ঢাকা ০৬:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি :
সারাদেশের জেলা উপোজেলা পর্যায়ে দৈনিক স্বতঃকণ্ঠে সংবাদকর্মী নিয়োগ চলছে । আগ্রহী প্রার্থীগন জীবন বৃত্তান্ত ইমেইল করুন shatakantha.info@gmail.com // দৈনিক স্বতঃকণ্ঠ অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৭১১-৩৩৩৮১১, ০১৭৪৪-১২৪৮১৪

ঈদের ছুটিতে চলনবিলে তাড়াশে দর্শনার্থীদের ভিড়

বার্তাকক্ষ
  • প্রকাশিত সময় ০২:৫০:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ অগাস্ট ২০২০
  • / 64

মহসীন আলী, তাড়াশ প্রতিনিধিঃ ঈদের ছুটিতে ঈদ উৎসবে ভিড় জমেছে চলনবিলের তাড়াশে। শনিবার ঈদের দিন থেকে করোনাকে উপেক্ষা করে এ ভিড় জমলেও গতকাল পর্যন্ত আরও উৎসবমুখর পরিবেশ দেখা গেছে।

বিশেষ করে রাজধানীতে কচিকাঁচার হৈ হুলোড়ে মুখর ছিল তাড়াশ উপজেলার কুন্দইল ব্রীজ, মাগুড়া বিনোদ সড়ক, সিরাজগঞ্জ রোড বনপাড়া মহাসড়কের ৯নং ও ১০ নং ব্রীজসহ বিভিন্ন স্থান। এসবের পাশাপাশি অসংখ্য মানুষ ভিড় জমান নিকটবর্তী উল্লাপাড়া উপজেলার চেংটিয়া ভাঙ্গা ব্রীজ এলাকা। এ ছাড়া নাটোর জেলার গুরুদাসপুর উপজেলার বিলসা ব্রীজ ও স্বর্ন দ্বীপে ছিল লোকে লোকারণ্য। ঈদের দিনও বিনোদন প্রেমী মানুষের ব্যাপক সমাগম ছিল এসব বিনোদন স্থান গুলাতে। এ ছাড়াও বিনোদন পেতে সিংড়া উপজেলার চলনবিল পার্কে ও পেট্রবাংলার পয়েন্টের সড়কের পাশে অসংখ্য মানুষ ভিড় করেন।

কুন্দইল ব্রীজঃ ঈদের দিন থেকেই ভিড় জমতে থাকে তাড়াশ উপজেলার সগুনা ইউনিয়নের কুন্দইল ব্রীজে। সেখানে তিল ধারণের ঠাঁই থাকেনি। বিকাল না হতেই পরিবার-পরিজন, বন্ধু বান্ধব নিয়ে ছুটে আসেন বিনোদন প্রেমীরা। মেতে ওঠেন আনন্দ আড্ডা আর খুনসুটিতে। ঈদের তিন দিন পরেও এখানে দর্শনার্থীর আগমন ঘটে। অতিরিক্ত মানুষের চাপে তাড়াশ দিঘী সগুনা সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। মানুষের ভিড়ে হাঁটাচলার সুযোগ ছিল না। ঈদের দিনে দর্শনার্থীর সংখ্যা ছিল অসংখ্য।

মাগুড়া বিনোদ সড়কঃ এই সড়কে বেড়াতে আসা এক ব্যক্তি হুমায়ন হোসেন জানান, ঈদের দিন সকাল থেকেই এই সড়কে ভ্রমন পিয়াসূ মানুষ গুলো আসতে শুরু করেন। দুপুর নাগাদ এ সংখ্যা কয়েক শত ছাড়িয়ে যায়। তিনি বলেন, পবিত্র ঈদুল আযহার ছুটিতে বিনোদন প্রেমী মানুষের আকর্ষণে ও বিলের হিমেল হাওয়া উপভোগ করতেবই এখানে সকল শ্রেনির মানুষ আসে।

