ঢাকা ০৯:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি :
সারাদেশের জেলা উপোজেলা পর্যায়ে দৈনিক স্বতঃকণ্ঠে সংবাদকর্মী নিয়োগ চলছে । আগ্রহী প্রার্থীগন জীবন বৃত্তান্ত ইমেইল করুন shatakantha.info@gmail.com // দৈনিক স্বতঃকণ্ঠ অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৭১১-৩৩৩৮১১, ০১৭৪৪-১২৪৮১৪

জামাকাপড় দীর্ঘদিন নতুন রাখার উপায়

বার্তাকক্ষ
  • প্রকাশিত সময় ১০:৪৭:০২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ মে ২০২২
  • / 94

Hanger for cloth

ছবি: সংগৃহীত

আহমেদ বিন কাদের অনি
প্রকাশিত: ১০:৪৭ অপরাহ্ন, ১৩ এপ্রিল ২০২২

কাপড় দীর্ঘদিন ব্যবহার শুধু আমাদের সময় এবং অর্থ সাশ্রয় করে না, এটি কার্বন ফুটপ্রিন্টও কমাতে সাহায্য করে, যা পরিবেশের জন্যেও উপকারী। প্রিয় কাপড়গুলোকে সুন্দর এবং নতুনের মতো রাখতে আমরা বেশ কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারি। কিছু অভ্যাসের মাধ্যমে জামাকাপড়কে দীর্ঘদিন নতুনের মতো রাখা যায়।

চলুন জেনে নেই যেভাবে জামাকাপড় দীর্ঘদিন নতুন রাখা যায়।

কম ধোয়া

খুব ঘন ঘন ধুলে কাপড়ের তন্তু বা সুতা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং কাপড়ের জীবনকাল কমে যেতে পারে। আপনি যত বেশি জামাকাপড় ধুবেন, তত তাড়াতাড়ি সেগুলো জীর্ণ হবে। এটি শুধু রঙ বের করে কাপড়কে বিবর্ণ করে না, কাপড়ের ইলাস্টিসিটিও নষ্ট করে। দৃশ্যমানভাবে নোংরা বা দুর্গন্ধ না হলে, লন্ড্রি করার আগে অন্তত ৩ বার একটি পোশাক পরতে পারেন। যদি গন্ধ হয় বা নোংরা দেখায় তবে অবশ্যই ধুয়ে ফেলুন।

জামাকাপড়কে সরাসরি ধোয়া ছাড়াও পরিষ্কার করার অনেক উপায় রয়েছে, যেমন: দাগের ক্ষেত্রে যেখানে ময়লা লেগেছে শুধু সেই স্থানটি পরিষ্কার করা, কাপড় নেতানো ও স্পঞ্জি মনে হলে সেগুলো বাইরে বাতাসে বা রোদে ঝুলিয়ে রাখা, দুর্গন্ধ হলে সারারাত ফ্রিজে রাখার মাধ্যমে কাপড়কে ফ্রেশ রাখা। এটি শুধু জামাকাপড়কে দীর্ঘস্থায়ী করতে সাহায্য করবে না, পরিবেশবান্ধবও বটে।

বিখ্যাত জিন্স ব্র্যান্ড লিভাই’স এর সিইও চিপ বার্গ একজন নিবেদিত নন-ওয়াশার, যিনি ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে তার জিন্স ধৌত করেননি!

কাপড়ের কেয়ার লেবেলের দিকে মনোযোগ দিন

লন্ড্রির জন্য বিভিন্ন উপাদানের কাপড়ের জন্য বিভিন্ন পদ্ধতির প্রয়োজন। উদাহরণস্বরূপ, উল কাপড় যখন একেবারে প্রয়োজন তখনই ধোয়া উচিত, যেখানে মৃদু ডিটারজেন্ট বা হাতে ধোয়া এবং তাপ ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্কতা প্রয়োজন। যা সাধারণ কটন কাপড়ের ক্ষেত্রে নাও লাগতে পারে। এছাড়া কী পরিমান তাপমাত্রায় কাপড় ধুবেন, ব্লিচ ব্যবহার করবেন কী না ইত্যাদি নিৰ্দেশনা লেবেলে দেওয়া থাকে।

