গাজায় ইসরাইলি হামলার ৬ মাস পরে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা দিল তুরস্ক
- প্রকাশিত সময় ১১:০৩:২৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ এপ্রিল ২০২৪
- / 134
গাজায় যুদ্ধবিরতি না হওয়া পর্যন্ত ইসরাইলে ৫৪টি পণ্যের রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছে তুরস্ক।
তুরস্কের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরাইল হামলা বন্ধ না করা পর্যন্ত এবং গাজায় পর্যাপ্ত মানবিক সহায়তা না দেওয়া পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে।
মঙ্গলবার ৮ এপ্রিল তুরস্কের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা লোহা ও ইস্পাত জাতীয় পণ্য, জেট ফুয়েল, নির্মাণ সরঞ্জাম, মেশিন, সিমেন্ট, গ্রানাইট, রাসায়নিক, কীটনাশক এবং ইটসহ ৫৪টি ক্যাটাগরিতে ইসরায়েলে আর পণ্য পাঠাবে না।
বিবৃতিতে এতে বলা হয়, ইসরাইল স্পষ্টভাবে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে যাচ্ছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে উপেক্ষা করছে। ইসরায়েল অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা না করা এবং গাজায় পর্যাপ্ত ও নিরবচ্ছিন্ন মানবিক সহায়তা প্রবাহের অনুমতি না দেওয়া পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের মতে, গাজায় ইসরায়েলের ছয় মাসের যুদ্ধে ৩৩ হাজারের বেশি লোক নিহত হয়েছে।
ইসরায়েল গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের নেতৃত্বাধীন হামলায় ১ হাজার ১৩৯ জন নিহত হওয়ার জবাবে গাজায় হামলা শুরু করে।
ইসরাইলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ তুরস্কের ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান ‘গাজায় হামাস হত্যাকারীদের সমর্থনের জন্য আবারও তুরস্কের জনগণের অর্থনৈতিক স্বার্থ বিসর্জন দিচ্ছেন।
তিনি বলেন, কিছু তুর্কি আমদানি নিষিদ্ধ করা, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাগুলোকে তুরস্কে বিনিয়োগ বন্ধ করতে বলা এবং ‘আমেরিকান কংগ্রেসে আমাদের বন্ধুদের’ তুরস্কের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানানোসহ ‘তুর্কি অর্থনীতির ক্ষতি হয় এমন পদক্ষেপ’ ইসরায়েল নেবে।
গাজার আকাশে তুর্কি কার্গো সামরিক বিমানের ত্রাণ ফেলতে বাধা দেওয়ার পর তুরস্ক ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘ধাপে ধাপে’ প্রতিশোধ নেয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার একদিন পর এ বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা এলো।
তুরস্ক ওই অঞ্চলে ৪৫ হাজার টন মানবিক সহায়তা পাঠিয়েছে উল্লেখ করে এরদোগান বলেন, ‘গাজায় রক্তপাত বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত এবং তারা ১৯৬৭ সালের সীমান্তের ভিত্তিতে পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি মুক্ত ফিলিস্তিনে বসবাস না করা পর্যন্ত আমরা আমাদের ফিলিস্তিনি ভাই-বোনদের প্রতি আমাদের সমর্থন অব্যাহত রাখব।
যুদ্ধ শুরুর পরপরই ইসরায়েল ও তুরস্ক তাদের নিজ নিজ রাজধানী থেকে তাদের রাষ্ট্রদূতদের ফিরিয়ে নেয়।
তবে তুর্কি রফতানিকারক পরিষদের প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, মঙ্গলবার পর্যন্ত আঙ্কারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কোনও প্রকৃত ব্যবস্থা আরোপ করেনি, ৭ অক্টোবর থেকে বাণিজ্য হ্রাস পেয়েছে, তবে এই বছর এখন পর্যন্ত প্রতি মাসে বাণিজ্য বাড়ছে।
যুদ্ধের সময় ইসরায়েলের সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক নিয়ে তুর্কি সরকার অভ্যন্তরীণ সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছে, যা অনেকে মার্চের শেষের দিকে স্থানীয় নির্বাচনে বড় পরাজয়ের কারণ হিসাবে দেখেছিল।
উল্লেখ্য, ইসরায়েলের প্রায় ৫০ শতাংশ সিমেন্ট, ইস্পাত ও মার্বেল আমদানি হয় তুরস্ক থেকে।
সূত্রঃ আল-জাজিরা।