ঢাকা ০৫:৫৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি :
সারাদেশের জেলা উপোজেলা পর্যায়ে দৈনিক স্বতঃকণ্ঠে সংবাদকর্মী নিয়োগ চলছে । আগ্রহী প্রার্থীগন জীবন বৃত্তান্ত ইমেইল করুন shatakantha.info@gmail.com // দৈনিক স্বতঃকণ্ঠ অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৭১১-৩৩৩৮১১, ০১৭৪৪-১২৪৮১৪

করোনার ছোঁবলে বিষাদময় ঈদ

বার্তাকক্ষ
  • প্রকাশিত সময় ১১:৪৮:৫৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ মে ২০২০
  • / 133

বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের মহামারী বিস্তারে হারিয়ে গেছে মুসলিম সভ্যতার ঈদের আনন্দ। নতুন প্রজন্ম তাদের ভবিষ্যত প্রজন্মকে বলবে ২০২০ সালে এমন একটি মহামারী দেখা দিয়েছিলো যাতে ঈদ পরিণত হয়েছিলো বিষাদে। আনন্দ নামক শব্দটি হারিয়েছিলে সাগরের গহীনে।

প্রতি বছর ঈদকে ঘিরে মানুষ তার সকল কর্মফেলে নারীর টানে বাড়ি আসে। পরিবার ও স্বজনের সাথে একসাথে আনন্দ ভাগকরবে এমন আশায় শত কষ্টসহ্য করে,রাত জেগে বাড়ি ফিরতে ব্যস্ত হয় তারা। আবার অনেক সময় রাস্তাতেই ঈদ সকাল কাটায় এসকল মানুষ। কিন্তু আনন্দ ছিলো সবার মুখে। কিন্তু এবার সেই আনন্দ বিষাদে রুপ নিয়েছে অদৃশ্য শক্তি মরণঘাতক করোনার জন্য।

গত বছরে এশিয়ার বৃহৎ রাস্ট্র চীনের উহান থেকে সৃষ্ট করোনার প্রভার যখন বিশ্বব্যাপী,ঠিক সেই সময়ে বাংলাদেশের মানুষের জীবনে নেমে আসে অমানিষার অন্ধকার। তৃতীয় বিশ্রে একটি দেশ বাংলাদেশ। হায়নার হিংস্র থাবায় বার বার বিধ্বস্ত হয়েছে এ সোনার বাংলা। আবার মাথা উঁচু করে দাঁঁড়িছেও পুনরায়। কিন্তু অদৃশ্য করোনায় মানুষ আজ রিক্ত-সিক্ত। বেদনার নীল আকাশ যেমন প্রেমিকার মনকে বাবার কাদাতে স্বক্ষম হয় তেমনি করোনার ছোঁবলের ভয়াবহতা প্রতিটি পরিবারকে তার প্রিয়জনকে দুরে সরিয়ে দেয় খুব সহজেই। একজন করোনা রোগীর কারণে সমগ্র পরিবার পরিজন মুহুর্তের মধ্যে দুরে চলে যায়। নিজ থেকে মেনে নিতে বাধ্য সঙ্গনিরোধ নামক শব্দকে জড়িয়ে নিতে। মানব সভ্যতার ক্রমোবিকাশতাকে আঁকড়ে ধরতে মানুষ যখন তার সর্বচ্চ চেষ্টা করে,ঠিক তখনি বিশ্বের বুকে জাগ্রহ হয় নতুন নতুন প্রাকৃতিক বিপর্য। আর সেই সকল বিপর্যয় কাটিয়ে উঠেতে না উঠতে চলে আসে আম্পানের মতো ঝড় জলচ্ছাস, আর করোনার মতো মহামারী।

আমরা বাঙ্গালী, সাড়ে ৪শ বছরের ইতিহাস বলে দেয় বাঙ্গালীরা কখনই মাথা নত করেনা। বিশ্বের উন্নত রাষ্ট্রের কর্ণধররা যখন করোনা মোকাবিলায় প্রায় পরাস্থ বাঙ্গালী কিন্তু সৃষ্টি কর্তার ওপর নিজেদের সোপে দেয় সহসা। এমন সাহসীকতা আর মৃত্যু পরোয়ানা নিয়ে বহিঃবিশ্বে কোন নজির নেই অন্য জাতির। বাংলাদেশের মতো একটি ছোট্র দেশে প্রায় ১৮ কোটি মানুষের বসবাস। যাদের ১০ থেকে ২০ শতাংশ মানুষের নেই নির্দিষ্ট সঠিক আবাসস্থল। সেই সকল ভাসমান মানুষদের নিয়ে মহামারী করোনাকে পরাজিত করে জয় ছিনিয়ে আনার জন্য কোয়ারেন্টাইন শব্দটি বড়ই বেমানান। তাইতো বিষাদ শব্দটি আবিস্কার যতার্থই বলে প্রতিয়মান।