কম তাপমাত্রায় ধোয়া

কাপড় নরম এবং রঙ বিবর্ণ হওয়া রোধ করতে একটি মৃদু ডিটারজেন্ট দিয়ে কম তাপমাত্রায় কাপড় ধুতে পারেন। তবে একটি গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতা, আপনার ত্বকের কাছাকাছি পরা জিনিসগুলি, বিশেষ করে অন্তর্বাস এবং মোজা, পর্যাপ্ত তাপে ধুয়ে নেওয়া উচিত।

এনভায়রনমেন্টাল হেলথ প্রাক্টিশনার ড. লিসা অ্যাকারলে বলেন ‘আপনি কম তাপমাত্রায় বিছানা, তোয়ালে, জিম কিট, অন্তর্বাস এবং মোজা রাখবেন না। এসব ন্যূনতম ৬০ ডিগ্রি সে. তাপমাত্রায় ধুয়ে ফেলতে হবে। এছাড়া মাটি, কাদা, বালির ক্ষেত্রে কাপড়টি হালকা গরম পানিতে রাখুন এবং যতটা সম্ভব ময়লা আলগা করতে একে নাড়াচাড়া করুন।’

পরিধানের পর করণীয়

পরিধানের পর আপনার জামাকাপড় ফ্রেশ রাখতে তা বাতাসে বা খোলা জায়গায় ঝুলিয়ে রাখুন। পরিধানের পরে তা স্তূপ করে রাখবেন না, এতে করে দুর্গন্ধসহ কাপড়ে চিতি বা তিলা পরে যেতে পারে।

ডিটারজেন্টের পরিমাণ কমান

বেশি ডিটারজেন্ট মানেই বেশি পরিষ্কার নয়। পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর হওয়া ছাড়াও, প্রচুর পরিমাণে ডিটারজেন্ট আসলে আপনার কাপড়কে আরও নিস্তেজ এবং শক্ত করে তুলতে পারে।

একটু ভিন্ন কিছু চান? তাহলে প্রাকৃতিক ডিটারজেন্ট বুস্টার হিসাবে বেকিং সোডা যোগ করার চেষ্টা করুন। অর্ধেক ডিটারজেন্ট এবং অর্ধেক বেকিং সোডা ব্যবহার করুন, যা প্রাকৃতিক ডিটারজেন্ট বুস্টার হিসাবে কাজ করে। এতে যদি আপনি সন্তুষ্ট না হন, তাহলে পরের বার একটু বেশি ডিটারজেন্ট যোগ করতে পারেন।

কাপড়ের ভেতরের দিক উল্টে বের করে ধোয়া

গাঢ় রঙের পোশাক বিবর্ণ হওয়া থেকে বাঁচাতে, রঙ সংরক্ষণ করতে সেগুলো ভেতরের দিককে বাইরে উল্টিয়ে ধুতে হবে। ঘর্ষণের ফলে বাইরের দিকের ফাইবারের ক্ষতি রোধে এটি খুব কার্যকর। আমরা অনেকেই প্রিন্টেড টি-শার্ট পছন্দ করি, কিন্তু অনেক সময়ই সেটিতে বিবর্ণ বা ফাটল দেখা যায়। সেক্ষেত্রেও এভাবে ধুলে প্রিন্টটি ফাটল অথবা বিবর্ণ হওয়া থেকে রক্ষা পাবে।

একই রঙের কাপড় একসঙ্গে ধোয়া

আপনার প্রিয় সাদা জামা যেন লাল না হয়ে যায়, সেক্ষেত্রে ধোয়ার আগে রঙের ভিত্তিতে কাপড় আলাদা করুন। এছাড়া আপনার কাছে যদি উজ্জ্বল কোনো নতুন জামাকাপড় থাকে তাহলে তা একটি বাটিতে সারারাত ভিজিয়ে রাখুন এবং আপনি দেখতে পাবেন তা থেকে কতটা রঙ বের হয়।

