ঢাকা ০৮:২৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি :
সারাদেশের জেলা উপোজেলা পর্যায়ে দৈনিক স্বতঃকণ্ঠে সংবাদকর্মী নিয়োগ চলছে । আগ্রহী প্রার্থীগন জীবন বৃত্তান্ত ইমেইল করুন shatakantha.info@gmail.com // দৈনিক স্বতঃকণ্ঠ অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৭১১-৩৩৩৮১১, ০১৭৪৪-১২৪৮১৪

অকুতোভয় বীর জয়নাল আবেদীন হাজারীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী

ফেনী প্রতিনিধি:
  • প্রকাশিত সময় ০১:১৬:০৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২২
  • / 85

মরহুম জয়নাল হাজারী

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদিন হাজারীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী। তার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ফেনী জেলা আওয়ামী লীগ ও হাজারী পরিবারের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) বাদ জোহর মুজিব উদ্যানে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। 

গত বছর ২০২১ সালের ২৭ ডিসেম্বর বিকাল ৫টা ২০ মিনিটে ঢাকার ল্যাবএইড হাসপাতালে হৃদযন্ত্র, কিডনি ও ফুসফুস সংক্রমণে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বর্ষীয়ান এই রাজনীতিক মৃত্যুবরণ করেন। পরদিন ফেনী শহরের মাস্টারপাড়ায় নিজবাড়ি মুজিব উদ্যানে তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়।

সূত্রে জানা যায়, ১৯৪৬ সালের ২৪ আগস্ট ফেনীর মাস্টারপাড়ার হাজারীবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন জয়নাল আবেদিন হাজারী। পেশায় তিনি সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদ ছিলেন। তিনি আমৃত্যু দৈনিক হাজারিকা প্রতিদিনের সম্পাদক ছিলেন।

ছাত্রজীবনে রাজনীতি শুরু করা জয়নাল হাজারী ফেনী কলেজের তৎকালীন ছাত্র মজলিশ (বর্তমান ছাত্র সংসদ)-এর জিএস ছিলেন। এরপর বৃহত্তর নোয়াখালী জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পরে যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্যপদেও দায়িত্ব পালন করেন শহরের মাস্টারপাড়ার এই অধিবাসী।

২০০১ সালের ১৭ আগস্ট যৌথ বাহিনীর অভিযানের মুখে তিনি দেশান্তরী হন। ওই বছর জাতীয় নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী হয়ে তিনি হেরে যান। পরে দলীয় পদও হারাতে হয় তাকে। ২০০৯ সালে দেশে ফেরার পর আর হারানো পদ ফিরে পাননি। ২০১০ সালে ফেনী সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার নির্বাচিত হন তিনি।

২০১৯ সাল থেকে আমৃত্যু তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ছিলেন। তিনি ফেনী সদর আসন থেকে তিনবার (১৯৮৬, ১৯৯১ ও ১৯৯৬) জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৯৬-২০০১ পর্যন্ত তিনি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ছিলেন।

১৯৮৪-২০০৪ পর্যন্ত ২০ বছর ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন জয়নাল হাজারী। ১৯৭১-এ মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় নোয়াখালী জেলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নেতা ছিলেন জয়নাল হাজারী। ২ নম্বর সেক্টরে তিনি এফএফ ফোর্সের একটি ইউনিটে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। রাজনৈতিক কারণে তিনি বারবার জেল খেটেছেন। রাজনৈতিক কারণে ২০০১ সালের ১৬ আগস্ট থেকে ২০০৯ সালের ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত ভারতে নির্বাসনে ছিলেন। লেখক হিসেবে তার প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে অন্যতম হলো ‘জয়নাল হাজারী বলছি’, ‘বিজুর বিচার চাই’, ‘বাঁধনের বিচার চাই’, ‘বাঁধন আছে বিজু কোথায়?’

