ঢাকা ০২:৫৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি :
সারাদেশের জেলা উপোজেলা পর্যায়ে দৈনিক স্বতঃকণ্ঠে সংবাদকর্মী নিয়োগ চলছে । আগ্রহী প্রার্থীগন জীবন বৃত্তান্ত ইমেইল করুন shatakantha.info@gmail.com // দৈনিক স্বতঃকণ্ঠ অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৭১১-৩৩৩৮১১, ০১৭৪৪-১২৪৮১৪

বিচার বিভাগের প্রধান অতি-রক্ষণশীল ইব্রাহিম রঈসি ইরানের নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত

বার্তাকক্ষ
  • প্রকাশিত সময় ০২:৪৫:১০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ জুন ২০২১
  • / 162

স্বতঃকণ্ঠ আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ ইরানের নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি ইব্রাহিম রঈসি বিচার বিভাগের প্রধান, একজন কট্টরপন্থী রাজনীতিক, যার মানবাধিকার লঙ্ঘনের নির্মম রেকর্ড রয়েছে। রঈসি দীর্ঘদিন ধরে পশ্চিমাদের সাথে যোগাযোগের বিরোধিতা করে আসছে এবং সুপ্রিম লিডার আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির ঘনিষ্ঠ মিত্র।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রহমানি ফজলি শনিবার ১৯ জুন ঘোষণা করেন, ৬০ বছর বয়সী রঈসি প্রায় ২কোটি ৯০ লক্ষ ব্যালটের মধ্যে প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ ভোট পেয়েছেন।

কিন্তু অনেক সংস্কারমনস্ক ইরানী এই নির্বাচনে অংশ নিতে অস্বীকার করে। এই নির্বাচনকে তারা পূর্বনির্ধারিত সিদ্ধান্ত বলে মনে করেন। সামগ্রিকভাবে ভোটদানের হার ছিল ৪৮.৮%- যা ১৯৭৯ সালে ইসলামিক প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পর সর্বনিম্ন।

ইরানের এক্টিভিস্টরা অভিযোগ করেছেন যে, দেশটির জনসাধারণের আহ্বান সত্ত্বেও কট্টরপন্থী আলেম শাসকদের ক্ষমতা আরও জড়িত করার লক্ষ্যে পরবর্তী রাষ্ট্রপতি পদের জন্য স্বাধীন নির্বাচন না করে বরং রাষ্ট্রপতি বাছাই করা হয়েছে।

আয়াতুল্লাহ খামিনির বারংবার ভোটদানের আহ্বান সত্ত্বেও ঐতিহাসিকভাবে কম ভোট পড়েছে। শুক্রবার ১৮ জুন তিনি জনসাধারণকে সতর্ক করে দেন যে, কম ভোট দানে “শত্রুদের চাপ বাড়াবে।”

নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট রঈসি ৪৫ দিনের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। তিনি ইরানের অষ্টম রাষ্ট্রপতি হবেন। ততদিন হাসান রুহানি ইরানের কার্যকরী রাষ্ট্রপতি হিসেবে থাকবেন। রুহানি শনিবার ১৯ জুন রঈসিকে অভিনন্দন জানান।

একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে এই নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হলো। পরবর্তী সরকারকে কোভিড-১৯ মহামারীর কারনে আরও তীব্র অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি হতে হবে এবং সাংবিধানিক সংস্কারের আহ্বান জানাতে হবে। তেহরান বর্তমানে কিভাবে ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তিকে পুনরুজ্জীবিত করা যায় সে সম্পর্কে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আলোচনায় আবদ্ধ রয়েছে।

রঈসির রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়া এই জল্পনাকে আরও বাড়িয়ে তুলবে যে, তাকে একদিন সুপ্রিম লিডার হিসেবে ৮১ বছর বয়সী খামেনির স্থলাভিষিক্ত করা হবে। ইরানের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় সর্বোচ্চ ক্ষমতা সুপ্রিম লিডারের, রাষ্ট্রপতির নয়, যিনি রাষ্ট্রের সমস্ত প্রধান বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন।

রঈসি মূলত একটি দুর্নীতি বিরোধী প্ল্যাটফর্মে প্রচারণা চালিয়েছিলেন -যা ভোটারদের হতাশা প্রশমিত করার জন্য একটি আপাত প্রচেষ্টা। যেখানে ইরানের দুরাবস্থার জন্য মার্কিন নিষেধাজ্ঞা এবং সরকারী দুর্নীতিকে দায়ী করা হয়েছিল।

তবে তার কর্মজীবনের বেশিরভাগ সময় তিনি ইরানের রাজনৈতিক বন্দীদের বিরুদ্ধে মামলা পরিচালনায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।