বিরতি দিয়ে দিয়ে চক্রাকারে পরা

আপনার পোশাক বিরতি দিয়ে চক্রাকারে পরার অর্থ হল দিন, মাস বা ঋতু অনুসারে সেগুলোকে চক্রাকারে পরা। একই পোশাক টানা খুব ঘন ঘন পরিধান করলে কাপড় ময়লা, শরীরের তেল, ঘর্ষণ ইত্যাদির ফলে দ্রুত জীর্ণ হতে থাকে। তাই একই কাপড় টানা না পরে একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক দিন সেট করুন বা প্রতি সপ্তাহে সেটি শুধু ১-২ বার করে চক্রাকারে পরুন।

ড্রাই ক্লিনিং এড়িয়ে চলুন

অতি প্রয়োজন না হলে ড্রাই ক্লিনিং না করা ভাল। এটি অত্যন্ত ব্যয়বহুল অভ্যাস ছাড়াও, এতে শক্তিশালী রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার হয় যা ধীরে ধীরে কাপড়ের ফাইবারকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এছাড়া পদার্থগুলো পরিবেশের জন্যেও ক্ষতিকারক।

ইস্ত্রি বা আইরন করার ব্যাপারে সতর্কতা

যেকোনো মূল্যে আইরন করা এড়িয়ে চললে তা কাপড়ের জন্য ভালো। কোন কাপড়টি কোন তাপমাত্রায় আইরন করা উচিত তা না জানলে কাপড় নষ্ট হতে পারে। তাই লেবেলের নিৰ্দেশনা পড়ুন এবং তাপমাত্রা পারলে নিৰ্দেশিত লেভেলের থেকেও নিচে নামিয়ে নেন। সম্পূর্ণ শুকনো কাপড় আয়রন করার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করুন। এক্ষেত্রে কাপড় যখন আর্দ্র থাকে তখন ইস্ত্রি করা ভাল। যদি প্রয়োজন হয়, তবে পানি দিয়ে স্প্রে করে আয়রন করতে পারেন।

আর যদি চান আপনি আইরন ব্যবহার এড়িয়ে চলবেন, তাহলে আপনার জামাকাপড় ধোয়ার পর শুকানোর জন্য ঝুলিয়ে দেওয়ার আগে একটি ভাল করে ঝাড়া দিন, এতে করে আপনি কুঁচকে যাওয়া এড়াতে পারবেন।

কাপড় শুকানোর ক্ষেত্রে লক্ষণীয়

শুকানোর ক্ষেত্রে প্রথমে আলতো করে চাপ দিয়ে অতিরিক্ত পানি বের করে নেন। আমরা অনেকে জোরে মুচড়িয়ে পানি নিংড়াই, যার ফলে কাপড়ের ফাইবার নষ্ট হতে থাকে। অন্যদিকে, রোদে ও বাতাসে ভালো করে ঝেড়ে শুকানো ভালো, এতে করে আলাদা করে আইরনিংয়ের প্রয়োজন হয়না। আবার কিছু ভারী সোয়েটার বা জাম্পার সমতল কোথাও বিছিয়ে শুকানো ভালো। নাহলে সেগুলো ঝুলে পরতে পারে।

কাপড় সংরক্ষণ

একটি শীতল এবং শুষ্ক পরিবেশে কাপড় রাখুন। বেশি ঘিঞ্জি অবস্থায় রাখবেন না যাতে কাপড় ঘর্ষণের মাধ্যমে কুঁচকে যায় এবং রঙ বিবর্ণ হয়। স্যাঁতসেঁতে জায়গায় রাখবেন না যেখানে ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে পারে এবং কাপড় নষ্ট করতে পারে। কিংবা অতিরিক্ত আলোর মধ্যেও রাখবেন না, যাতে করে কাপড় বিবর্ণ হয়ে যেতে পারে। এ ছাড়া ক্ষতিকারক পোকা-মাকড় থেকে রক্ষার জন্যে আপনি ন্যাপথালিন বা এ জাতীয় ঔষধ ব্যবহার করতে পারেন।

