকট মোকাবেলা করতে হবে বলে বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়।

লিখিত বক্তব্যে আরও উল্লেখ করা হয়, বর্তমান সময়ের এই কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে নানা বিপর্যয়ের মধ্যে বেড়েছে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের হার। ৮৭টি কারখানায় শ্রমিক ছাঁটাই হয়েছে সাড়ে ২৬ হাজার এবং অনেক ক্ষেত্রেই আইন না মেনেই ছাঁটাইয়ের ঘটনা ঘটছে। অনেক ক্ষেত্রে শ্রমিকরা বকেয়া বেতন-ভাতা ও ন্যায্য ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন না। করোনাকালীন সংকটে এই খাতে বেকার হয়েছে প্রায় ৩ লক্ষ ২৪ হাজার ৬৮৪ জন শ্রমিক এবং বন্ধ ও লেঅফ হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৯১৫টি কারখানা। এছাড়া দিন দিন সারা বিশ্ব প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে পড়ার কারণে নিশ্চিতভাবে পোশাক খাতেও বাড়বে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার। আর এতে করে এ খাতে কর্মরত ৬০ শতাংশ শ্রমিকের চাকুরি হারানোর আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে ট্রেড ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ বলেন, গণমাধ্যমে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের যে সংবাদ আসে প্রকৃত পক্ষে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের সংখ্যা তার চেয়ে অনেক বেশি। যেসব কারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন রয়েছে সেসব কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে অভিযোগ করে তারা বলেন, কারখানা বন্ধ হচ্ছে, লে অফ হচ্ছে, শ্রমিক ছাঁটাই হচ্ছে সেসব বিষয়ে সরকারের কোন পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু শ্রমিকদের সংগঠিত হওয়া থেকে শুরু করে ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধন সবই বন্ধ রাখা হয়েছে। নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করে বলেন কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য বিধি নিশ্চিত করে কাজ করানোর কথা থাকলেও অধিকাংশ কারখানায় তা মানা হচ্ছে না।

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, কোভিড-১৯ সময়ে কারখানায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় শ্রমিকরা নিরাপত্তা ঝুঁকি, চাকুরির ঝুঁকি ও কাজ করেও সময়মত মজুরি না পাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।