১৯৮৮ সালে রঈসি চার সদস্য বিশিষ্ট একটি মৃত্যুদন্ড কর্যকর দলের সদস্য ছিলেন। যারা প্রায় ৫ হাজার রাজনৈতিক বন্দীর গণমৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছেন বলে অভিযোগ করা হয়। ইরানের প্রধান বিচারপতি হিসেবে তার দুই বছর ভিন্নমত দমন এবং তীব্র মানবাধিকার লঙ্ঘনের সময় হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল শনিবার ১৯ জুন দাবি করেছে যে, এই মৃত্যুগুলোর জন্য মানবতা বিরোধী অপরাধের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে তদন্ত করা হোক।

রঈসি কখনো এই অভিযোগ সম্পর্কে কোন মন্তব্য করেননি, কিন্তু এটা ব্যাপকভাবে বিশ্বাস করা হয় যে, মৃত্যুদণ্ডের বিষয়ে প্রতিশোধ বা আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচারের ভয়ে তিনি খুব কমই ইরান ত্যাগ করেন।

রঈসি একজন পশ্চিমা বিদ্বেষী এবং বারবার ইরানের তথাকথিত “প্রতিরোধ অর্থনীতি” এর সুবিধার প্রশংসা করেছেন, যা পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার মুখে অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতার প্রচার করে।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে পরোক্ষ আলোচনার সময় তার নির্বাচন প্রভাবিত করার সম্ভাবনা নেই।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ শনিবার ১৯ জুন বলেছেন যে, তিনি আশা করেছিলেন যে, চুক্তির শর্তাবলীতে ফিরে আসার বিষয়ে আলোচনা আগস্টে রুহানির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে “সম্ভবত” শেষ হবে।

জারিফ বলেন, “ভিয়েনা আলোচনা ভালোভাবে চলছে এবং সম্ভবত আগস্ট মাসের আগেই একটি চুক্তি হবে, কিন্তু এখনও বাধা রয়েছে।”

যদি রঈসির কার্যকাল পর্যন্ত আলোচনা গড়ায়, তবে এর ফলাফল মূলত নির্ভর করবে আগত রাষ্ট্রপতি কাকে তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবে নিয়োগ করেন তার উপর।

২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত এই চুক্তির ফলে ইরানকে নিষেধাজ্ঞা ত্রাণের বিনিময়ে তার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি সীমাবদ্ধ করতে হয়েছিল। এবং এর জন্য মূলত জারিফকে দায়ী করা হয়।

অনেক বিশেষজ্ঞ এই নির্বাচনকে ইরানের বিরুদ্ধে প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সর্বোচ্চ চাপ প্রচারণার অন্যতম উপ-পণ্য হিসেবে দেখছেন। যেখানে তেহরান চুক্তির শর্তাবলী মেনে চললেও যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক চুক্তি থেকে বেরিয়ে যায়।

২০১৮ সাল থেকে, ট্রাম্প নিষেধাজ্ঞার একটি ধারা উন্মোচন করেন যা ইরানের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দেয় এবং কট্টরপন্থীদের উৎসাহিত করে। ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের সাথে জড়িত হওয়ার জন্য প্রেসিডেন্ট রুহানির মধ্যপন্থী সরকারকে কট্টরপন্থী আলেম শাসক শ্রেণী যে সুযোগ দিয়েছিল তার ক্ষুদ্র জানালাটি দ্রুত বন্ধ হতে শুরু করে।

ইরানের অতি-রক্ষণশীলরা বারবার বলেছিলেন যে, ট্রাম্প পশ্চিমাদের সম্পর্কে কট্টরপন্থীদের সংশয়কে সঠিক প্রমাণ করেছে। ফলে দেশটির সংস্কারবাদী শিবির দুর্বল হয় এবং অতি-রক্ষণশীলরা ২০২০ সালে একটি সংসদ নির্বাচনে জয়লাভ করে। রঈসির প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া মানে ইরানের অতি-রক্ষণশীলরা এখন সরকারের তিনটি শাখাই নিয়ন্ত্রণ করবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইরান পারমাণবিক চুক্তিতে ফিরে আসার বাইরে পশ্চিমাদের সাথে জড়িত হওয়ার সম্ভাবনা কম এবং রাশিয়া ও চীনের সাথে সম্পর্ক জোরদার করার চেষ্টা করবে।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন শনিবার ১৯ জুন রাইসিকে অভিনন্দন জানানো প্রথম বিশ্ব নেতাদের মধ্যে একজন ছিলেন।

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় প্রচার মাধ্যম রিয়া নোভোস্তি জানিয়েছে, “বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক গঠনমূলক সহযোগিতার আরও বিকাশের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিষয়ে মতবিনিময়ের আশা প্রকাশ করেন পুতিন।

চীন, তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার সহ অনেক দেশই রঈসিকে নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ায় অভিনন্দন জানিয়েছেন। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখনও নিরব ভূমিকায় রয়েছে।

