ঢাকা ০৫:১২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি :
সারাদেশের জেলা উপোজেলা পর্যায়ে দৈনিক স্বতঃকণ্ঠে সংবাদকর্মী নিয়োগ চলছে । আগ্রহী প্রার্থীগন জীবন বৃত্তান্ত ইমেইল করুন shatakantha.info@gmail.com // দৈনিক স্বতঃকণ্ঠ অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৭১১-৩৩৩৮১১, ০১৭৪৪-১২৪৮১৪

কুমারখালীতে আগুনে পুড়ে ২০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি

কুমারখালী (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি:
  • প্রকাশিত সময় ০৩:০৮:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ মার্চ ২০২৩
  • / 82

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে অগ্নিকান্ডে ২০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। -স্বতঃকণ্ঠ


সকালেও সবকিছু ঠিকঠাক ছিল। সারিসারি ঘরবাড়ি। ঘরের ভিতরে টিভি, ফ্রিজ, চালডাল, মালামাল। গোয়ালঘরে গরু। সাজানো সংসার। কিন্তু বাজার থেকে ছুটে এসে দেখি শুধু কালো কালো ছাই। দুই ঘণ্টার আগুনে তাঁর সবকিছু কেড়ে নিয়েছে। রোববার (৫ মার্চ) দুপুরে কথা গুলো বলছিলেন ছাল্লেক মিয়া ( ৪০)।

তিনি কুষ্টিয়ার কুমারখালীর পান্টি ইউনিয়নের রামদিয়া গ্রামের মনোয়ার হোসেন ওরফে মনো সাধুর ছেলে। তিনি পেশায় ভ্যানচালক। সকাল ১০ টার দিকে তাঁর বাড়িতে ভয়াবহ অগ্নি দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ছাল্লেখসহ অন্তত ১০ জনের বসবাড়ি, রান্না ও গোয়ালঘরসহ যাবতীয় মালামাল পুড়ে ভস্মিভূত হয়ে গেছে। এ ঘটনায় প্রায় আড়াই লক্ষাধিক টাকা দুইটি গরু (ষাঁড়) পুড়ে আহত হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তিরা দাবি করছেন, গোয়ালঘরের ছাই থেকে এ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রায় ২০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক ধারণা করা হচ্ছে। গরু দুইটিকে নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থরা হলেন ওই গ্রামের মনোয়ার হোসেন, তাঁর ছেলে হাফিজুল, আবু তালেব, শরিফুল ও ছাল্লেক, মৃত কেসমত আলীর ছেলে শাজাহান, তরিকুল ও বিপুল, তাইজাল শেখের ছেলে মাসুদ এবং মনোয়ার হোসেনের ছেলে আব্দুস সালাম। তাঁরা পেশায় কৃষক, ভ্যানচালক ও বেসরকারি চাকুরীজীবী।

পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও জানায়, প্রথমে মনোয়ার হোসেনের ছেলে হাফিজুলের গোয়ালঘরে আগুন লাগে। এরপর ১০ জনের বসতবাড়ি, গোয়াল ও রান্নাঘরে আগুন লেগে যায়। খবর পেয়ে স্থানীয় জনতা ও শৈলকূপা ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিট প্রায় দুই ঘন্টা চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণ করে। ততক্ষণে আটজনের বসতঘর, রান্না ও গোয়ালঘর এবং ঘরে থাকা সকল মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এছাড়াও আরো দুইজনের বসতঘরের আংশিক ক্ষতি হয়েছে এবং দুইটি গরু পুড়ে আহত হয়েছে।

বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে সরেজমিন দেখা গেছে, রামদিয়া গ্রামের বাতাসে আগুনে পোড়া গন্ধ ভাসছে। ক্ষতিগ্রস্থরা সবকিছু হারিয়ে ভেঙে পড়েছেন। প্রতিবেশি ও স্বজনরা তাঁদের শান্তনা দিচ্ছেন। আটজনের বসতঘর, রান্না ও গোয়ালঘর এবং যাবতীয় মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আহত একটি গরু পরিবহনে অন্যত্র নেওয়া হচ্ছে। এসময় কথা হয় ক্ষতিগ্রস্থ বয়োজ্যেষ্ঠ কৃষক মনোয়ার হোসেনের (৮০) সাথে। তিনি বলেন, তাঁর আর কিছুই নেই। সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। তাঁর ভাষ্য, গোয়ালঘরের ছাই তাঁদের সর্বশান্ত করেছে। ধান, চাল, টিভি ফ্রিজ, আসবাবপত্রসহ তাঁর প্রায় ৫ লক্ষাধিক টাকা ক্ষতি হয়েছে।

মনোয়ার হোসেনের ভ্যানচালক ছেলে হাফিজুল বলেন, তাঁর গোয়ালঘরের ছাই থেকেই আগুন লাগে। প্রথমে তাঁর গোয়াল, তারপর একে ১০ টি বাড়িতে আগুন লেগে। এতে তাঁর দুইটি গরু, বসত, রান্না ও গোয়ালঘরসহ মালামাল পুড়ে প্রায় ৬ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

মৃত কেসমত আলীর ছেলে বিপুল হোসেন বলেন, তিনি একটি ভেটেরিনারি কোম্পানিতে চাকরি করেন। আগুনে তাঁর ঘরে থাকা কোম্পানি ওষুধ, নগদ টাকা, আসবাবপত্র পুড়ে ছাই করে দিয়েছে। তাঁর প্রায় ৭ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী পান্টি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সামিউর রহমান সুমন মিয়া বলেন, তাঁর বাড়ি পাশেই এ অগ্নিকান্ডের ঘটনা। শতশত গ্রামবাসী ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা প্রায় দুইঘণ্টা চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণ করেছেন। ততক্ষণে ৮-১০ টা পরিবারের সকল কিছু পুড়ে প্রায় ২০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতির ধারণা করা হচ্ছে।

শৈলকূপা ফায়ার সার্ভিসের পরিদর্শক সঞ্জয় কুমার বলেন, খবর পেয়ে তাঁরা প্রায় দুই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ করেছেন। প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে বিদ্যুতের শর্ট সার্কিট বা গোয়ালঘরের ছাইয়ের আগুন থেকে আগুনের সুত্রপাত হয়েছে। তদন্ত সাপক্ষে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ পরে বলা যাবে।

এই রকম আরও টপিক

কুমারখালীতে আগুনে পুড়ে ২০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি

প্রকাশিত সময় ০৩:০৮:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ মার্চ ২০২৩

সকালেও সবকিছু ঠিকঠাক ছিল। সারিসারি ঘরবাড়ি। ঘরের ভিতরে টিভি, ফ্রিজ, চালডাল, মালামাল। গোয়ালঘরে গরু। সাজানো সংসার। কিন্তু বাজার থেকে ছুটে এসে দেখি শুধু কালো কালো ছাই। দুই ঘণ্টার আগুনে তাঁর সবকিছু কেড়ে নিয়েছে। রোববার (৫ মার্চ) দুপুরে কথা গুলো বলছিলেন ছাল্লেক মিয়া ( ৪০)।

তিনি কুষ্টিয়ার কুমারখালীর পান্টি ইউনিয়নের রামদিয়া গ্রামের মনোয়ার হোসেন ওরফে মনো সাধুর ছেলে। তিনি পেশায় ভ্যানচালক। সকাল ১০ টার দিকে তাঁর বাড়িতে ভয়াবহ অগ্নি দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ছাল্লেখসহ অন্তত ১০ জনের বসবাড়ি, রান্না ও গোয়ালঘরসহ যাবতীয় মালামাল পুড়ে ভস্মিভূত হয়ে গেছে। এ ঘটনায় প্রায় আড়াই লক্ষাধিক টাকা দুইটি গরু (ষাঁড়) পুড়ে আহত হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তিরা দাবি করছেন, গোয়ালঘরের ছাই থেকে এ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রায় ২০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক ধারণা করা হচ্ছে। গরু দুইটিকে নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থরা হলেন ওই গ্রামের মনোয়ার হোসেন, তাঁর ছেলে হাফিজুল, আবু তালেব, শরিফুল ও ছাল্লেক, মৃত কেসমত আলীর ছেলে শাজাহান, তরিকুল ও বিপুল, তাইজাল শেখের ছেলে মাসুদ এবং মনোয়ার হোসেনের ছেলে আব্দুস সালাম। তাঁরা পেশায় কৃষক, ভ্যানচালক ও বেসরকারি চাকুরীজীবী।

পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও জানায়, প্রথমে মনোয়ার হোসেনের ছেলে হাফিজুলের গোয়ালঘরে আগুন লাগে। এরপর ১০ জনের বসতবাড়ি, গোয়াল ও রান্নাঘরে আগুন লেগে যায়। খবর পেয়ে স্থানীয় জনতা ও শৈলকূপা ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিট প্রায় দুই ঘন্টা চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণ করে। ততক্ষণে আটজনের বসতঘর, রান্না ও গোয়ালঘর এবং ঘরে থাকা সকল মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এছাড়াও আরো দুইজনের বসতঘরের আংশিক ক্ষতি হয়েছে এবং দুইটি গরু পুড়ে আহত হয়েছে।

বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে সরেজমিন দেখা গেছে, রামদিয়া গ্রামের বাতাসে আগুনে পোড়া গন্ধ ভাসছে। ক্ষতিগ্রস্থরা সবকিছু হারিয়ে ভেঙে পড়েছেন। প্রতিবেশি ও স্বজনরা তাঁদের শান্তনা দিচ্ছেন। আটজনের বসতঘর, রান্না ও গোয়ালঘর এবং যাবতীয় মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আহত একটি গরু পরিবহনে অন্যত্র নেওয়া হচ্ছে। এসময় কথা হয় ক্ষতিগ্রস্থ বয়োজ্যেষ্ঠ কৃষক মনোয়ার হোসেনের (৮০) সাথে। তিনি বলেন, তাঁর আর কিছুই নেই। সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। তাঁর ভাষ্য, গোয়ালঘরের ছাই তাঁদের সর্বশান্ত করেছে। ধান, চাল, টিভি ফ্রিজ, আসবাবপত্রসহ তাঁর প্রায় ৫ লক্ষাধিক টাকা ক্ষতি হয়েছে।

মনোয়ার হোসেনের ভ্যানচালক ছেলে হাফিজুল বলেন, তাঁর গোয়ালঘরের ছাই থেকেই আগুন লাগে। প্রথমে তাঁর গোয়াল, তারপর একে ১০ টি বাড়িতে আগুন লেগে। এতে তাঁর দুইটি গরু, বসত, রান্না ও গোয়ালঘরসহ মালামাল পুড়ে প্রায় ৬ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

মৃত কেসমত আলীর ছেলে বিপুল হোসেন বলেন, তিনি একটি ভেটেরিনারি কোম্পানিতে চাকরি করেন। আগুনে তাঁর ঘরে থাকা কোম্পানি ওষুধ, নগদ টাকা, আসবাবপত্র পুড়ে ছাই করে দিয়েছে। তাঁর প্রায় ৭ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী পান্টি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সামিউর রহমান সুমন মিয়া বলেন, তাঁর বাড়ি পাশেই এ অগ্নিকান্ডের ঘটনা। শতশত গ্রামবাসী ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা প্রায় দুইঘণ্টা চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণ করেছেন। ততক্ষণে ৮-১০ টা পরিবারের সকল কিছু পুড়ে প্রায় ২০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতির ধারণা করা হচ্ছে।

শৈলকূপা ফায়ার সার্ভিসের পরিদর্শক সঞ্জয় কুমার বলেন, খবর পেয়ে তাঁরা প্রায় দুই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ করেছেন। প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে বিদ্যুতের শর্ট সার্কিট বা গোয়ালঘরের ছাইয়ের আগুন থেকে আগুনের সুত্রপাত হয়েছে। তদন্ত সাপক্ষে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ পরে বলা যাবে।