লালপুরে প্রতারণার শিকার চাষীরা
ব্রাদার্স সীড কোম্পানীর এক প্যাকেটে ৩ রকমের ধানবীজ

- প্রকাশিত সময় ০৬:০২:৪২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৫
- / 20
নাটোরের লালপুরে ভিত্তি-৮৭ জাতের ধান রোপন করে প্রতারণার শিকার হয়েছেন চাষীরা। এক প্যাকেটের ধানবীজ থেকে মাঠে অন্তত: তিন রকমের ধান গাছের দেখা মেলেছে।
এর ফলে একইভাবে বেড়ে না ওঠা ও শীষ না হওয়ার কারণে ফলন বিপর্যয়ে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন ধানচাষীরা।
উপজেলার কুজিপুকুর গ্রামের ১০ জন কৃষকের ২৫ বিঘা জমিতে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
এব্যাপারে রবিবার ১২ অক্টোবর দুপুরে ক্ষতিগ্রস্থ চাষীরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর সংশ্লিষ্ট বীজ কোম্পানীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
ক্ষতিগ্রস্থ ধানচাষীরা জানান, তারা উপজেলার দুয়ারিয়া মোড়ের সুমাইয়া ট্রেডার্স নামের একটি বীজ ভান্ডার থেকে চুয়াডাঙ্গার ব্রাদার্স সীড কোম্পানীর ভিত্তি- ৮৭ জাতের ১৮ প্যাকেট (৩৬ কেজি) ধানবীজ ক্রয় করে বীজ তলায় চারা তৈরী করেন। সেই ধানের চারা তারা নিজ নিজ জমিতে রোপন করেন। ধান গাছ বড় হওয়ার পর বর্তমানে জমিতে অন্তত: তিনটি জাতের ধান দেখা যাচ্ছে। যার কোনটির শীষের ধান পাকা শুরু করেছে, কোনটিতে শীষ বের হচ্ছে আবার কোনটিতে এখনো শীষই দেখা দেয়নি।
চাষীরা বলেন, ‘এ অবস্থায় ধান কাটা নিয়েও সমস্যায় পড়তে হবে। এছাড়া ধানের অর্ধেক ফলনও হবে না। আমরা মোট ২৫ বিঘা জমিতে এই ধান রোপন করেছি।’
কুজিপুকুর গ্রামের ধানচাষী বাবুল আক্তার, আব্দুল আলিম ও মাহাবুল বিশ্বাস বলেন ‘বেশী ফলনের প্রলোভনে পড়ে চুয়াডাঙ্গার ব্রাদার্স সীড কোম্পানীর ভিত্তি-৮৭ জাতের ধান বীজ ক্রয় করে নিজে ও গ্রামের অন্যান্য কৃষকরা ভাগাভাগি করে নিয়ে খেতে রোপন করেছিলাম। বর্তমানে ধানের অবস্থা দেখে আমরা চরম হতাশায় ভুগছি।’
তারা জানান, ব্রাদার্স সীড কোম্পানীর মার্কেটিং অফিসার খালেদ মাসুদ ও উপজেলা সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা ধান খেত পরিদর্শন করেছেন। মার্কেটিং অফিসার খালেদ মাসুদ ধান খেতে দাাঁড়িয়ে ক্ষতিপুরণ দেওয়ার আশ্বাস দিলেও পরে মুঠোফোনে ক্ষতিপুরণ হিসেবে পুনরায় ১৮ প্যাকেট ধান বীজ বিনামূল্যে দিতে চেয়েছেন।
এব্যাপারে ব্রাদার্স সীড কোম্পানীর স্থানীয় ডিলার সুমাইয়া ট্রেডার্স এর মালিক ওবাইদুল ইসলাম বলেন, চলতি মৌসুমে ধান বীজে কিছুটা ভাজ (মিশেল) দেখা দিয়েছে। তবে কুজিপুকুর গ্রামের চাষীরা ছাড়া আর কেউ অভিযোগ করেনি।
ব্রাদার্স সীড কোম্পানীর মার্কেটিং অফিসার খালেদ মাসুদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘বিষয়টি কোম্পানীকে জানিয়েছি। কোম্পানী ক্ষতিপুরণ হিসেবে ক্ষতিগ্রস্থ চাষীদেরকে ফ্রিতে ধান বীজ প্রদান করেবে।’
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা উজ্জল কুমার জানান, ‘অভিযুক্ত কোম্পানীর ভিত্তি-৮৭ জাতের ধান খেতে বীনা-১৭ ও হুল যুক্ত আমন ধান দেখা গেছে। এসব ধানে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে শীষ গজায় ও পাকে।’
এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মেহেদী হাসান বলেন, ধানচাষীদের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।