ঢাকা ০৩:৪৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি :
সারাদেশের জেলা উপোজেলা পর্যায়ে দৈনিক স্বতঃকণ্ঠে সংবাদকর্মী নিয়োগ চলছে । আগ্রহী প্রার্থীগন জীবন বৃত্তান্ত ইমেইল করুন shatakantha.info@gmail.com // দৈনিক স্বতঃকণ্ঠ অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৭১১-৩৩৩৮১১, ০১৭৪৪-১২৪৮১৪

নওগাঁ আধুনিক সদর হাসপাতালে নার্সদের অবহেলায় এক নবজাতকের মৃত্যু

বার্তাকক্ষ
  • প্রকাশিত সময় ০৮:৫৯:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ মার্চ ২০২০
  • / 158

সুব্রত কিশোর হালদার,নওগাঁঃ নওগাঁ সদর আধুনিক হাসপাতালে নার্সদের অবহেলায় এক নবজাত ছেলে শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার রাতে ওই নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটে। এ নিয়ে ওই শিশু স্বজন সহ অন্য রোগিদের স্বজনদেরও মধ্যেও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

মৃত ওই নবজাতকের বাবা জহুরুল ইসলাম ও মা বানু বেগম। তাদের গ্রামের বাড়ি জেলা সদর উপজেলার কির্ত্তীপুর ইউনিয়নের হরিরামপুর গ্রামে।

নবজাতকের পরিবার সুত্রে জানা গেছে, শিশুটি ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬ টায় নওগাঁ সদর আধুনিক হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। রাতে শিশুটির ফটোথেরাপী দেয়া হয়। ফটোথেরাপী শেষে মেশিনটি একটি নির্দিষ্ট সময় পর শরীর থেকে খুলে দিতে হয়। কিন্তু নির্দিষ্ট সময় পার হয়ে গেলেও ফটোথেরাপী না খোলায় শিশুটির শরীর পুড়ে

যেতে শুরু করে। এক পর্যায় শরীরের একাংশ কালো হতে থাকে। এই অবস্থা দেখে শিশুর পিতা জহুরুল ইসলাম, নানী রওশন আরাসহ অন্য রোগিদের অভিভাবকরা কর্তব্যরত নার্সদের ডাকাডাকি করতে থাকেন। কিন্তু নার্সরা তাদের ডিউটি কক্ষে ঘুমাতে থাকে। অনেক ডাকা ডাকি করার পর সাড়া দিয়ে ভিতর থেকে বলেন সকাল ৬টার আগে তারা আসবেন না। অবশেষে ফুটফুটে এই পুত্র সন্তানটির মৃত্যু হয়। এই পরিস্থিতি দেখে হাসপাতালে চিকিৎসারত অ্ন্যান্য রোগির স্বজনরাও ক্ষিপ্ত হয়ে পড়েন। তবে হাসপাতালের অন্য কর্মচারিরা এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, রাতে ওই ওয়ার্ডে রোজিনা ও তানিয়া নামের সিনিয়র ষ্টাফ নার্স দায়িত্বরত ছিলেন।

স্থানীয় ও রোগীর স্বজনরা অভিযোগ করে জানান, হাসপাতালের কিছু নার্স ও ষ্টাফরা রোগি ও রোগিদের অভিভাবকদের সাথে চরম দূর্বব্যবহার ও অসদ আচরণ করে থাকেন। উর্ধ্বতন মহলকে জানালেও তেমন কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় না। উল্টো নার্স ও ষ্টাফরা রোগি ও রোগিদের অভিভাবকদের সাথে আরো চরম দূর্বব্যবহার করে।

রোগির অভিভাবক আবুল কালেম ও নছিমুন বেগম সহ অন্যরা জানান, হাসপাতাল থেকে তেমন কোন ঔষধ দেওয়া হয় না। বেশিরভাগ ঔষধ বাহির থেকে কিনে আনতে হয়। ঔষধ চাইলে নার্স ও ষ্টাফরা খুব খারাপ ব্যবহার করেন।

জহুরুল ইসলাম জানান, রাতে কর্তব্যরত নার্সরা ডিউটি রুমে ঘুমাচ্ছিলেন। তাদের ডাকাডাকি করেও তারা রাত দেড়টা পর্যন্ত রুম থেকে বের হননি। এক পর্যায় লোকজন হট্টগোল শুরু করলে নার্সরা রুম থেকে রেব হন। তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন, তারা যদি শিশুটিকে চিকিৎসা সেবা দিতেন তাহলে শিশুটির মৃত্যু হতো না। দ্রুত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিও জানান তিনি।

নওগাঁ সদর হাসপাতালের আরএমও ডা: মুনির আলী আকন্দ জানান, হয়তবা অনেক সময় নার্স ও ষ্টাফরা রোগিদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে থাকেন। এ জন্যে বিভিন্ন সময় শাসনও করা হয়ে থাকে।

তিনি আরো জানান, শিশুটি অন্য একটি বে-সরকারি হাসপাতালে জন্ম নেয়। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় সদর হাসপাতালে আনা হয়। নার্সদের কর্তব্যে যদি অবহেলা থাকতো তাহলে রাত ২টার দিকে শিশু ওয়ার্ডের কর্তব্যরত চিকিৎসককে ডেকে এনে শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করতেন না।

সদর হাসপাতালের তত্ত্ববধায়ক ডা: মুমিনুল হক জানান, শিশু মৃত্যুর ঘটনাটি জানতে পেরেছি, আগামীকাল (শনিবার) এ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হবে। দায়িত্বে কারো অবহেলার বিষয়টি প্রমাণ হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