যাদের জীবনটাই বিষাদে শুরু তারা কি করে বিষাদের ব্যাখ্যা ভুলবে। যে আনন্দে নেই প্রকৃত আনন্দ। নেই একত্রে নামাজ আদায়, নেই কোলাকুলি সেটা কখনই প্রকৃত আনন্দ হতে পারেনা। আবার আনন্দের চেয়ে যেখানে নিরানন্দর মাত্রা বেশি সেটাকে বিষাদই বলা শ্রেয়। আমি একজন আশাবাদি মানুষ। তাই আশায় বুক বেঁধে আছি সারা বিশ্বে যে মানুষগুলো করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতাল এবং বাড়িতে কাতরাচ্ছে, মহান সৃষ্টিকর্তা তাদের দ্রুত আরোগ্য করবেন। ফিরিয়ে দেবন তাদের পরিবারের মুখের হাসি। আর দ্রুত সময়েই নির্মল বাতাসে শান্ত করবেন এ বিশাক্ত পৃথিবী। দান করবেন সজীবতা। আমরা পাবো সোনালী অতীত পৃথিবী।

আর সেই পৃথিবী উপভোগ করেই প্রজন্মর পর প্রজন্ম নতুন পাঠ্য বইতে এই করোনার ভয়াবহতার কথা অধ্যায়ন করবে যুগের পর যুগ। রপ্ত করবে এই মহামারীর কারণ, প্রতিকার ও করণীয় কি?

তাই এ পৃথিবীর মানুষের নিকট একটাই দাবি নতুন পৃথিবী ফিরে পেতে, সজীবতা ভোগ করতে, মনুষত্ববোধ বজায় রাখতে নিজ ও অপরকে সুস্থ্য রাখতে আমরা একযোগে নিরব যুদ্ধে সামিল হই। সেই যুদ্ধের অস্ত্র একটাই সেটা হলো নিজ ঘরকে ব্যবহার করি। নিজে ঘরে থাকি। অপরকে নিরাপদ রাখি। তাহলে আগামি ঈদুল আযহাকে আমরা সবাই বিষাদতাকে সরিয়ে আনন্দের বন্যায় ভাসাতে পারবো এমনটা ভাবতেই পারি। যে যেখানে আছি সুস্থ্য থাকি ভালো থাকি সবার জন্য শুভ প্রত্যাশা রাখি। সবাইকে আবারো ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা।


আমিনুল ইসলাম
সাংবাদিক ও লেখক।

এই রকম আরও টপিক

করোনার ছোঁবলে বিষাদময় ঈদ

প্রকাশিত সময় ১১:৪৮:৫৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ মে ২০২০

বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের মহামারী বিস্তারে হারিয়ে গেছে মুসলিম সভ্যতার ঈদের আনন্দ। নতুন প্রজন্ম তাদের ভবিষ্যত প্রজন্মকে বলবে ২০২০ সালে এমন একটি মহামারী দেখা দিয়েছিলো যাতে ঈদ পরিণত হয়েছিলো বিষাদে। আনন্দ নামক শব্দটি হারিয়েছিলে সাগরের গহীনে।

প্রতি বছর ঈদকে ঘিরে মানুষ তার সকল কর্মফেলে নারীর টানে বাড়ি আসে। পরিবার ও স্বজনের সাথে একসাথে আনন্দ ভাগকরবে এমন আশায় শত কষ্টসহ্য করে,রাত জেগে বাড়ি ফিরতে ব্যস্ত হয় তারা। আবার অনেক সময় রাস্তাতেই ঈদ সকাল কাটায় এসকল মানুষ। কিন্তু আনন্দ ছিলো সবার মুখে। কিন্তু এবার সেই আনন্দ বিষাদে রুপ নিয়েছে অদৃশ্য শক্তি মরণঘাতক করোনার জন্য।

গত বছরে এশিয়ার বৃহৎ রাস্ট্র চীনের উহান থেকে সৃষ্ট করোনার প্রভার যখন বিশ্বব্যাপী,ঠিক সেই সময়ে বাংলাদেশের মানুষের জীবনে নেমে আসে অমানিষার অন্ধকার। তৃতীয় বিশ্রে একটি দেশ বাংলাদেশ। হায়নার হিংস্র থাবায় বার বার বিধ্বস্ত হয়েছে এ সোনার বাংলা। আবার মাথা উঁচু করে দাঁঁড়িছেও পুনরায়। কিন্তু অদৃশ্য করোনায় মানুষ আজ রিক্ত-সিক্ত। বেদনার নীল আকাশ যেমন প্রেমিকার মনকে বাবার কাদাতে স্বক্ষম হয় তেমনি করোনার ছোঁবলের ভয়াবহতা প্রতিটি পরিবারকে তার প্রিয়জনকে দুরে সরিয়ে দেয় খুব সহজেই। একজন করোনা রোগীর কারণে সমগ্র পরিবার পরিজন মুহুর্তের মধ্যে দুরে চলে যায়। নিজ থেকে মেনে নিতে বাধ্য সঙ্গনিরোধ নামক শব্দকে জড়িয়ে নিতে। মানব সভ্যতার ক্রমোবিকাশতাকে আঁকড়ে ধরতে মানুষ যখন তার সর্বচ্চ চেষ্টা করে,ঠিক তখনি বিশ্বের বুকে জাগ্রহ হয় নতুন নতুন প্রাকৃতিক বিপর্য। আর সেই সকল বিপর্যয় কাটিয়ে উঠেতে না উঠতে চলে আসে আম্পানের মতো ঝড় জলচ্ছাস, আর করোনার মতো মহামারী।

আমরা বাঙ্গালী, সাড়ে ৪শ বছরের ইতিহাস বলে দেয় বাঙ্গালীরা কখনই মাথা নত করেনা। বিশ্বের উন্নত রাষ্ট্রের কর্ণধররা যখন করোনা মোকাবিলায় প্রায় পরাস্থ বাঙ্গালী কিন্তু সৃষ্টি কর্তার ওপর নিজেদের সোপে দেয় সহসা। এমন সাহসীকতা আর মৃত্যু পরোয়ানা নিয়ে বহিঃবিশ্বে কোন নজির নেই অন্য জাতির। বাংলাদেশের মতো একটি ছোট্র দেশে প্রায় ১৮ কোটি মানুষের বসবাস। যাদের ১০ থেকে ২০ শতাংশ মানুষের নেই নির্দিষ্ট সঠিক আবাসস্থল। সেই সকল ভাসমান মানুষদের নিয়ে মহামারী করোনাকে পরাজিত করে জয় ছিনিয়ে আনার জন্য কোয়ারেন্টাইন শব্দটি বড়ই বেমানান। তাইতো বিষাদ শব্দটি আবিস্কার যতার্থই বলে প্রতিয়মান।

যাদের জীবনটাই বিষাদে শুরু তারা কি করে বিষাদের ব্যাখ্যা ভুলবে। যে আনন্দে নেই প্রকৃত আনন্দ। নেই একত্রে নামাজ আদায়, নেই কোলাকুলি সেটা কখনই প্রকৃত আনন্দ হতে পারেনা। আবার আনন্দের চেয়ে যেখানে নিরানন্দর মাত্রা বেশি সেটাকে বিষাদই বলা শ্রেয়। আমি একজন আশাবাদি মানুষ। তাই আশায় বুক বেঁধে আছি সারা বিশ্বে যে মানুষগুলো করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতাল এবং বাড়িতে কাতরাচ্ছে, মহান সৃষ্টিকর্তা তাদের দ্রুত আরোগ্য করবেন। ফিরিয়ে দেবন তাদের পরিবারের মুখের হাসি। আর দ্রুত সময়েই নির্মল বাতাসে শান্ত করবেন এ বিশাক্ত পৃথিবী। দান করবেন সজীবতা। আমরা পাবো সোনালী অতীত পৃথিবী।

আর সেই পৃথিবী উপভোগ করেই প্রজন্মর পর প্রজন্ম নতুন পাঠ্য বইতে এই করোনার ভয়াবহতার কথা অধ্যায়ন করবে যুগের পর যুগ। রপ্ত করবে এই মহামারীর কারণ, প্রতিকার ও করণীয় কি?

তাই এ পৃথিবীর মানুষের নিকট একটাই দাবি নতুন পৃথিবী ফিরে পেতে, সজীবতা ভোগ করতে, মনুষত্ববোধ বজায় রাখতে নিজ ও অপরকে সুস্থ্য রাখতে আমরা একযোগে নিরব যুদ্ধে সামিল হই। সেই যুদ্ধের অস্ত্র একটাই সেটা হলো নিজ ঘরকে ব্যবহার করি। নিজে ঘরে থাকি। অপরকে নিরাপদ রাখি। তাহলে আগামি ঈদুল আযহাকে আমরা সবাই বিষাদতাকে সরিয়ে আনন্দের বন্যায় ভাসাতে পারবো এমনটা ভাবতেই পারি। যে যেখানে আছি সুস্থ্য থাকি ভালো থাকি সবার জন্য শুভ প্রত্যাশা রাখি। সবাইকে আবারো ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা।


আমিনুল ইসলাম
সাংবাদিক ও লেখক।