সূত্রঃ সিএনএন

আরও পড়ুনঃ নতুন বৈশ্বিক ঝুঁকি মোকাবেলায় ন্যাটোতে তুরস্কের অবস্থান

বিচার বিভাগের প্রধান অতি-রক্ষণশীল ইব্রাহিম রঈসি ইরানের নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত

প্রকাশিত সময় ০২:৪৫:১০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ জুন ২০২১

স্বতঃকণ্ঠ আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ ইরানের নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি ইব্রাহিম রঈসি বিচার বিভাগের প্রধান, একজন কট্টরপন্থী রাজনীতিক, যার মানবাধিকার লঙ্ঘনের নির্মম রেকর্ড রয়েছে। রঈসি দীর্ঘদিন ধরে পশ্চিমাদের সাথে যোগাযোগের বিরোধিতা করে আসছে এবং সুপ্রিম লিডার আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির ঘনিষ্ঠ মিত্র।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রহমানি ফজলি শনিবার ১৯ জুন ঘোষণা করেন, ৬০ বছর বয়সী রঈসি প্রায় ২কোটি ৯০ লক্ষ ব্যালটের মধ্যে প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ ভোট পেয়েছেন।

কিন্তু অনেক সংস্কারমনস্ক ইরানী এই নির্বাচনে অংশ নিতে অস্বীকার করে। এই নির্বাচনকে তারা পূর্বনির্ধারিত সিদ্ধান্ত বলে মনে করেন। সামগ্রিকভাবে ভোটদানের হার ছিল ৪৮.৮%- যা ১৯৭৯ সালে ইসলামিক প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পর সর্বনিম্ন।

ইরানের এক্টিভিস্টরা অভিযোগ করেছেন যে, দেশটির জনসাধারণের আহ্বান সত্ত্বেও কট্টরপন্থী আলেম শাসকদের ক্ষমতা আরও জড়িত করার লক্ষ্যে পরবর্তী রাষ্ট্রপতি পদের জন্য স্বাধীন নির্বাচন না করে বরং রাষ্ট্রপতি বাছাই করা হয়েছে।

আয়াতুল্লাহ খামিনির বারংবার ভোটদানের আহ্বান সত্ত্বেও ঐতিহাসিকভাবে কম ভোট পড়েছে। শুক্রবার ১৮ জুন তিনি জনসাধারণকে সতর্ক করে দেন যে, কম ভোট দানে “শত্রুদের চাপ বাড়াবে।”

নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট রঈসি ৪৫ দিনের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। তিনি ইরানের অষ্টম রাষ্ট্রপতি হবেন। ততদিন হাসান রুহানি ইরানের কার্যকরী রাষ্ট্রপতি হিসেবে থাকবেন। রুহানি শনিবার ১৯ জুন রঈসিকে অভিনন্দন জানান।

একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে এই নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হলো। পরবর্তী সরকারকে কোভিড-১৯ মহামারীর কারনে আরও তীব্র অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি হতে হবে এবং সাংবিধানিক সংস্কারের আহ্বান জানাতে হবে। তেহরান বর্তমানে কিভাবে ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তিকে পুনরুজ্জীবিত করা যায় সে সম্পর্কে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আলোচনায় আবদ্ধ রয়েছে।

রঈসির রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়া এই জল্পনাকে আরও বাড়িয়ে তুলবে যে, তাকে একদিন সুপ্রিম লিডার হিসেবে ৮১ বছর বয়সী খামেনির স্থলাভিষিক্ত করা হবে। ইরানের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় সর্বোচ্চ ক্ষমতা সুপ্রিম লিডারের, রাষ্ট্রপতির নয়, যিনি রাষ্ট্রের সমস্ত প্রধান বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন।

রঈসি মূলত একটি দুর্নীতি বিরোধী প্ল্যাটফর্মে প্রচারণা চালিয়েছিলেন -যা ভোটারদের হতাশা প্রশমিত করার জন্য একটি আপাত প্রচেষ্টা। যেখানে ইরানের দুরাবস্থার জন্য মার্কিন নিষেধাজ্ঞা এবং সরকারী দুর্নীতিকে দায়ী করা হয়েছিল।

তবে তার কর্মজীবনের বেশিরভাগ সময় তিনি ইরানের রাজনৈতিক বন্দীদের বিরুদ্ধে মামলা পরিচালনায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।

১৯৮৮ সালে রঈসি চার সদস্য বিশিষ্ট একটি মৃত্যুদন্ড কর্যকর দলের সদস্য ছিলেন। যারা প্রায় ৫ হাজার রাজনৈতিক বন্দীর গণমৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছেন বলে অভিযোগ করা হয়। ইরানের প্রধান বিচারপতি হিসেবে তার দুই বছর ভিন্নমত দমন এবং তীব্র মানবাধিকার লঙ্ঘনের সময় হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল শনিবার ১৯ জুন দাবি করেছে যে, এই মৃত্যুগুলোর জন্য মানবতা বিরোধী অপরাধের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে তদন্ত করা হোক।