ভালো হ্যাঙ্গার

বেশিরভাগ প্লাস্টিক এবং তারের হ্যাঙ্গার আপনার পোশাকের গলা ও কাঁধকে প্রসারিত করতে পারে, যা আপনার পোশাকটিকে অনাকর্ষণীয় করে ফেলে। তাই একটু বেশি ব্যয়বহুল হওয়া সত্ত্বেও, কাঠের হ্যাঙ্গারগুলো উত্তম যা দীর্ঘস্থায়ী হবে এবং আপনার পোশাকের আরও ভাল যত্ন নেবে।

সেলাই ও মেরামতের কিছু সাধারণ কৌশল

একটি বোতাম ঠিক করা কিংবা হালকা সেলাইয়ের মতো ছোটোখাটো বিষয় শিখে রাখা আপনার জামাকাপড়কে দীর্ঘস্থায়ী করতে সাহায্য করতে পারে।

মানসম্পন্ন ও ভালো মানের কাপড়
আপনি যদি শুধু সস্তা, নিম্ন মানের, কাপড় কিনেন তাহলে তা সম্ভবত দীর্ঘস্থায়ী নাও হতে পারে। ভালো কাপড়ের মূল্য বেশি হলেও এটিকে একটি বিনিয়োগ হিসাবে দেখুন, যা আপনাকে কিছুদিন পর পর পুনঃক্রয় করা থেকে বিরত রাখবে। তবে মনে করবেন না যে দামী মানেই সেরা, সেজন্যে আগে পরীক্ষা করে কিনুন।

আপনি সাধারণত কয়েকটি সাধারণ পরীক্ষার মাধ্যমে কাপড় ভালো মানের কিনা তা বলতে পারবেন। ফ্যাশন রেভোল্যুশনের ওরসোলা ডি কাস্ত্রো বলেন, সস্তায় কাপড় তৈরি করা হলে সেলাইগুলো প্রায়শই জীর্ণ হয়। এমন কাপড়কে আলোর মধ্যে ধরে কিছুটা চাপ প্রয়োগ করুন, এতে আপনি কাপড়ের কোনো জয়েন্টের মাধ্যমে আলো ভেদ করে আসতে দেখলে বুঝবেন সেটি তাড়াতাড়ি নষ্ট হবে।

 

 আরও পড়ুনঃ

 আরও পড়ুনঃ



জামাকাপড় দীর্ঘদিন নতুন রাখার উপায়

প্রকাশিত সময় ১০:৪৭:০২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ মে ২০২২
ছবি: সংগৃহীত

আহমেদ বিন কাদের অনি
প্রকাশিত: ১০:৪৭ অপরাহ্ন, ১৩ এপ্রিল ২০২২

কাপড় দীর্ঘদিন ব্যবহার শুধু আমাদের সময় এবং অর্থ সাশ্রয় করে না, এটি কার্বন ফুটপ্রিন্টও কমাতে সাহায্য করে, যা পরিবেশের জন্যেও উপকারী। প্রিয় কাপড়গুলোকে সুন্দর এবং নতুনের মতো রাখতে আমরা বেশ কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারি। কিছু অভ্যাসের মাধ্যমে জামাকাপড়কে দীর্ঘদিন নতুনের মতো রাখা যায়।

চলুন জেনে নেই যেভাবে জামাকাপড় দীর্ঘদিন নতুন রাখা যায়।

কম ধোয়া

খুব ঘন ঘন ধুলে কাপড়ের তন্তু বা সুতা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং কাপড়ের জীবনকাল কমে যেতে পারে। আপনি যত বেশি জামাকাপড় ধুবেন, তত তাড়াতাড়ি সেগুলো জীর্ণ হবে। এটি শুধু রঙ বের করে কাপড়কে বিবর্ণ করে না, কাপড়ের ইলাস্টিসিটিও নষ্ট করে। দৃশ্যমানভাবে নোংরা বা দুর্গন্ধ না হলে, লন্ড্রি করার আগে অন্তত ৩ বার একটি পোশাক পরতে পারেন। যদি গন্ধ হয় বা নোংরা দেখায় তবে অবশ্যই ধুয়ে ফেলুন।