নওগাঁ সদর মডেল থানার ওসি সোহরাওয়ার্দি হোসেন জানান, ঘটনায় নিহত শিশুর বাবা মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

নওগাঁ আধুনিক সদর হাসপাতালে নার্সদের অবহেলায় এক নবজাতকের মৃত্যু

প্রকাশিত সময় ০৮:৫৯:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ মার্চ ২০২০

সুব্রত কিশোর হালদার,নওগাঁঃ নওগাঁ সদর আধুনিক হাসপাতালে নার্সদের অবহেলায় এক নবজাত ছেলে শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার রাতে ওই নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটে। এ নিয়ে ওই শিশু স্বজন সহ অন্য রোগিদের স্বজনদেরও মধ্যেও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

মৃত ওই নবজাতকের বাবা জহুরুল ইসলাম ও মা বানু বেগম। তাদের গ্রামের বাড়ি জেলা সদর উপজেলার কির্ত্তীপুর ইউনিয়নের হরিরামপুর গ্রামে।

নবজাতকের পরিবার সুত্রে জানা গেছে, শিশুটি ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬ টায় নওগাঁ সদর আধুনিক হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। রাতে শিশুটির ফটোথেরাপী দেয়া হয়। ফটোথেরাপী শেষে মেশিনটি একটি নির্দিষ্ট সময় পর শরীর থেকে খুলে দিতে হয়। কিন্তু নির্দিষ্ট সময় পার হয়ে গেলেও ফটোথেরাপী না খোলায় শিশুটির শরীর পুড়ে

যেতে শুরু করে। এক পর্যায় শরীরের একাংশ কালো হতে থাকে। এই অবস্থা দেখে শিশুর পিতা জহুরুল ইসলাম, নানী রওশন আরাসহ অন্য রোগিদের অভিভাবকরা কর্তব্যরত নার্সদের ডাকাডাকি করতে থাকেন। কিন্তু নার্সরা তাদের ডিউটি কক্ষে ঘুমাতে থাকে। অনেক ডাকা ডাকি করার পর সাড়া দিয়ে ভিতর থেকে বলেন সকাল ৬টার আগে তারা আসবেন না। অবশেষে ফুটফুটে এই পুত্র সন্তানটির মৃত্যু হয়। এই পরিস্থিতি দেখে হাসপাতালে চিকিৎসারত অ্ন্যান্য রোগির স্বজনরাও ক্ষিপ্ত হয়ে পড়েন। তবে হাসপাতালের অন্য কর্মচারিরা এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, রাতে ওই ওয়ার্ডে রোজিনা ও তানিয়া নামের সিনিয়র ষ্টাফ নার্স দায়িত্বরত ছিলেন।

স্থানীয় ও রোগীর স্বজনরা অভিযোগ করে জানান, হাসপাতালের কিছু নার্স ও ষ্টাফরা রোগি ও রোগিদের অভিভাবকদের সাথে চরম দূর্বব্যবহার ও অসদ আচরণ করে থাকেন। উর্ধ্বতন মহলকে জানালেও তেমন কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় না। উল্টো নার্স ও ষ্টাফরা রোগি ও রোগিদের অভিভাবকদের সাথে আরো চরম দূর্বব্যবহার করে।

রোগির অভিভাবক আবুল কালেম ও নছিমুন বেগম সহ অন্যরা জানান, হাসপাতাল থেকে তেমন কোন ঔষধ দেওয়া হয় না। বেশিরভাগ ঔষধ বাহির থেকে কিনে আনতে হয়। ঔষধ চাইলে নার্স ও ষ্টাফরা খুব খারাপ ব্যবহার করেন।

জহুরুল ইসলাম জানান, রাতে কর্তব্যরত নার্সরা ডিউটি রুমে ঘুমাচ্ছিলেন। তাদের ডাকাডাকি করেও তারা রাত দেড়টা পর্যন্ত রুম থেকে বের হননি। এক পর্যায় লোকজন হট্টগোল শুরু করলে নার্সরা রুম থেকে রেব হন। তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন, তারা যদি শিশুটিকে চিকিৎসা সেবা দিতেন তাহলে শিশুটির মৃত্যু হতো না। দ্রুত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিও জানান তিনি।

নওগাঁ সদর হাসপাতালের আরএমও ডা: মুনির আলী আকন্দ জানান, হয়তবা অনেক সময় নার্স ও ষ্টাফরা রোগিদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে থাকেন। এ জন্যে বিভিন্ন সময় শাসনও করা হয়ে থাকে।

তিনি আরো জানান, শিশুটি অন্য একটি বে-সরকারি হাসপাতালে জন্ম নেয়। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় সদর হাসপাতালে আনা হয়। নার্সদের কর্তব্যে যদি অবহেলা থাকতো তাহলে রাত ২টার দিকে শিশু ওয়ার্ডের কর্তব্যরত চিকিৎসককে ডেকে এনে শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করতেন না।

সদর হাসপাতালের তত্ত্ববধায়ক ডা: মুমিনুল হক জানান, শিশু মৃত্যুর ঘটনাটি জানতে পেরেছি, আগামীকাল (শনিবার) এ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হবে। দায়িত্বে কারো অবহেলার বিষয়টি প্রমাণ হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

নওগাঁ সদর মডেল থানার ওসি সোহরাওয়ার্দি হোসেন জানান, ঘটনায় নিহত শিশুর বাবা মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।