ঢাকা ০২:১৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি :
সারাদেশের জেলা উপোজেলা পর্যায়ে দৈনিক স্বতঃকণ্ঠে সংবাদকর্মী নিয়োগ চলছে । আগ্রহী প্রার্থীগন জীবন বৃত্তান্ত ইমেইল করুন shatakantha.info@gmail.com // দৈনিক স্বতঃকণ্ঠ অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৭১১-৩৩৩৮১১, ০১৭৪৪-১২৪৮১৪

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ভারপ্রাপ্ত ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ

তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত সময় ০৮:৪০:২৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ মার্চ ২০২৪
  • / 40



সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ভারপ্রাপ্ত ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সরকারি বিনামূল্যের গরু ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে বিতরণের অভিযোগ উঠেছে।

ঘটনাটি ঘটেছে, তাড়াশ উপজেলার ৬ নং তাড়াশ সদর ইউনিয়নের শ্রীকৃষ্ণপুর গ্রামে।

অভিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত ইউপি চেয়ারম্যান হলেন, মোঃ আকতার হোসেন। গত ১৫ জুলাই ২০২৩ তারিখে তাড়াশ সদর ইউনিয়নের নির্বাচিত চেয়ারম্যান মোঃ বাবুল শেখ পদত্যাগ করে পৌরসভার নির্বাচনে অংশগ্রহনের পর থেকে প্যানেল চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন এই আকতার হোসেন।

অভিযোগ উঠেছে, ওই গ্রামের নারায়ন চন্দ্রের মেয়ে কল্পনা বালাকে তাড়াশ সদর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মোঃ আকতার হোসেন নগদ ১০ হাজার টাকা ঘুষের বিনিময়ে বিনামুল্যে সরকারের দেওয়া সমতল ভুমিতে বসবাসরত অনগ্রসর ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক ও জীবন মানোন্নয়নের লক্ষ্যে সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় তাড়াশ পশু হাসপাতাল থেকে বিনামূল্যের বকনা বাছুর নিয়ে দেন।

এছাড়াও ঘুষের টাকার বিষয়ে কাউকে না বলতেও নিষেধ করেন তিনি। শুধু কল্পনা বালাই নয় বিনামুল্যে সরকারের দেওয়া গরু পেতে তার মত তাড়াশ সদর ইউনিয়নের আরো অনেকেই গুনতে হয়েছে মোটা অংকের টাকা। এখন মুখ খুলতে শুরু করছেন ভুক্তভোগীরা।

ভুক্তভোগী কল্পনা বালা বলেন, বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আকতার হোসেন আমাদের বাড়িতে এসে গরু দেবে বলে ১০ হাজার টাকা দাবী করেন। না দিলে গরু পাওয়া যাবেনা বলে জানান। আমরা অভাবী মানুষ বড় একটা গরু পেলে উপকার হবে ভেবে আমার কানের গহনার দাম ১৫ হাজার টাকা তা ৮ হাজার টাকায় বিক্রি করে আকতার হোসেনের হাতে দেই। গরু পাইছি তবে এই গরু অনেক ছোট। তা বিক্রি করলে ১০ হাজারের বেশি হবে বলে মনে হয় না।

এ ছাড়াও বোয়ালীয় গ্রামের নকুল কর্মকারের স্ত্রী তপ রানীর নামে বকনা বাছুর উত্তোলন দেখানো হলেও সে সম্পর্কে কিছুই জানেন না এই তপ রানী।

তপ রানীর ছেলে ভরত কর্মকার জানান, আমার মায়ের নামে গরু দেওয়া হয়েছে তালিকায় দেখলাম। কিন্তু আমরা কোন গরু পাইনি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যক্তি জানান, বিভিন্ন ভুয়া নাম দিয়ে গরু তুলে বাড়িতে খামার করেছেন প্যানেল চেয়ারম্যান আকতার হোসেন।

অভিযোগ রয়েছে, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দ্বায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই বড্ড বেয়াপরোয়া হয়ে ওঠেন তিনি। মেতে ওঠেন ঘুষ বানিজ্যে। সরকারের দেওয়া বিনামুল্যে প্রতিবন্ধী, বিধবা, বয়স্ক, মাতৃত্বকালীন ভাতার কার্ড টাকার বিনিময়ে বিক্রি শুরু করেন।