৯নং ও ১০নং ব্রীজঃ বাংলাদেশের মধ্যে নাম করা মহা সড়কের মধ্যে সিরাজগঞ্জ রোড টু বনপাড়া মহাসড়ক উল্লেখযোগ্য। এখানে প্রতি বছরই ঈদের দিন থেকে প্রচুর মানুষের সমাগম হয়। আর যেখানে সব মানুষের স্রোত তাই সেখানেই উপচে পরা ভীড় জমে। ঈদের দিন বিকাল থেকেই সেখানে ভিড় জমান হাজারও মানুষ। বিনোদন প্রেমীদের জন্য নতুন সাজে প্রস্তুত হয়ে আসে এই ব্রীজ গুলোতে। এখানে দাঁড়ালে ২ পাশের চলনবিলের হিমেল শীতল হাওয়ায় মন ভরিয়ে দেয়। মনে হয় প্রকৃতি ও পরিবেশের সাথে মিশে যায় সকল পেশার মানুষ।

তাড়াশ পৌর শিশু পার্কঃ এবারের বন্যায় তাড়াশ পৌর শিশু পার্কে পানি উঠায় তেমন কোন জনগনের ভীর দেখা যায় নাই। পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইফফাত জাহানের পরিকল্পনায় নতুন নতুন প্রতিকী স্থাপন করায় ও লাইটিং করায় এখানে মানুষের উপচে পরা ভীড় হওয়ার কথা থাকলেও বন্যার কারনে স্থান ডুবে যাওয়ায় ততটা ভীড় হয় নাই। তবুও এলাকাবাসী ছোট ছোট কচি কাচা ছেলে মেয়েদের নিয়ে এখানেও ঈদের উৎসব করেছেন।

এবারও ঈদ উপলক্ষে চলনবিলে বেশি পানি থাকায় ২ধরনের ব্যবসায় প্রচুর অর্থ আয় করেছেন মোটর সাইকেল গ্যারেজ মালিক ও নৌকার মাঝিরা। দুর দুরান্তের ভ্রমন পিয়াসু মানুষ গুলো মোটর সাইকেল যোগে এসে গ্যারেজে রাখছেন মোটর সাইকেল। পরে নৌকা ভাড়া করে চলনবিলের মধ্যে নৌকায় বক্স তুলে ঘুরে বেড়াচ্ছেন আর ঈদের আনন্দ করছেন। এছাড়াও ছোট ছোট দোকানীরা আয় করছেন আর উপভোগ করছেন ঈদের আনন্দ।

সরেজমিনে দেখা যায় শত শত মোটর সাইকেল রাস্তায় চলছে। প্রতিদিন আশপাশের উপজেলার মানুষ ছাড়াও দেশের অন্যান্য জেলার মানুষ গুলো আসছে। বেপোয়ারা ভাবে মোটর সাইকেল চলায় এখানে দূর্ঘটনার আশঙ্কাও রয়েছে। তবুও যেন আনন্দে আত্মহারা হয়ে চলছে সবাই একই ভাবে। প্রতি বছর এসব স্থানে বেড়াতে এসে দুর্ঘটনায় পরে প্রাণহানির ঘটনা ঘটে যেতে পারে।

কিন্তু এ বছর আগতদের নিরাপত্তায় উপজেলার সংশ্লিষ্ট ইউপি জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়নি কোন নিরাপত্তা। আগতদের জন্য বিভিন্ন স্থানে টানানো নাই সতর্কতামূলক সাইন বোর্ড। চলনবিলে কোনো ব্যক্তি ডুবে গেলে তাকে উদ্ধারে নেই জাফলংয়ে ব্যবস্থা ও প্রশিক্ষিত ডুবুরিসহ স্পিডবোট। প্রশাসনের এই উদ্যোগ না থাকার কারনে যে কোন দুর্ঘটনা বা প্রাণহানি হতে পারে।

এ ব্যাপারে সগুনা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহেল বাকি বলেন, ব্রীজ হওয়ার পর থেকে প্রতি বছরই এখানে ঈদের মৌসুমে প্রচুর মানুষের ভীর হয়। সন্ধ্যার পর এখানে কেউ যেন থাকতে না পারে সে জন্য গ্রাম পুলিশদের বলা হয়েছে। তারপরেও ব্রীজে স্যোলার লাইট দেওয়া হয়েছে নিরাপত্তার জন্য। এবারে পানি থাকায় নৌকা মাঝিদের বলা হয়েছে সন্ধ্যার পরে কোন নৌকায় যাত্রী তুলবেনা। আগামী বছর থেকে পুলিশ ও প্রশাসনের সহায়তা নেওয়া হবে।