চিরকুমার জয়নাল হাজারী

তিনি চিরকুমার ছিলেন কেন?  খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ফেনী সরকারি কলেজের বিজু নামে এক ছাত্রীর সঙ্গে তিনি প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। তাকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়ে গেলে হাজারী যান যুদ্ধে আর বিজুর বিয়ে হয়ে যায় অন্যত্র। সেই অভিমানে তিনি আর বিয়ে করেননি।

তার প্রতিষ্ঠিত যেসকল প্রতিষ্ঠান, জয়নাল হাজারী কলেজ, হাজারীপাড়া হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানা, হাজারীপাড়া জামে মসজিদ, নয়টিলা মাজার মসজিদ ও এতিমখানাসহ অসংখ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও পৃষ্ঠপোষক ছিলেন জয়নাল  হাজারী। এসব কারণে জয়নাল হাজারী মানুষের স্মৃতিতে আজও অম্লাণ হয়ে আছেন।

এই রকম আরও টপিক

অকুতোভয় বীর জয়নাল আবেদীন হাজারীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী

প্রকাশিত সময় ০১:১৬:০৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২২

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদিন হাজারীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী। তার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ফেনী জেলা আওয়ামী লীগ ও হাজারী পরিবারের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) বাদ জোহর মুজিব উদ্যানে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। 

গত বছর ২০২১ সালের ২৭ ডিসেম্বর বিকাল ৫টা ২০ মিনিটে ঢাকার ল্যাবএইড হাসপাতালে হৃদযন্ত্র, কিডনি ও ফুসফুস সংক্রমণে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বর্ষীয়ান এই রাজনীতিক মৃত্যুবরণ করেন। পরদিন ফেনী শহরের মাস্টারপাড়ায় নিজবাড়ি মুজিব উদ্যানে তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়।

সূত্রে জানা যায়, ১৯৪৬ সালের ২৪ আগস্ট ফেনীর মাস্টারপাড়ার হাজারীবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন জয়নাল আবেদিন হাজারী। পেশায় তিনি সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদ ছিলেন। তিনি আমৃত্যু দৈনিক হাজারিকা প্রতিদিনের সম্পাদক ছিলেন।

ছাত্রজীবনে রাজনীতি শুরু করা জয়নাল হাজারী ফেনী কলেজের তৎকালীন ছাত্র মজলিশ (বর্তমান ছাত্র সংসদ)-এর জিএস ছিলেন। এরপর বৃহত্তর নোয়াখালী জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পরে যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্যপদেও দায়িত্ব পালন করেন শহরের মাস্টারপাড়ার এই অধিবাসী।

২০০১ সালের ১৭ আগস্ট যৌথ বাহিনীর অভিযানের মুখে তিনি দেশান্তরী হন। ওই বছর জাতীয় নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী হয়ে তিনি হেরে যান। পরে দলীয় পদও হারাতে হয় তাকে। ২০০৯ সালে দেশে ফেরার পর আর হারানো পদ ফিরে পাননি। ২০১০ সালে ফেনী সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার নির্বাচিত হন তিনি।

২০১৯ সাল থেকে আমৃত্যু তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ছিলেন। তিনি ফেনী সদর আসন থেকে তিনবার (১৯৮৬, ১৯৯১ ও ১৯৯৬) জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৯৬-২০০১ পর্যন্ত তিনি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ছিলেন।

১৯৮৪-২০০৪ পর্যন্ত ২০ বছর ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন জয়নাল হাজারী। ১৯৭১-এ মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় নোয়াখালী জেলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নেতা ছিলেন জয়নাল হাজারী। ২ নম্বর সেক্টরে তিনি এফএফ ফোর্সের একটি ইউনিটে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। রাজনৈতিক কারণে তিনি বারবার জেল খেটেছেন। রাজনৈতিক কারণে ২০০১ সালের ১৬ আগস্ট থেকে ২০০৯ সালের ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত ভারতে নির্বাসনে ছিলেন। লেখক হিসেবে তার প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে অন্যতম হলো ‘জয়নাল হাজারী বলছি’, ‘বিজুর বিচার চাই’, ‘বাঁধনের বিচার চাই’, ‘বাঁধন আছে বিজু কোথায়?’

চিরকুমার জয়নাল হাজারী

তিনি চিরকুমার ছিলেন কেন?  খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ফেনী সরকারি কলেজের বিজু নামে এক ছাত্রীর সঙ্গে তিনি প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। তাকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়ে গেলে হাজারী যান যুদ্ধে আর বিজুর বিয়ে হয়ে যায় অন্যত্র। সেই অভিমানে তিনি আর বিয়ে করেননি।

তার প্রতিষ্ঠিত যেসকল প্রতিষ্ঠান, জয়নাল হাজারী কলেজ, হাজারীপাড়া হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানা, হাজারীপাড়া জামে মসজিদ, নয়টিলা মাজার মসজিদ ও এতিমখানাসহ অসংখ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও পৃষ্ঠপোষক ছিলেন জয়নাল  হাজারী। এসব কারণে জয়নাল হাজারী মানুষের স্মৃতিতে আজও অম্লাণ হয়ে আছেন।