ঢাকা ০৬:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি :
সারাদেশের জেলা উপোজেলা পর্যায়ে দৈনিক স্বতঃকণ্ঠে সংবাদকর্মী নিয়োগ চলছে । আগ্রহী প্রার্থীগন জীবন বৃত্তান্ত ইমেইল করুন shatakantha.info@gmail.com // দৈনিক স্বতঃকণ্ঠ অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৭১১-৩৩৩৮১১, ০১৭৪৪-১২৪৮১৪

শাহজাদপুরে কাপড়ের হাটে কেনা-বেচা না থাকায় তাঁতীদের মাথায় হাত

বার্তাকক্ষ
  • প্রকাশিত সময় ০৮:৫৬:৩১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ এপ্রিল ২০২১
  • / 152

শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ লকডাউনে ক্রেতার অভাবে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার পৌর সদরের দ্বারিয়াপুর বাজারে অবস্থিত দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম তাঁত কাপড়ের হাটে গত বুধবার দিনভর নেই ক্রেতা।

অনেক তাঁতী দিনভর কাপড় নিয়ে বিক্রির আশায় বসে থেকেও বিক্রি করতে পারেননি। তাঁতিদের মাথায় হাত হতাশ হয়ে খালি হাতে বাড়ি ফিরেছেন।

লকডাউনে রং সূতার ও তাঁত সামগ্রীর দাম বৃদ্ধি পেলেও তাঁতের তৈরী শাড়ি লুঙ্গী গামছার দাম বাড়েনি। বলে এ বিষয়ে মন্তব্য দেন তাঁত কাপড় ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন, গোলাম মোস্তফা, শাহীন আলম, শহিদুল ইসলাম, সাজু আহমেদ, রমজান আলী, ইদ্রিস আলী, আলমগীর হোসেন, আব্দুল আজিজ, কামাল শেখ, নজরুল ইসলাম।

পরিবহণ বন্ধ থাকায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হাটে আসতে পারেনি দূরের বেপারিরা। এর ফলে হাটে বেচা-বিক্রি ছিলনা বললেই চলে।  অনেকেই দিনভর বসে থেকে বউনি পর্যন্ত করতে পারেনি।

তাঁতিরা আরো বলেন, আর কয়েকদিন পর পহেলা বৈশাখ। এ বৈশাখ উপলক্ষে প্রতি বছর এ হাটে অন্তত ২শ’ থেকে ৩শ’ কোটি টাকার বৈশাখী কাপড় বিক্রি হয়। অথচ এ বছর লকডাউনের কারণে লক্ষ লক্ষ টাকার বৈশাখী শাড়ি, লুঙ্গী, গামছা বিক্রি হয়নি।

তাঁতিরা জানান, আসছে রমজানে ইদুল ফিতর উপলক্ষে এখন থেকেই বেচা-বিক্রি শুরু হয়। লকডাউনের কারণে এখনও তা শুরু করা যায়নি। ফলে তাঁতীরা তাদেও উৎপাদিত তাঁত পণ্য নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে।

তারা আরো বলেন, অধিকাংশ তাঁতী চলে ব্যাংক অথবা এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে। বেচা-বিক্রি না থাকায় কিস্তি দিতে না পেরে অনেকেই বাড়িঘর ফেলে পালিয়ে ফিরছেন। অনেক তাঁতী ঋণের দায়ে এরই মধ্যে তাদের তাঁত কারখানা বন্ধ করে দিয়েছেন। শাহজাদপুরেরতাঁত কুটির শিল্প ধ্বংসের মুখে পড়েছে।

এ বিষয়ে নকশী ঘর কাপড়ের দোকান মালিক আলতাব হেসেন জানান, প্রথম দফা লকডাইনে তাদেও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এরপর মোটা অংকের ঋণ নিয়ে তিনি নতুন ভাবে ব্যবসা শুরু করেছেন। প্রায় ১০ লাখ টাকার অর্ডারও পেয়ে ছিলেন। কিন্তু দ্বিতীয় দফা লকডাউনে তার সমস্ত অর্ডার বাতিল হয়ে গেছে। ফলে ব্যবসায়ীরা চরম লোকসানের মুখে পড়েছেন।

এ বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলা তাঁতবস্ত্র ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রফিবুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আলম বিশ্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল আলম সাজু, প্রচার সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, সরকার এই করোনায় সব সেক্টরে প্রনদনা দিলেও বৃহৎ তাঁত কুটির শিল্প খাতে প্রনদনা দেয়নি।

প্রথম দফা করোনা মহামারী কালে তাঁতীরা ঋণের দায়ে পথে বসে গেছে। গত ২ মাস চেষ্টার ফলে নতুন করে ঋণ নিয়ে মাথা তুলে সবাই দাড়ানোর চেষ্টা করছে। এরমধ্যে দ্বিতীয় দফা লকডাউনে তারা চরম লোকসানে পড়েছে।

পহেলা বৈশাখ ও রমজানের বেচা-বিক্রি বন্ধ হয়ে গেছে। দেশের সকল তাঁতীদের রক্ষায় সব ধরণের ঋণ খাজনা গ্যাস বিল, বিদ্যুৎ বিল খাজনা সহ নগদ প্রণোদনা দানের দাবী জানান তারা।

ব্যবসায়ীরা আরও জানান, পহেলা বৈশাখের আগমণ উপলক্ষে ভারতে প্রচুর পরিমাণ শাড়ী যেত। অথচ, সেটি বন্ধ হয়ে গেছে। ভারতে কাপড় না যাওয়াতে এই তাঁত শিল্পের উপর চরম আঘাত এসে পরেছে।