ঈদের ছুটিতে চলনবিলে তাড়াশে দর্শনার্থীদের ভিড়

প্রকাশিত সময় ০২:৫০:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ অগাস্ট ২০২০

মহসীন আলী, তাড়াশ প্রতিনিধিঃ ঈদের ছুটিতে ঈদ উৎসবে ভিড় জমেছে চলনবিলের তাড়াশে। শনিবার ঈদের দিন থেকে করোনাকে উপেক্ষা করে এ ভিড় জমলেও গতকাল পর্যন্ত আরও উৎসবমুখর পরিবেশ দেখা গেছে।

বিশেষ করে রাজধানীতে কচিকাঁচার হৈ হুলোড়ে মুখর ছিল তাড়াশ উপজেলার কুন্দইল ব্রীজ, মাগুড়া বিনোদ সড়ক, সিরাজগঞ্জ রোড বনপাড়া মহাসড়কের ৯নং ও ১০ নং ব্রীজসহ বিভিন্ন স্থান। এসবের পাশাপাশি অসংখ্য মানুষ ভিড় জমান নিকটবর্তী উল্লাপাড়া উপজেলার চেংটিয়া ভাঙ্গা ব্রীজ এলাকা। এ ছাড়া নাটোর জেলার গুরুদাসপুর উপজেলার বিলসা ব্রীজ ও স্বর্ন দ্বীপে ছিল লোকে লোকারণ্য। ঈদের দিনও বিনোদন প্রেমী মানুষের ব্যাপক সমাগম ছিল এসব বিনোদন স্থান গুলাতে। এ ছাড়াও বিনোদন পেতে সিংড়া উপজেলার চলনবিল পার্কে ও পেট্রবাংলার পয়েন্টের সড়কের পাশে অসংখ্য মানুষ ভিড় করেন।

কুন্দইল ব্রীজঃ ঈদের দিন থেকেই ভিড় জমতে থাকে তাড়াশ উপজেলার সগুনা ইউনিয়নের কুন্দইল ব্রীজে। সেখানে তিল ধারণের ঠাঁই থাকেনি। বিকাল না হতেই পরিবার-পরিজন, বন্ধু বান্ধব নিয়ে ছুটে আসেন বিনোদন প্রেমীরা। মেতে ওঠেন আনন্দ আড্ডা আর খুনসুটিতে। ঈদের তিন দিন পরেও এখানে দর্শনার্থীর আগমন ঘটে। অতিরিক্ত মানুষের চাপে তাড়াশ দিঘী সগুনা সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। মানুষের ভিড়ে হাঁটাচলার সুযোগ ছিল না। ঈদের দিনে দর্শনার্থীর সংখ্যা ছিল অসংখ্য।

মাগুড়া বিনোদ সড়কঃ এই সড়কে বেড়াতে আসা এক ব্যক্তি হুমায়ন হোসেন জানান, ঈদের দিন সকাল থেকেই এই সড়কে ভ্রমন পিয়াসূ মানুষ গুলো আসতে শুরু করেন। দুপুর নাগাদ এ সংখ্যা কয়েক শত ছাড়িয়ে যায়। তিনি বলেন, পবিত্র ঈদুল আযহার ছুটিতে বিনোদন প্রেমী মানুষের আকর্ষণে ও বিলের হিমেল হাওয়া উপভোগ করতেবই এখানে সকল শ্রেনির মানুষ আসে।

৯নং ও ১০নং ব্রীজঃ বাংলাদেশের মধ্যে নাম করা মহা সড়কের মধ্যে সিরাজগঞ্জ রোড টু বনপাড়া মহাসড়ক উল্লেখযোগ্য। এখানে প্রতি বছরই ঈদের দিন থেকে প্রচুর মানুষের সমাগম হয়। আর যেখানে সব মানুষের স্রোত তাই সেখানেই উপচে পরা ভীড় জমে। ঈদের দিন বিকাল থেকেই সেখানে ভিড় জমান হাজারও মানুষ। বিনোদন প্রেমীদের জন্য নতুন সাজে প্রস্তুত হয়ে আসে এই ব্রীজ গুলোতে। এখানে দাঁড়ালে ২ পাশের চলনবিলের হিমেল শীতল হাওয়ায় মন ভরিয়ে দেয়। মনে হয় প্রকৃতি ও পরিবেশের সাথে মিশে যায় সকল পেশার মানুষ।