আকতার হোসেনের দূর্নীতি ও সেচ্ছাচারীতার বিরুদ্ধে এখন মুখ খুলতে শুরু করেছেন সংশিষ্ট ইউনিয়নের নির্বাচিত ইউপি সদস্যগনও।

তাড়াশ সদর ইউনিয়নের ৪ ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ আব্দুস সালাম বলেন, অবৈধ্যভাবে প্যানেল চেয়ারম্যান হয়ে পরিষদকে সে দূর্নীতির স্বর্গে পরিণত করেছেন। প্রতিবাদ করলেই সেই ইউপি সদস্যকে ইউনিয়নের কোন প্রজেক্টে (উন্নয়ন) কাজ দেওয়া হয় না। যে ইউপি সদস্য কাজের আগেই তাকে ঘুষ দেবে তাকে তিনি বিভিন্ন প্রকল্পের সভাপতি বানিয়ে কাজ করান। আমি এর প্রতিবাদ করায় ইউনিয়নের সকল সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে রেখেছে।

এ বিষয়ে ৬ নং তাড়াশ সদর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল (ভারপ্রাপ্ত) চেয়ারম্যান মোঃ আকতার হোসেনের কাছে ফোনে অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে তাকে বার বার একাধিক নম্বর থেকে ফোন দেওয়ার পরেও তিনি ফোন রিসিভ করনেনি।

তাড়াশ উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা-বলেন, গরু বিতরনের তালিকা চেয়ারম্যানগণ করে দেন। আমরা শুধু বিতরণ করেছি। তালিকায় নাম দিতে যদি কোন চেয়ারম্যান টাকা নেন তাহলে দুঃখজনক।

সমতল ভুমিতে বসবাসরত অনগ্রসর ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক ও জীবন মানোন্নয়নের লক্ষ্যে সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্প পরিচালক ডাঃ অসীম কুমার বলেন, এই প্রকল্পে অনিয়ম করার কোন সুয়োগ নেই। এরকম ঘটনা ঘটলে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুইচিং মং মারমা বলেন, সরকারের দেওয়া বিনামুল্যের গরু দিয়ে অর্থ আদায়ের কোন সুযোগ নেই। এমন অভিযোগ পেলে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে। আমি বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখবো।

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ভারপ্রাপ্ত ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ

প্রকাশিত সময় ০৮:৪০:২৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ মার্চ ২০২৪



সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ভারপ্রাপ্ত ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সরকারি বিনামূল্যের গরু ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে বিতরণের অভিযোগ উঠেছে।

ঘটনাটি ঘটেছে, তাড়াশ উপজেলার ৬ নং তাড়াশ সদর ইউনিয়নের শ্রীকৃষ্ণপুর গ্রামে।

অভিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত ইউপি চেয়ারম্যান হলেন, মোঃ আকতার হোসেন। গত ১৫ জুলাই ২০২৩ তারিখে তাড়াশ সদর ইউনিয়নের নির্বাচিত চেয়ারম্যান মোঃ বাবুল শেখ পদত্যাগ করে পৌরসভার নির্বাচনে অংশগ্রহনের পর থেকে প্যানেল চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন এই আকতার হোসেন।

অভিযোগ উঠেছে, ওই গ্রামের নারায়ন চন্দ্রের মেয়ে কল্পনা বালাকে তাড়াশ সদর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মোঃ আকতার হোসেন নগদ ১০ হাজার টাকা ঘুষের বিনিময়ে বিনামুল্যে সরকারের দেওয়া সমতল ভুমিতে বসবাসরত অনগ্রসর ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক ও জীবন মানোন্নয়নের লক্ষ্যে সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় তাড়াশ পশু হাসপাতাল থেকে বিনামূল্যের বকনা বাছুর নিয়ে দেন।

এছাড়াও ঘুষের টাকার বিষয়ে কাউকে না বলতেও নিষেধ করেন তিনি। শুধু কল্পনা বালাই নয় বিনামুল্যে সরকারের দেওয়া গরু পেতে তার মত তাড়াশ সদর ইউনিয়নের আরো অনেকেই গুনতে হয়েছে মোটা অংকের টাকা। এখন মুখ খুলতে শুরু করছেন ভুক্তভোগীরা।

