ঢাকা ১১:২৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি :
সারাদেশের জেলা উপোজেলা পর্যায়ে দৈনিক স্বতঃকণ্ঠে সংবাদকর্মী নিয়োগ চলছে । আগ্রহী প্রার্থীগন জীবন বৃত্তান্ত ইমেইল করুন shatakantha.info@gmail.com // দৈনিক স্বতঃকণ্ঠ অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৭১১-৩৩৩৮১১, ০১৭৪৪-১২৪৮১৪

গৌরবময় ভাষা বাংলা

বার্তাকক্ষ
  • প্রকাশিত সময় ০৪:৪৩:৩১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২০
  • / 111

আমার এক বন্ধু এক আড্ডায় একদিন বলছিলেন, বাংলা একটা কঠিন ভাষা। এটি আয়ত্ত করা বেশ কঠিন। আর এমন কঠিন-জটিল হওয়ার কারণেই বিদেশীরা বাংলা ভাষা গ্রহণ করছে না। সব ভাষায় অক্ষর এত কম অথচ বাংলাভাষায় অক্ষর ৫০টা কেন? আমাদের দেশের ভাষা বিজ্ঞানীরা, পন্ডিতরা কি এটি কমিয়ে আনতে পারছেন না! অক্ষর কমালেই তো ভাষাটা সর্বজন গ্রাহ্য হয়।

পেশায় আমার বন্ধু ডাক্তার। অনেক সময়ই ছুরি-কাচি চালান রোগীর ওপর নির্দয়ভাবে। তিনি হয়ত ভেবেছেন ভাষার প্রতি এমন নির্দয়-নিষ্ঠুর আচরণ করে হয়ত অক্ষর কমিয়ে দিলেই বাংলা ভাষা সহজবোধ্য হয়ে যাবে।

আসলে কি তাই! পৃথিবীতে ৬ হাজারের অধিক ভাষা আছে। এর মধ্যে বাংলা ভাষার রয়েছে আলাদা বৈশিষ্ট্য, আছে স্বাতন্ত্র্যতা। তাইতো পৃথিবীর নানা ভাষার পন্ডিতজনের কাছে বাংলার রয়েছে একটি বিশেষ মর্যাদা।

জর্জ বার্নাড শ একবার বলেছিলেন, ‘পৃথিবীতে একমাত্র ভাষা হচ্ছে বাংলা যে ভাষায় বিশ্বের সব ভাষার শব্দ উচ্চারণ ও লেখা সম্ভব। বাংলা ভাষায় যুক্তবর্ণ এক অনন্য বৈশিষ্ট্য।’

আমাদের শব্দ ভান্ডার বিশ্বের অন্যান্য ভাষার চেয়ে অনেক সমৃদ্ধ। অথচ আজ এই ভাষাকে আমরা অবজ্ঞা করছি। মাতৃভাষা হওয়ার কারণে এ ভাষার প্রতি আমাদের এক ধরণের অবজ্ঞা, গুরুত্ব না দেয়ার মনোভাব দেখা যায় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যেও এমনকি সংবাদপত্রে যারা লেখালেখি করেন তাদের মধ্যেও। আমি এটি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেছি যে অনেক কলেজের ছাত্র/ছাত্রীরা শুদ্ধ উচ্চারণে রিডিং পর্যন্ত পড়তে পারে না। বিশ্বাস না হলে যে কেউ পরীক্ষা করে দেখতে পারেন।

আরো ভয়ংকর বিষয় যে, স্কুল-কলেজের অনেক শিক্ষকরাও অনেক শব্দের সঠিক বানান এবং উচ্চারণ জানেন না। বিষয়টি যদি এমন হয় যে, কোন কলেজের বাংলা শিক্ষক শুদ্ধভাবে বাংলা শব্দ উচ্চারণ করতে পারেন না, বিজ্ঞ পাঠক বিষয়টি আপনারা কি সহজভাবে নিতে পারবেন ?