তাড়াশ পৌর শিশু পার্কঃ এবারের বন্যায় তাড়াশ পৌর শিশু পার্কে পানি উঠায় তেমন কোন জনগনের ভীর দেখা যায় নাই। পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইফফাত জাহানের পরিকল্পনায় নতুন নতুন প্রতিকী স্থাপন করায় ও লাইটিং করায় এখানে মানুষের উপচে পরা ভীড় হওয়ার কথা থাকলেও বন্যার কারনে স্থান ডুবে যাওয়ায় ততটা ভীড় হয় নাই। তবুও এলাকাবাসী ছোট ছোট কচি কাচা ছেলে মেয়েদের নিয়ে এখানেও ঈদের উৎসব করেছেন।

এবারও ঈদ উপলক্ষে চলনবিলে বেশি পানি থাকায় ২ধরনের ব্যবসায় প্রচুর অর্থ আয় করেছেন মোটর সাইকেল গ্যারেজ মালিক ও নৌকার মাঝিরা। দুর দুরান্তের ভ্রমন পিয়াসু মানুষ গুলো মোটর সাইকেল যোগে এসে গ্যারেজে রাখছেন মোটর সাইকেল। পরে নৌকা ভাড়া করে চলনবিলের মধ্যে নৌকায় বক্স তুলে ঘুরে বেড়াচ্ছেন আর ঈদের আনন্দ করছেন। এছাড়াও ছোট ছোট দোকানীরা আয় করছেন আর উপভোগ করছেন ঈদের আনন্দ।

সরেজমিনে দেখা যায় শত শত মোটর সাইকেল রাস্তায় চলছে। প্রতিদিন আশপাশের উপজেলার মানুষ ছাড়াও দেশের অন্যান্য জেলার মানুষ গুলো আসছে। বেপোয়ারা ভাবে মোটর সাইকেল চলায় এখানে দূর্ঘটনার আশঙ্কাও রয়েছে। তবুও যেন আনন্দে আত্মহারা হয়ে চলছে সবাই একই ভাবে। প্রতি বছর এসব স্থানে বেড়াতে এসে দুর্ঘটনায় পরে প্রাণহানির ঘটনা ঘটে যেতে পারে।

কিন্তু এ বছর আগতদের নিরাপত্তায় উপজেলার সংশ্লিষ্ট ইউপি জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়নি কোন নিরাপত্তা। আগতদের জন্য বিভিন্ন স্থানে টানানো নাই সতর্কতামূলক সাইন বোর্ড। চলনবিলে কোনো ব্যক্তি ডুবে গেলে তাকে উদ্ধারে নেই জাফলংয়ে ব্যবস্থা ও প্রশিক্ষিত ডুবুরিসহ স্পিডবোট। প্রশাসনের এই উদ্যোগ না থাকার কারনে যে কোন দুর্ঘটনা বা প্রাণহানি হতে পারে।

এ ব্যাপারে সগুনা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহেল বাকি বলেন, ব্রীজ হওয়ার পর থেকে প্রতি বছরই এখানে ঈদের মৌসুমে প্রচুর মানুষের ভীর হয়। সন্ধ্যার পর এখানে কেউ যেন থাকতে না পারে সে জন্য গ্রাম পুলিশদের বলা হয়েছে। তারপরেও ব্রীজে স্যোলার লাইট দেওয়া হয়েছে নিরাপত্তার জন্য। এবারে পানি থাকায় নৌকা মাঝিদের বলা হয়েছে সন্ধ্যার পরে কোন নৌকায় যাত্রী তুলবেনা। আগামী বছর থেকে পুলিশ ও প্রশাসনের সহায়তা নেওয়া হবে।