জামাকাপড়কে সরাসরি ধোয়া ছাড়াও পরিষ্কার করার অনেক উপায় রয়েছে, যেমন: দাগের ক্ষেত্রে যেখানে ময়লা লেগেছে শুধু সেই স্থানটি পরিষ্কার করা, কাপড় নেতানো ও স্পঞ্জি মনে হলে সেগুলো বাইরে বাতাসে বা রোদে ঝুলিয়ে রাখা, দুর্গন্ধ হলে সারারাত ফ্রিজে রাখার মাধ্যমে কাপড়কে ফ্রেশ রাখা। এটি শুধু জামাকাপড়কে দীর্ঘস্থায়ী করতে সাহায্য করবে না, পরিবেশবান্ধবও বটে।

বিখ্যাত জিন্স ব্র্যান্ড লিভাই’স এর সিইও চিপ বার্গ একজন নিবেদিত নন-ওয়াশার, যিনি ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে তার জিন্স ধৌত করেননি!

কাপড়ের কেয়ার লেবেলের দিকে মনোযোগ দিন

লন্ড্রির জন্য বিভিন্ন উপাদানের কাপড়ের জন্য বিভিন্ন পদ্ধতির প্রয়োজন। উদাহরণস্বরূপ, উল কাপড় যখন একেবারে প্রয়োজন তখনই ধোয়া উচিত, যেখানে মৃদু ডিটারজেন্ট বা হাতে ধোয়া এবং তাপ ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্কতা প্রয়োজন। যা সাধারণ কটন কাপড়ের ক্ষেত্রে নাও লাগতে পারে। এছাড়া কী পরিমান তাপমাত্রায় কাপড় ধুবেন, ব্লিচ ব্যবহার করবেন কী না ইত্যাদি নিৰ্দেশনা লেবেলে দেওয়া থাকে।

কম তাপমাত্রায় ধোয়া

কাপড় নরম এবং রঙ বিবর্ণ হওয়া রোধ করতে একটি মৃদু ডিটারজেন্ট দিয়ে কম তাপমাত্রায় কাপড় ধুতে পারেন। তবে একটি গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতা, আপনার ত্বকের কাছাকাছি পরা জিনিসগুলি, বিশেষ করে অন্তর্বাস এবং মোজা, পর্যাপ্ত তাপে ধুয়ে নেওয়া উচিত।

এনভায়রনমেন্টাল হেলথ প্রাক্টিশনার ড. লিসা অ্যাকারলে বলেন ‘আপনি কম তাপমাত্রায় বিছানা, তোয়ালে, জিম কিট, অন্তর্বাস এবং মোজা রাখবেন না। এসব ন্যূনতম ৬০ ডিগ্রি সে. তাপমাত্রায় ধুয়ে ফেলতে হবে। এছাড়া মাটি, কাদা, বালির ক্ষেত্রে কাপড়টি হালকা গরম পানিতে রাখুন এবং যতটা সম্ভব ময়লা আলগা করতে একে নাড়াচাড়া করুন।’

পরিধানের পর করণীয়

পরিধানের পর আপনার জামাকাপড় ফ্রেশ রাখতে তা বাতাসে বা খোলা জায়গায় ঝুলিয়ে রাখুন। পরিধানের পরে তা স্তূপ করে রাখবেন না, এতে করে দুর্গন্ধসহ কাপড়ে চিতি বা তিলা পরে যেতে পারে।

ডিটারজেন্টের পরিমাণ কমান

বেশি ডিটারজেন্ট মানেই বেশি পরিষ্কার নয়। পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর হওয়া ছাড়াও, প্রচুর পরিমাণে ডিটারজেন্ট আসলে আপনার কাপড়কে আরও নিস্তেজ এবং শক্ত করে তুলতে পারে।