প্রাইমারী স্কুলের মত গ্রামে গ্রামে কলেজ প্রতিষ্ঠা হওয়ায় সবচেয়ে উল্লেখ্যযোগ্য যে কাজটি হয়েছে তা হচ্ছে, হাজার হাজার শিক্ষিত বেকারের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে বহু সংখ্যক শিক্ষক আছেন যথাযথভাবে নিয়োগ দেয়া হলে যারা নাকি প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষকের চাকরিও পেতেন না। ডোনেশন দিয়ে অযোগ্যরাও কলেজের শিক্ষক বনে গেছেন। এ ধরণের শিক্ষক যারা নিজেরাই ঠিকমত জানেন না, তারা কিভাবে ছাত্র/ছাত্রীদের শেখাবেন।

বাংলা ভাষার প্রতি দরদ দিয়ে আমাদের তা আয়ত্ত করা উচিত।

১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি এই মাতৃভাষা বাংলার জন্য বাংলার দামাল ছেলেরা আন্দোলন সংগ্রাম করেছে, লড়াই করেছে, বুকের তাজা রক্তে রঞ্জিত করেছে রাজপথ। এত ত্যাগের বিনিময়ে পাওয়া, এত রক্ত দিয়ে কেনা আমাদের মায়ের ভাষার প্রতি যথাযথ মর্যাদা দেখাতে কি আমরা পারছি ?

মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন নবী রাসুলগণের মাধ্যমে পৃথিবীতে তাঁর বানীসমূহ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতেন। তাই হযরত মুহম্মদ (সা:) এর মাতৃভাষা আরবীতে কুরআন নাযিল করেছিলেন, মুসা (আ:) এর কাছে তাওরাত পাঠিয়েছিলেন তার মাতৃভাষা ইবরানী ভাষায়। দাউদ (আ:) এর জাবুর ইউনানী ভাষায়, ঈসা (আ:) এর ইঞ্জিল সুরিয়ানা ভাষায় নাযিল করেছিলেন। এখানে মাতৃভাষার গুরুত্বকে প্রাধান্য দিয়েছেন স্বয়ং সৃষ্টিকর্তা।

নোবেল পুরষ্কার বিজয়ী বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আমাদের গর্বের পরিচায়ক। বিশ্ব সভায় সমাদৃত একজন ব্যক্তি। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম কিংবা পল্লী কবি জসীম উদদীন আমাদের প্রাণের সঙ্গে মিশে আছেন। জীবনানন্দ, বন্দে আলী মিয়া আমাদের প্রকৃতির কাছে টেনে নিয়ে যান, শামসুর রাহমান আমাদের নাগরিক জীবনের কথা বলেন, স্বাধীনতার পাঠ দেন। তাঁরা তো বাংলা ভাষার অহংকার।

সেই ভাষার মর্যাদা রক্ষায় প্রাণ দেয়ার ইতিহাসও আমাদেরই সালাম, বরকত, জব্বার, শফিউর, অহীউল্লারা তৈরী করেছেন।

সিয়েরালিওনে বাংলা ভাষাকে বিশেষ মর্যাদা দেয়া হয়েছে। তারাও বাংলায় কথা বলে, বাংলায় গান গায়, বাংলায়-ই তাদের মনের ভাব প্রকাশ করে। এটি আমাদের জন্য কতই না আনন্দের, কতই না গৌরবের।

বিশ্বের সমৃদ্ধ ভাষাগুলোর মধ্যে অন্যতম হিসেবেও আমাদের বাংলাভাষা নিঃসন্দেহে স্থান করে নিতে সক্ষম হয়েছে। তাইতো ভিনদেশী ভাষা গবেষকদের আসতে হয় এই বাংলায়। তাঁদের খোঁজ করতে হয় লালন শাহ, হাসন রাজা কিংবা তাদেরই উত্তরসূরিদের সৃষ্টিকে। এই বাংলা ভাষা বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের মনের ভাব প্রকাশে ব্যবহৃত হয়।