তাছাড়া তাঁতিদের কিস্তি অন্যদিকে, ব্যবসায়ী মন্দা সব মিলিয়ে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের তাঁতিরা কাপড় বিক্রি না করতে পেরে মহা বিপাকে পড়েছে।

আরও পড়ুনঃ সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে ৩ নারী ছিনতাইকারী গ্রেফতার

শাহজাদপুরে কাপড়ের হাটে কেনা-বেচা না থাকায় তাঁতীদের মাথায় হাত

প্রকাশিত সময় ০৮:৫৬:৩১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ এপ্রিল ২০২১

শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ লকডাউনে ক্রেতার অভাবে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার পৌর সদরের দ্বারিয়াপুর বাজারে অবস্থিত দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম তাঁত কাপড়ের হাটে গত বুধবার দিনভর নেই ক্রেতা।

অনেক তাঁতী দিনভর কাপড় নিয়ে বিক্রির আশায় বসে থেকেও বিক্রি করতে পারেননি। তাঁতিদের মাথায় হাত হতাশ হয়ে খালি হাতে বাড়ি ফিরেছেন।

লকডাউনে রং সূতার ও তাঁত সামগ্রীর দাম বৃদ্ধি পেলেও তাঁতের তৈরী শাড়ি লুঙ্গী গামছার দাম বাড়েনি। বলে এ বিষয়ে মন্তব্য দেন তাঁত কাপড় ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন, গোলাম মোস্তফা, শাহীন আলম, শহিদুল ইসলাম, সাজু আহমেদ, রমজান আলী, ইদ্রিস আলী, আলমগীর হোসেন, আব্দুল আজিজ, কামাল শেখ, নজরুল ইসলাম।

পরিবহণ বন্ধ থাকায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হাটে আসতে পারেনি দূরের বেপারিরা। এর ফলে হাটে বেচা-বিক্রি ছিলনা বললেই চলে।  অনেকেই দিনভর বসে থেকে বউনি পর্যন্ত করতে পারেনি।

তাঁতিরা আরো বলেন, আর কয়েকদিন পর পহেলা বৈশাখ। এ বৈশাখ উপলক্ষে প্রতি বছর এ হাটে অন্তত ২শ’ থেকে ৩শ’ কোটি টাকার বৈশাখী কাপড় বিক্রি হয়। অথচ এ বছর লকডাউনের কারণে লক্ষ লক্ষ টাকার বৈশাখী শাড়ি, লুঙ্গী, গামছা বিক্রি হয়নি।

তাঁতিরা জানান, আসছে রমজানে ইদুল ফিতর উপলক্ষে এখন থেকেই বেচা-বিক্রি শুরু হয়। লকডাউনের কারণে এখনও তা শুরু করা যায়নি। ফলে তাঁতীরা তাদেও উৎপাদিত তাঁত পণ্য নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে।

তারা আরো বলেন, অধিকাংশ তাঁতী চলে ব্যাংক অথবা এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে। বেচা-বিক্রি না থাকায় কিস্তি দিতে না পেরে অনেকেই বাড়িঘর ফেলে পালিয়ে ফিরছেন। অনেক তাঁতী ঋণের দায়ে এরই মধ্যে তাদের তাঁত কারখানা বন্ধ করে দিয়েছেন। শাহজাদপুরেরতাঁত কুটির শিল্প ধ্বংসের মুখে পড়েছে।

এ বিষয়ে নকশী ঘর কাপড়ের দোকান মালিক আলতাব হেসেন জানান, প্রথম দফা লকডাইনে তাদেও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এরপর মোটা অংকের ঋণ নিয়ে তিনি নতুন ভাবে ব্যবসা শুরু করেছেন। প্রায় ১০ লাখ টাকার অর্ডারও পেয়ে ছিলেন। কিন্তু দ্বিতীয় দফা লকডাউনে তার সমস্ত অর্ডার বাতিল হয়ে গেছে। ফলে ব্যবসায়ীরা চরম লোকসানের মুখে পড়েছেন।

এ বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলা তাঁতবস্ত্র ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রফিবুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আলম বিশ্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল আলম সাজু, প্রচার সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, সরকার এই করোনায় সব সেক্টরে প্রনদনা দিলেও বৃহৎ তাঁত কুটির শিল্প খাতে প্রনদনা দেয়নি।

প্রথম দফা করোনা মহামারী কালে তাঁতীরা ঋণের দায়ে পথে বসে গেছে। গত ২ মাস চেষ্টার ফলে নতুন করে ঋণ নিয়ে মাথা তুলে সবাই দাড়ানোর চেষ্টা করছে। এরমধ্যে দ্বিতীয় দফা লকডাউনে তারা চরম লোকসানে পড়েছে।

পহেলা বৈশাখ ও রমজানের বেচা-বিক্রি বন্ধ হয়ে গেছে। দেশের সকল তাঁতীদের রক্ষায় সব ধরণের ঋণ খাজনা গ্যাস বিল, বিদ্যুৎ বিল খাজনা সহ নগদ প্রণোদনা দানের দাবী জানান তারা।

ব্যবসায়ীরা আরও জানান, পহেলা বৈশাখের আগমণ উপলক্ষে ভারতে প্রচুর পরিমাণ শাড়ী যেত। অথচ, সেটি বন্ধ হয়ে গেছে। ভারতে কাপড় না যাওয়াতে এই তাঁত শিল্পের উপর চরম আঘাত এসে পরেছে।

তাছাড়া তাঁতিদের কিস্তি অন্যদিকে, ব্যবসায়ী মন্দা সব মিলিয়ে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের তাঁতিরা কাপড় বিক্রি না করতে পেরে মহা বিপাকে পড়েছে।

আরও পড়ুনঃ সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে ৩ নারী ছিনতাইকারী গ্রেফতার