ঢাকা ০৫:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি :
সারাদেশের জেলা উপোজেলা পর্যায়ে দৈনিক স্বতঃকণ্ঠে সংবাদকর্মী নিয়োগ চলছে । আগ্রহী প্রার্থীগন জীবন বৃত্তান্ত ইমেইল করুন shatakantha.info@gmail.com // দৈনিক স্বতঃকণ্ঠ অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৭১১-৩৩৩৮১১, ০১৭৪৪-১২৪৮১৪

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর পোতাজিয়া হাসপাতালে ভর্তি পিতৃপরিচয়হীন এক শিশু

বার্তাকক্ষ
  • প্রকাশিত সময় ১১:৫৭:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ অগাস্ট ২০২২
  • / 73
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর পোতাজিয়া হাসপাতালে ভর্তি পিতৃপরিচয়হীন এক শিশু।

শাহজাদপুর(সিরাজগঞ্জ)প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১০:৫৬ অপরাহ্ন, আগষ্ট ৩০, ২০২২


সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার জামিরতা গ্রামের মোছঃ পিয়ারা খাতুন এর মেয়ে সাদিযা খাতুনের বয়স ৮ মাস চলছে। মায়ের কোলে আস্তে আস্তে বেড়ে ওঠা শিশুটির এখনও মেলেনি পিতার পরিচয়।

শিশুটির মা পিয়ারা খাতুন তার সন্তানের পিতার পরিচয় উদ্ধার করতে লড়াই করতে আদালতে দ্বারস্থ হয়েছে। এরই মধ্যে বাচ্চাটি হঠাৎ অসুস্থ
হয়ে পড়েছে।

প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য স্থানীয় এক সাংবাদিকের সহযোগিতায় ভর্তি করিয়েছেন শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। এদিকে শিশুটির মা
পেয়ারা খাতুন একেবারে হতদরিদ্র হওয়ায় তার পক্ষে বাচ্চাটির চিকিৎসা বাবদ সামান্য খরচও বহন করা অত্যন্ত কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে ।

গত শনিবার বিকেলে পোতাজিযা হাসপাতালে শিশুটিকে ভর্তি করার পর ঔষধসহ আনুষঙ্গিক জিনিসপত্রের জন্য প্রয়োজন হয়ে পরে অর্থ। কিন্তু সেই অর্থ কোনভাবেই পেয়ারা খাতুনের জোগাড় করা সম্ভব হচ্ছিল না।

রবিবার বিকেলে বিষয়টি জানতে পেরে মানবিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন পোতাজিয়া ইউনিযন পরিষদের চেয়াররম্যান আলমগীর জাহান বাচ্চু।বিষয়টি নিয়ে কথা হয় পোতাজিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর জাহান বাচ্চুর সাথে। তিনি জানান, নিষ্পাপ বাচ্চাটি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছে।

এদিকে এখনো পিতার পরিচয় পায়নি শিশুটি। পৃথিবীর মাটি স্পর্শ করেই বাচ্চাটি রূঢ় বাস্তবতার মুখোমুখি। অপরদিকে তার মা-ও একেবারেই দরিদ্র
অসহায়। তাই মানবিক দায়িত্ববোধ থেকেই বাচ্চাটিকে সহযোগিতা করা দরকার। সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত সব ধরনের সহযোগিতায় শিশুটির পাশে থাকারও আশ্বাস দেন তিনি।

এদিকে শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ শারমিন আলম বলেন, বাচ্চাটি ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসার পর বর্তমান একটু উন্নতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ২১ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে দুপুর তিনটায় ফুটফুটে কন্যা
সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন পিয়ারা খাতুন ।

কিন্তু সন্তানকে স্বীকৃতি দিতে রাজি নন বাবা। এ নিয়ে গত বছরের নভেম্বরে শাহজাদপুর কোর্টে বাচ্চার মা বাচ্চাটির পিতার পরিচয় আদায়ের জন্য একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলার বিবরণ ও সিআইডি সূত্রে জানা যায়, বেশ কয়েক বছর আগে শাহজাদপুরের জামিরতা গ্রামের মৃত সোরমান মন্ডলের মেয়ে পিয়ারা খাতুনের (৩২) চৌহালীর চর ধীতপুরে বিয়ে হয়।

কিন্তু সন্তান জন্মদানের পর সে সংসার আর করা হয়নি পিয়ারার। পারিবারিক কারণে তালাক পান পিয়ারা। বছর খানেক আগে একই গ্রামের
হাফিজুল মোবাইলে পিয়ারার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। এক পর্যায়ে চৌহালীর খাস কাউলিয়া কাজি অফিসের গিয়ে বিয়েও করেন তারা।

পরে পোষাক কারখানায় কাজ করার জন্য দু’জনে পাড়ি জমান ঢাকার সাভারে। এরমধ্যে পিয়ারা অন্ত:সত্ত্তা হয়ে পড়ে। বেশ কিছুদিন পর হাফিজুল বাচ্চা প্রসবের জন্য পিয়ারাকে মায়ের কাছে পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু এরপরই বেঁকে বসে হাফিজুল।

বিয়ে গর্ভের সন্তান সব কিছুই অস্বীকার করে সে। উপায়ান্তর না দেখে পিয়ারা চৌহালীর খাস কাউলিয়া কাজীর কাছে যায়। কিন্তু কাজী বিয়ের বিষয় অস্বীকার করে।

পরে গত বছরের নভেম্বর মাসে শাহজাদপুর আদালতে বিয়ে এবং অনাগত সন্তানের পিতৃত্ব দাবি করে একটি মামলা দায়ের করেন পিয়ারা। সেই মামলার চারজন আসামীর মধ্যে জামিনে রয়েছে তিনজন এবং শিশুটির বাবা হাফিজুল কারাবন্দী রয়েছেন।