অথচ এমন একটি সমৃদ্ধ, সুন্দর ও মর্যাদাপূর্ণ ভাষার প্রতি আমরা অনেকেই উদাসীন। যে জাতি নিজের ভাষার জন্য প্রাণ দিল, জন্ম দিল এক রক্তাক্ত ইতিহাসের, সে জাতিই আবার তার ভাষাকে অবজ্ঞা করছে, বিকৃত করছে এটা বড়ই দু:খজনক।

২১শে ফেব্রুয়ারিতে পৃথিবীর ১৯০টি দেশের মানুষ এ দিবসটি পালনের মাধ্যমে বাংলা ভাষাকে স্মরণ করে গভীর শ্রদ্ধায়। সম্মানিত হই আমরা বাংলা ভাষাভাষি মানুষ, সম্মানিত হয় বাংলাদেশ। কিন্তু প্রশ্নটি হলো সে হিসেবে আমরা কতটুকু উপলদ্ধি করতে পেরেছি বাংলা ভাষাকে ? আমাদের নিজের ভাষার জন্য আমাদের নিজেদের শ্রদ্ধা কতটুকু ?

আজও রাষ্ট্রের সর্বস্তরে বাংলা ভাষা চালু হয়নি। যত্রতত্র ইংরেজী নামের ছড়াছড়ি। অনেক আলোচনা সমালোচনার পরও আদালতে এখনও বাংলা ভাষা চালু হয় নি।

ফেব্রুয়ারি মাস এলেই আমরা বাংলা চর্চায় একটু মনোনিবেশ করি মাত্র। কেবল ফেব্রুয়ারিতেই নয়, সারা বছরই গৌরবময় এ বাংলা ভাষা চর্চায় আন্তরিক থাকতে হবে। বাংলা ভাষা শুদ্ধভাবে বলতে ও লিখতে হবে এবং এ ভাষার সাহিত্য ও সম্পদের সাথে আমাদের পরিচিতি বাড়াতে হবে। কেননা মাতৃভাষার গৌরব বাড়লে আমাদেরও গৌরব বাড়বে।


আব্দুল হামিদ খান
লেখক, সাংবাদিক, কলামিস্ট

গৌরবময় ভাষা বাংলা

প্রকাশিত সময় ০৪:৪৩:৩১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২০

আমার এক বন্ধু এক আড্ডায় একদিন বলছিলেন, বাংলা একটা কঠিন ভাষা। এটি আয়ত্ত করা বেশ কঠিন। আর এমন কঠিন-জটিল হওয়ার কারণেই বিদেশীরা বাংলা ভাষা গ্রহণ করছে না। সব ভাষায় অক্ষর এত কম অথচ বাংলাভাষায় অক্ষর ৫০টা কেন? আমাদের দেশের ভাষা বিজ্ঞানীরা, পন্ডিতরা কি এটি কমিয়ে আনতে পারছেন না! অক্ষর কমালেই তো ভাষাটা সর্বজন গ্রাহ্য হয়।

পেশায় আমার বন্ধু ডাক্তার। অনেক সময়ই ছুরি-কাচি চালান রোগীর ওপর নির্দয়ভাবে। তিনি হয়ত ভেবেছেন ভাষার প্রতি এমন নির্দয়-নিষ্ঠুর আচরণ করে হয়ত অক্ষর কমিয়ে দিলেই বাংলা ভাষা সহজবোধ্য হয়ে যাবে।

আসলে কি তাই! পৃথিবীতে ৬ হাজারের অধিক ভাষা আছে। এর মধ্যে বাংলা ভাষার রয়েছে আলাদা বৈশিষ্ট্য, আছে স্বাতন্ত্র্যতা। তাইতো পৃথিবীর নানা ভাষার পন্ডিতজনের কাছে বাংলার রয়েছে একটি বিশেষ মর্যাদা।