একটু ভিন্ন কিছু চান? তাহলে প্রাকৃতিক ডিটারজেন্ট বুস্টার হিসাবে বেকিং সোডা যোগ করার চেষ্টা করুন। অর্ধেক ডিটারজেন্ট এবং অর্ধেক বেকিং সোডা ব্যবহার করুন, যা প্রাকৃতিক ডিটারজেন্ট বুস্টার হিসাবে কাজ করে। এতে যদি আপনি সন্তুষ্ট না হন, তাহলে পরের বার একটু বেশি ডিটারজেন্ট যোগ করতে পারেন।

কাপড়ের ভেতরের দিক উল্টে বের করে ধোয়া

গাঢ় রঙের পোশাক বিবর্ণ হওয়া থেকে বাঁচাতে, রঙ সংরক্ষণ করতে সেগুলো ভেতরের দিককে বাইরে উল্টিয়ে ধুতে হবে। ঘর্ষণের ফলে বাইরের দিকের ফাইবারের ক্ষতি রোধে এটি খুব কার্যকর। আমরা অনেকেই প্রিন্টেড টি-শার্ট পছন্দ করি, কিন্তু অনেক সময়ই সেটিতে বিবর্ণ বা ফাটল দেখা যায়। সেক্ষেত্রেও এভাবে ধুলে প্রিন্টটি ফাটল অথবা বিবর্ণ হওয়া থেকে রক্ষা পাবে।

একই রঙের কাপড় একসঙ্গে ধোয়া

আপনার প্রিয় সাদা জামা যেন লাল না হয়ে যায়, সেক্ষেত্রে ধোয়ার আগে রঙের ভিত্তিতে কাপড় আলাদা করুন। এছাড়া আপনার কাছে যদি উজ্জ্বল কোনো নতুন জামাকাপড় থাকে তাহলে তা একটি বাটিতে সারারাত ভিজিয়ে রাখুন এবং আপনি দেখতে পাবেন তা থেকে কতটা রঙ বের হয়।

বিরতি দিয়ে দিয়ে চক্রাকারে পরা

আপনার পোশাক বিরতি দিয়ে চক্রাকারে পরার অর্থ হল দিন, মাস বা ঋতু অনুসারে সেগুলোকে চক্রাকারে পরা। একই পোশাক টানা খুব ঘন ঘন পরিধান করলে কাপড় ময়লা, শরীরের তেল, ঘর্ষণ ইত্যাদির ফলে দ্রুত জীর্ণ হতে থাকে। তাই একই কাপড় টানা না পরে একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক দিন সেট করুন বা প্রতি সপ্তাহে সেটি শুধু ১-২ বার করে চক্রাকারে পরুন।

ড্রাই ক্লিনিং এড়িয়ে চলুন

অতি প্রয়োজন না হলে ড্রাই ক্লিনিং না করা ভাল। এটি অত্যন্ত ব্যয়বহুল অভ্যাস ছাড়াও, এতে শক্তিশালী রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার হয় যা ধীরে ধীরে কাপড়ের ফাইবারকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এছাড়া পদার্থগুলো পরিবেশের জন্যেও ক্ষতিকারক।

ইস্ত্রি বা আইরন করার ব্যাপারে সতর্কতা

যেকোনো মূল্যে আইরন করা এড়িয়ে চললে তা কাপড়ের জন্য ভালো। কোন কাপড়টি কোন তাপমাত্রায় আইরন করা উচিত তা না জানলে কাপড় নষ্ট হতে পারে। তাই লেবেলের নিৰ্দেশনা পড়ুন এবং তাপমাত্রা পারলে নিৰ্দেশিত লেভেলের থেকেও নিচে নামিয়ে নেন। সম্পূর্ণ শুকনো কাপড় আয়রন করার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করুন। এক্ষেত্রে কাপড় যখন আর্দ্র থাকে তখন ইস্ত্রি করা ভাল। যদি প্রয়োজন হয়, তবে পানি দিয়ে স্প্রে করে আয়রন করতে পারেন।

আর যদি চান আপনি আইরন ব্যবহার এড়িয়ে চলবেন, তাহলে আপনার জামাকাপড় ধোয়ার পর শুকানোর জন্য ঝুলিয়ে দেওয়ার আগে একটি ভাল করে ঝাড়া দিন, এতে করে আপনি কুঁচকে যাওয়া এড়াতে পারবেন।