 


 আরও পড়ুনঃ

 আরও পড়ুনঃ


সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর পোতাজিয়া হাসপাতালে ভর্তি পিতৃপরিচয়হীন এক শিশু

প্রকাশিত সময় ১১:৫৭:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ অগাস্ট ২০২২
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর পোতাজিয়া হাসপাতালে ভর্তি পিতৃপরিচয়হীন এক শিশু।

শাহজাদপুর(সিরাজগঞ্জ)প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১০:৫৬ অপরাহ্ন, আগষ্ট ৩০, ২০২২


সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার জামিরতা গ্রামের মোছঃ পিয়ারা খাতুন এর মেয়ে সাদিযা খাতুনের বয়স ৮ মাস চলছে। মায়ের কোলে আস্তে আস্তে বেড়ে ওঠা শিশুটির এখনও মেলেনি পিতার পরিচয়।

শিশুটির মা পিয়ারা খাতুন তার সন্তানের পিতার পরিচয় উদ্ধার করতে লড়াই করতে আদালতে দ্বারস্থ হয়েছে। এরই মধ্যে বাচ্চাটি হঠাৎ অসুস্থ
হয়ে পড়েছে।

প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য স্থানীয় এক সাংবাদিকের সহযোগিতায় ভর্তি করিয়েছেন শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। এদিকে শিশুটির মা
পেয়ারা খাতুন একেবারে হতদরিদ্র হওয়ায় তার পক্ষে বাচ্চাটির চিকিৎসা বাবদ সামান্য খরচও বহন করা অত্যন্ত কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে ।

গত শনিবার বিকেলে পোতাজিযা হাসপাতালে শিশুটিকে ভর্তি করার পর ঔষধসহ আনুষঙ্গিক জিনিসপত্রের জন্য প্রয়োজন হয়ে পরে অর্থ। কিন্তু সেই অর্থ কোনভাবেই পেয়ারা খাতুনের জোগাড় করা সম্ভব হচ্ছিল না।

রবিবার বিকেলে বিষয়টি জানতে পেরে মানবিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন পোতাজিয়া ইউনিযন পরিষদের চেয়াররম্যান আলমগীর জাহান বাচ্চু।বিষয়টি নিয়ে কথা হয় পোতাজিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর জাহান বাচ্চুর সাথে। তিনি জানান, নিষ্পাপ বাচ্চাটি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছে।

এদিকে এখনো পিতার পরিচয় পায়নি শিশুটি। পৃথিবীর মাটি স্পর্শ করেই বাচ্চাটি রূঢ় বাস্তবতার মুখোমুখি। অপরদিকে তার মা-ও একেবারেই দরিদ্র
অসহায়। তাই মানবিক দায়িত্ববোধ থেকেই বাচ্চাটিকে সহযোগিতা করা দরকার। সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত সব ধরনের সহযোগিতায় শিশুটির পাশে থাকারও আশ্বাস দেন তিনি।

এদিকে শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ শারমিন আলম বলেন, বাচ্চাটি ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসার পর বর্তমান একটু উন্নতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ২১ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে দুপুর তিনটায় ফুটফুটে কন্যা
সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন পিয়ারা খাতুন ।

কিন্তু সন্তানকে স্বীকৃতি দিতে রাজি নন বাবা। এ নিয়ে গত বছরের নভেম্বরে শাহজাদপুর কোর্টে বাচ্চার মা বাচ্চাটির পিতার পরিচয় আদায়ের জন্য একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলার বিবরণ ও সিআইডি সূত্রে জানা যায়, বেশ কয়েক বছর আগে শাহজাদপুরের জামিরতা গ্রামের মৃত সোরমান মন্ডলের মেয়ে পিয়ারা খাতুনের (৩২) চৌহালীর চর ধীতপুরে বিয়ে হয়।

কিন্তু সন্তান জন্মদানের পর সে সংসার আর করা হয়নি পিয়ারার। পারিবারিক কারণে তালাক পান পিয়ারা। বছর খানেক আগে একই গ্রামের
হাফিজুল মোবাইলে পিয়ারার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। এক পর্যায়ে চৌহালীর খাস কাউলিয়া কাজি অফিসের গিয়ে বিয়েও করেন তারা।

পরে পোষাক কারখানায় কাজ করার জন্য দু’জনে পাড়ি জমান ঢাকার সাভারে। এরমধ্যে পিয়ারা অন্ত:সত্ত্তা হয়ে পড়ে। বেশ কিছুদিন পর হাফিজুল বাচ্চা প্রসবের জন্য পিয়ারাকে মায়ের কাছে পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু এরপরই বেঁকে বসে হাফিজুল।

বিয়ে গর্ভের সন্তান সব কিছুই অস্বীকার করে সে। উপায়ান্তর না দেখে পিয়ারা চৌহালীর খাস কাউলিয়া কাজীর কাছে যায়। কিন্তু কাজী বিয়ের বিষয় অস্বীকার করে।

পরে গত বছরের নভেম্বর মাসে শাহজাদপুর আদালতে বিয়ে এবং অনাগত সন্তানের পিতৃত্ব দাবি করে একটি মামলা দায়ের করেন পিয়ারা। সেই মামলার চারজন আসামীর মধ্যে জামিনে রয়েছে তিনজন এবং শিশুটির বাবা হাফিজুল কারাবন্দী রয়েছেন।

 


 আরও পড়ুনঃ

 আরও পড়ুনঃ