জর্জ বার্নাড শ একবার বলেছিলেন, ‘পৃথিবীতে একমাত্র ভাষা হচ্ছে বাংলা যে ভাষায় বিশ্বের সব ভাষার শব্দ উচ্চারণ ও লেখা সম্ভব। বাংলা ভাষায় যুক্তবর্ণ এক অনন্য বৈশিষ্ট্য।’

আমাদের শব্দ ভান্ডার বিশ্বের অন্যান্য ভাষার চেয়ে অনেক সমৃদ্ধ। অথচ আজ এই ভাষাকে আমরা অবজ্ঞা করছি। মাতৃভাষা হওয়ার কারণে এ ভাষার প্রতি আমাদের এক ধরণের অবজ্ঞা, গুরুত্ব না দেয়ার মনোভাব দেখা যায় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যেও এমনকি সংবাদপত্রে যারা লেখালেখি করেন তাদের মধ্যেও। আমি এটি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেছি যে অনেক কলেজের ছাত্র/ছাত্রীরা শুদ্ধ উচ্চারণে রিডিং পর্যন্ত পড়তে পারে না। বিশ্বাস না হলে যে কেউ পরীক্ষা করে দেখতে পারেন।

আরো ভয়ংকর বিষয় যে, স্কুল-কলেজের অনেক শিক্ষকরাও অনেক শব্দের সঠিক বানান এবং উচ্চারণ জানেন না। বিষয়টি যদি এমন হয় যে, কোন কলেজের বাংলা শিক্ষক শুদ্ধভাবে বাংলা শব্দ উচ্চারণ করতে পারেন না, বিজ্ঞ পাঠক বিষয়টি আপনারা কি সহজভাবে নিতে পারবেন ?

প্রাইমারী স্কুলের মত গ্রামে গ্রামে কলেজ প্রতিষ্ঠা হওয়ায় সবচেয়ে উল্লেখ্যযোগ্য যে কাজটি হয়েছে তা হচ্ছে, হাজার হাজার শিক্ষিত বেকারের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে বহু সংখ্যক শিক্ষক আছেন যথাযথভাবে নিয়োগ দেয়া হলে যারা নাকি প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষকের চাকরিও পেতেন না। ডোনেশন দিয়ে অযোগ্যরাও কলেজের শিক্ষক বনে গেছেন। এ ধরণের শিক্ষক যারা নিজেরাই ঠিকমত জানেন না, তারা কিভাবে ছাত্র/ছাত্রীদের শেখাবেন।

বাংলা ভাষার প্রতি দরদ দিয়ে আমাদের তা আয়ত্ত করা উচিত।

১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি এই মাতৃভাষা বাংলার জন্য বাংলার দামাল ছেলেরা আন্দোলন সংগ্রাম করেছে, লড়াই করেছে, বুকের তাজা রক্তে রঞ্জিত করেছে রাজপথ। এত ত্যাগের বিনিময়ে পাওয়া, এত রক্ত দিয়ে কেনা আমাদের মায়ের ভাষার প্রতি যথাযথ মর্যাদা দেখাতে কি আমরা পারছি ?

মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন নবী রাসুলগণের মাধ্যমে পৃথিবীতে তাঁর বানীসমূহ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতেন। তাই হযরত মুহম্মদ (সা:) এর মাতৃভাষা আরবীতে কুরআন নাযিল করেছিলেন, মুসা (আ:) এর কাছে তাওরাত পাঠিয়েছিলেন তার মাতৃভাষা ইবরানী ভাষায়। দাউদ (আ:) এর জাবুর ইউনানী ভাষায়, ঈসা (আ:) এর ইঞ্জিল সুরিয়ানা ভাষায় নাযিল করেছিলেন। এখানে মাতৃভাষার গুরুত্বকে প্রাধান্য দিয়েছেন স্বয়ং সৃষ্টিকর্তা।