কাপড় শুকানোর ক্ষেত্রে লক্ষণীয়

শুকানোর ক্ষেত্রে প্রথমে আলতো করে চাপ দিয়ে অতিরিক্ত পানি বের করে নেন। আমরা অনেকে জোরে মুচড়িয়ে পানি নিংড়াই, যার ফলে কাপড়ের ফাইবার নষ্ট হতে থাকে। অন্যদিকে, রোদে ও বাতাসে ভালো করে ঝেড়ে শুকানো ভালো, এতে করে আলাদা করে আইরনিংয়ের প্রয়োজন হয়না। আবার কিছু ভারী সোয়েটার বা জাম্পার সমতল কোথাও বিছিয়ে শুকানো ভালো। নাহলে সেগুলো ঝুলে পরতে পারে।

কাপড় সংরক্ষণ

একটি শীতল এবং শুষ্ক পরিবেশে কাপড় রাখুন। বেশি ঘিঞ্জি অবস্থায় রাখবেন না যাতে কাপড় ঘর্ষণের মাধ্যমে কুঁচকে যায় এবং রঙ বিবর্ণ হয়। স্যাঁতসেঁতে জায়গায় রাখবেন না যেখানে ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে পারে এবং কাপড় নষ্ট করতে পারে। কিংবা অতিরিক্ত আলোর মধ্যেও রাখবেন না, যাতে করে কাপড় বিবর্ণ হয়ে যেতে পারে। এ ছাড়া ক্ষতিকারক পোকা-মাকড় থেকে রক্ষার জন্যে আপনি ন্যাপথালিন বা এ জাতীয় ঔষধ ব্যবহার করতে পারেন।

ভালো হ্যাঙ্গার

বেশিরভাগ প্লাস্টিক এবং তারের হ্যাঙ্গার আপনার পোশাকের গলা ও কাঁধকে প্রসারিত করতে পারে, যা আপনার পোশাকটিকে অনাকর্ষণীয় করে ফেলে। তাই একটু বেশি ব্যয়বহুল হওয়া সত্ত্বেও, কাঠের হ্যাঙ্গারগুলো উত্তম যা দীর্ঘস্থায়ী হবে এবং আপনার পোশাকের আরও ভাল যত্ন নেবে।

সেলাই ও মেরামতের কিছু সাধারণ কৌশল

একটি বোতাম ঠিক করা কিংবা হালকা সেলাইয়ের মতো ছোটোখাটো বিষয় শিখে রাখা আপনার জামাকাপড়কে দীর্ঘস্থায়ী করতে সাহায্য করতে পারে।

মানসম্পন্ন ও ভালো মানের কাপড়
আপনি যদি শুধু সস্তা, নিম্ন মানের, কাপড় কিনেন তাহলে তা সম্ভবত দীর্ঘস্থায়ী নাও হতে পারে। ভালো কাপড়ের মূল্য বেশি হলেও এটিকে একটি বিনিয়োগ হিসাবে দেখুন, যা আপনাকে কিছুদিন পর পর পুনঃক্রয় করা থেকে বিরত রাখবে। তবে মনে করবেন না যে দামী মানেই সেরা, সেজন্যে আগে পরীক্ষা করে কিনুন।

আপনি সাধারণত কয়েকটি সাধারণ পরীক্ষার মাধ্যমে কাপড় ভালো মানের কিনা তা বলতে পারবেন। ফ্যাশন রেভোল্যুশনের ওরসোলা ডি কাস্ত্রো বলেন, সস্তায় কাপড় তৈরি করা হলে সেলাইগুলো প্রায়শই জীর্ণ হয়। এমন কাপড়কে আলোর মধ্যে ধরে কিছুটা চাপ প্রয়োগ করুন, এতে আপনি কাপড়ের কোনো জয়েন্টের মাধ্যমে আলো ভেদ করে আসতে দেখলে বুঝবেন সেটি তাড়াতাড়ি নষ্ট হবে।

 

 আরও পড়ুনঃ

 আরও পড়ুনঃ