রঈসি কখনো এই অভিযোগ সম্পর্কে কোন মন্তব্য করেননি, কিন্তু এটা ব্যাপকভাবে বিশ্বাস করা হয় যে, মৃত্যুদণ্ডের বিষয়ে প্রতিশোধ বা আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচারের ভয়ে তিনি খুব কমই ইরান ত্যাগ করেন।

রঈসি একজন পশ্চিমা বিদ্বেষী এবং বারবার ইরানের তথাকথিত “প্রতিরোধ অর্থনীতি” এর সুবিধার প্রশংসা করেছেন, যা পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার মুখে অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতার প্রচার করে।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে পরোক্ষ আলোচনার সময় তার নির্বাচন প্রভাবিত করার সম্ভাবনা নেই।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ শনিবার ১৯ জুন বলেছেন যে, তিনি আশা করেছিলেন যে, চুক্তির শর্তাবলীতে ফিরে আসার বিষয়ে আলোচনা আগস্টে রুহানির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে “সম্ভবত” শেষ হবে।

জারিফ বলেন, “ভিয়েনা আলোচনা ভালোভাবে চলছে এবং সম্ভবত আগস্ট মাসের আগেই একটি চুক্তি হবে, কিন্তু এখনও বাধা রয়েছে।”

যদি রঈসির কার্যকাল পর্যন্ত আলোচনা গড়ায়, তবে এর ফলাফল মূলত নির্ভর করবে আগত রাষ্ট্রপতি কাকে তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবে নিয়োগ করেন তার উপর।

২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত এই চুক্তির ফলে ইরানকে নিষেধাজ্ঞা ত্রাণের বিনিময়ে তার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি সীমাবদ্ধ করতে হয়েছিল। এবং এর জন্য মূলত জারিফকে দায়ী করা হয়।

অনেক বিশেষজ্ঞ এই নির্বাচনকে ইরানের বিরুদ্ধে প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সর্বোচ্চ চাপ প্রচারণার অন্যতম উপ-পণ্য হিসেবে দেখছেন। যেখানে তেহরান চুক্তির শর্তাবলী মেনে চললেও যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক চুক্তি থেকে বেরিয়ে যায়।

২০১৮ সাল থেকে, ট্রাম্প নিষেধাজ্ঞার একটি ধারা উন্মোচন করেন যা ইরানের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দেয় এবং কট্টরপন্থীদের উৎসাহিত করে। ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের সাথে জড়িত হওয়ার জন্য প্রেসিডেন্ট রুহানির মধ্যপন্থী সরকারকে কট্টরপন্থী আলেম শাসক শ্রেণী যে সুযোগ দিয়েছিল তার ক্ষুদ্র জানালাটি দ্রুত বন্ধ হতে শুরু করে।

ইরানের অতি-রক্ষণশীলরা বারবার বলেছিলেন যে, ট্রাম্প পশ্চিমাদের সম্পর্কে কট্টরপন্থীদের সংশয়কে সঠিক প্রমাণ করেছে। ফলে দেশটির সংস্কারবাদী শিবির দুর্বল হয় এবং অতি-রক্ষণশীলরা ২০২০ সালে একটি সংসদ নির্বাচনে জয়লাভ করে। রঈসির প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া মানে ইরানের অতি-রক্ষণশীলরা এখন সরকারের তিনটি শাখাই নিয়ন্ত্রণ করবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইরান পারমাণবিক চুক্তিতে ফিরে আসার বাইরে পশ্চিমাদের সাথে জড়িত হওয়ার সম্ভাবনা কম এবং রাশিয়া ও চীনের সাথে সম্পর্ক জোরদার করার চেষ্টা করবে।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন শনিবার ১৯ জুন রাইসিকে অভিনন্দন জানানো প্রথম বিশ্ব নেতাদের মধ্যে একজন ছিলেন।

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় প্রচার মাধ্যম রিয়া নোভোস্তি জানিয়েছে, “বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক গঠনমূলক সহযোগিতার আরও বিকাশের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিষয়ে মতবিনিময়ের আশা প্রকাশ করেন পুতিন।

চীন, তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার সহ অনেক দেশই রঈসিকে নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ায় অভিনন্দন জানিয়েছেন। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখনও নিরব ভূমিকায় রয়েছে।

সূত্রঃ সিএনএন

আরও পড়ুনঃ নতুন বৈশ্বিক ঝুঁকি মোকাবেলায় ন্যাটোতে তুরস্কের অবস্থান