নোবেল পুরষ্কার বিজয়ী বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আমাদের গর্বের পরিচায়ক। বিশ্ব সভায় সমাদৃত একজন ব্যক্তি। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম কিংবা পল্লী কবি জসীম উদদীন আমাদের প্রাণের সঙ্গে মিশে আছেন। জীবনানন্দ, বন্দে আলী মিয়া আমাদের প্রকৃতির কাছে টেনে নিয়ে যান, শামসুর রাহমান আমাদের নাগরিক জীবনের কথা বলেন, স্বাধীনতার পাঠ দেন। তাঁরা তো বাংলা ভাষার অহংকার।

সেই ভাষার মর্যাদা রক্ষায় প্রাণ দেয়ার ইতিহাসও আমাদেরই সালাম, বরকত, জব্বার, শফিউর, অহীউল্লারা তৈরী করেছেন।

সিয়েরালিওনে বাংলা ভাষাকে বিশেষ মর্যাদা দেয়া হয়েছে। তারাও বাংলায় কথা বলে, বাংলায় গান গায়, বাংলায়-ই তাদের মনের ভাব প্রকাশ করে। এটি আমাদের জন্য কতই না আনন্দের, কতই না গৌরবের।

বিশ্বের সমৃদ্ধ ভাষাগুলোর মধ্যে অন্যতম হিসেবেও আমাদের বাংলাভাষা নিঃসন্দেহে স্থান করে নিতে সক্ষম হয়েছে। তাইতো ভিনদেশী ভাষা গবেষকদের আসতে হয় এই বাংলায়। তাঁদের খোঁজ করতে হয় লালন শাহ, হাসন রাজা কিংবা তাদেরই উত্তরসূরিদের সৃষ্টিকে। এই বাংলা ভাষা বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের মনের ভাব প্রকাশে ব্যবহৃত হয়।

অথচ এমন একটি সমৃদ্ধ, সুন্দর ও মর্যাদাপূর্ণ ভাষার প্রতি আমরা অনেকেই উদাসীন। যে জাতি নিজের ভাষার জন্য প্রাণ দিল, জন্ম দিল এক রক্তাক্ত ইতিহাসের, সে জাতিই আবার তার ভাষাকে অবজ্ঞা করছে, বিকৃত করছে এটা বড়ই দু:খজনক।

২১শে ফেব্রুয়ারিতে পৃথিবীর ১৯০টি দেশের মানুষ এ দিবসটি পালনের মাধ্যমে বাংলা ভাষাকে স্মরণ করে গভীর শ্রদ্ধায়। সম্মানিত হই আমরা বাংলা ভাষাভাষি মানুষ, সম্মানিত হয় বাংলাদেশ। কিন্তু প্রশ্নটি হলো সে হিসেবে আমরা কতটুকু উপলদ্ধি করতে পেরেছি বাংলা ভাষাকে ? আমাদের নিজের ভাষার জন্য আমাদের নিজেদের শ্রদ্ধা কতটুকু ?

আজও রাষ্ট্রের সর্বস্তরে বাংলা ভাষা চালু হয়নি। যত্রতত্র ইংরেজী নামের ছড়াছড়ি। অনেক আলোচনা সমালোচনার পরও আদালতে এখনও বাংলা ভাষা চালু হয় নি।

ফেব্রুয়ারি মাস এলেই আমরা বাংলা চর্চায় একটু মনোনিবেশ করি মাত্র। কেবল ফেব্রুয়ারিতেই নয়, সারা বছরই গৌরবময় এ বাংলা ভাষা চর্চায় আন্তরিক থাকতে হবে। বাংলা ভাষা শুদ্ধভাবে বলতে ও লিখতে হবে এবং এ ভাষার সাহিত্য ও সম্পদের সাথে আমাদের পরিচিতি বাড়াতে হবে। কেননা মাতৃভাষার গৌরব বাড়লে আমাদেরও গৌরব বাড়বে।


আব্দুল হামিদ খান
লেখক, সাংবাদিক, কলামিস্ট