ভুক্তভোগী কল্পনা বালা বলেন, বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আকতার হোসেন আমাদের বাড়িতে এসে গরু দেবে বলে ১০ হাজার টাকা দাবী করেন। না দিলে গরু পাওয়া যাবেনা বলে জানান। আমরা অভাবী মানুষ বড় একটা গরু পেলে উপকার হবে ভেবে আমার কানের গহনার দাম ১৫ হাজার টাকা তা ৮ হাজার টাকায় বিক্রি করে আকতার হোসেনের হাতে দেই। গরু পাইছি তবে এই গরু অনেক ছোট। তা বিক্রি করলে ১০ হাজারের বেশি হবে বলে মনে হয় না।

এ ছাড়াও বোয়ালীয় গ্রামের নকুল কর্মকারের স্ত্রী তপ রানীর নামে বকনা বাছুর উত্তোলন দেখানো হলেও সে সম্পর্কে কিছুই জানেন না এই তপ রানী।

তপ রানীর ছেলে ভরত কর্মকার জানান, আমার মায়ের নামে গরু দেওয়া হয়েছে তালিকায় দেখলাম। কিন্তু আমরা কোন গরু পাইনি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যক্তি জানান, বিভিন্ন ভুয়া নাম দিয়ে গরু তুলে বাড়িতে খামার করেছেন প্যানেল চেয়ারম্যান আকতার হোসেন।

অভিযোগ রয়েছে, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দ্বায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই বড্ড বেয়াপরোয়া হয়ে ওঠেন তিনি। মেতে ওঠেন ঘুষ বানিজ্যে। সরকারের দেওয়া বিনামুল্যে প্রতিবন্ধী, বিধবা, বয়স্ক, মাতৃত্বকালীন ভাতার কার্ড টাকার বিনিময়ে বিক্রি শুরু করেন।

আকতার হোসেনের দূর্নীতি ও সেচ্ছাচারীতার বিরুদ্ধে এখন মুখ খুলতে শুরু করেছেন সংশিষ্ট ইউনিয়নের নির্বাচিত ইউপি সদস্যগনও।

তাড়াশ সদর ইউনিয়নের ৪ ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ আব্দুস সালাম বলেন, অবৈধ্যভাবে প্যানেল চেয়ারম্যান হয়ে পরিষদকে সে দূর্নীতির স্বর্গে পরিণত করেছেন। প্রতিবাদ করলেই সেই ইউপি সদস্যকে ইউনিয়নের কোন প্রজেক্টে (উন্নয়ন) কাজ দেওয়া হয় না। যে ইউপি সদস্য কাজের আগেই তাকে ঘুষ দেবে তাকে তিনি বিভিন্ন প্রকল্পের সভাপতি বানিয়ে কাজ করান। আমি এর প্রতিবাদ করায় ইউনিয়নের সকল সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে রেখেছে।

এ বিষয়ে ৬ নং তাড়াশ সদর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল (ভারপ্রাপ্ত) চেয়ারম্যান মোঃ আকতার হোসেনের কাছে ফোনে অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে তাকে বার বার একাধিক নম্বর থেকে ফোন দেওয়ার পরেও তিনি ফোন রিসিভ করনেনি।

তাড়াশ উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা-বলেন, গরু বিতরনের তালিকা চেয়ারম্যানগণ করে দেন। আমরা শুধু বিতরণ করেছি। তালিকায় নাম দিতে যদি কোন চেয়ারম্যান টাকা নেন তাহলে দুঃখজনক।

সমতল ভুমিতে বসবাসরত অনগ্রসর ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক ও জীবন মানোন্নয়নের লক্ষ্যে সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্প পরিচালক ডাঃ অসীম কুমার বলেন, এই প্রকল্পে অনিয়ম করার কোন সুয়োগ নেই। এরকম ঘটনা ঘটলে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুইচিং মং মারমা বলেন, সরকারের দেওয়া বিনামুল্যের গরু দিয়ে অর্থ আদায়ের কোন সুযোগ নেই। এমন অভিযোগ পেলে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে। আমি বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখবো।