ঢাকা ০৮:৩২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৫, ২২ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি :
সারাদেশের জেলা উপোজেলা পর্যায়ে দৈনিক স্বতঃকণ্ঠে সংবাদকর্মী নিয়োগ চলছে । আগ্রহী প্রার্থীগন জীবন বৃত্তান্ত ইমেইল করুন shatakantha.info@gmail.com // দৈনিক স্বতঃকণ্ঠ অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৭১১-৩৩৩৮১১, ০১৭৪৪-১২৪৮১৪

লালপুরে ডাক্তার ও ঔষধ ছাড়া মাত্র দু’জন কর্মী দিয়ে চলে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র

লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত সময় ০৪:৩২:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / 90



একজন পরিবার কল্যাণ পরিদর্শীকা ও একজন মিডওয়াইফ দিয়ে চলছে নাটোরের লালপুর উপজেলার আব্দুলপুরে ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র।

১০ মাস ধরে ঔষধ সরবরাহ নেই, ডাক্তার নেই ২ যুগ ধরে। দুই জন দায় নার্সের পোস্টিং থাকলে প্রেষনে অনত্র দায়িত্ব পালন করছেন তারা।

উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ থেকে জানা যায়, ১৯৬৫ সালে আব্দুলপুর মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রটি প্রতিষ্ঠিত। ১০ শয্যা বিশিষ্ট এই চিকিৎসা কেন্দ্রে সকল বয়সের মা ও শুন্য থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত বয়সের শিশুদের চিকিৎসা ব্যবস্থা চালু আছে। তবে প্রায় দুই যুগের বেশী সময় ধরে এখানে কোন ডাক্তারের পোস্টিং নেই। একজন পরিবার কল্যাণ পরিদর্শীকা, ২জন দায় নার্স, একজন মিডওয়াইফ, একজন সুইপার ও একজন পিয়ন কাম চৌকিদারের পদ রয়েছে। এর মধ্যে পিয়ন কাম চৌকিদারের পদটি শুন্য রয়েছে। বাকি ৫টি পদের ২জন এই মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে কর্মরত আছেন। অন্যরা প্রেষনে অনত্র দায়িত্ব পালন করছেন।

সরেজমিন দেখা যায়, দ্বিতল বিশিষ্ট ভবনের এই চিকিৎসা কেন্দ্রের দু’টি ওয়ার্ডের সকল বেড গুটিয়ে রাখা হয়েছে। দোতালায় জরাজীর্ণ ভবনে নষ্ট হচ্ছে ওটি রুমের যন্ত্রপাতি। একজন পরিবার কল্যাণ পরিদর্শীকা ও একজন মিডওয়াইফ নিচতলার একটি রুমে বসে তাদের নিয়মিত কাজ কর্ম করছেন। পাশে লেবার রুম ও বিকল্প একটি ওটি রুম রয়েছে। এছাড়া অন্যান্য রুম ব্যবহারের অযোগ্য। ছাদের পলেস্তরা খসে খসে পড়ছে। পাশেই রয়েছে আবাসিক ভবন। সেটিও জরাজীর্ণ বসবাসের অযোগ্য।

মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র সূত্রে জানায়ায়, এখানে ১০ মাস ধরে সরকারী ঔষধ সরবরাহ নেই। নিয়মিত নরমাল ডেলিভারী হলেও প্রায় দুই বছর ধরে ডেলিভারী কিটস্ সরবরাহ নেই। এমনকি গ্লাভস ও হেক্সাসলও নেই। প্রসূতির লোকজনকে এসবও বাইরে থেকে কিনে আনতে হয়। ডক্তার না থাকায় প্রসূতি মা ও নবজাতক শিশু থাকে ঝুকিতে। ফলে রোগীর লোকজন আগেই প্রসূতিকে বেসরকারী ক্লিনিকে অথবা অন্য কোথাও নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। গত ৮ মাসে এখানে ২১টি নরমাল ডেলিভারী (স্বাভাবিক সন্তান প্রসব) হয়েছে। বেশ কিছু প্রসূতিকে লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে। এখানে পূর্বে নিয়মিত অপারেশন হলেও ৪ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। জন্ম নিয়ন্ত্রণ সামগ্রী সরবরাহও বন্ধ ছিল। গত মাসে (আগস্ট) কিছুটা পাওয়া গেছে।

স্থানীয়রা জানান, ৬০ এর দশক থেকে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রটি চালু আছে। আগে এখানে নিয়মিত ডাক্তার থাকতেন। মা ও শিশুদের চিকিৎসা সেবা ছাড়াও সরকারী ঔষধ পাওয়া যেত। নিরাপদে সন্তান জন্মদানের এক মাত্র ভরসাস্থল ছিল এটি। বর্তমানে এখানে ডাক্তার ঔষধ কিছুই মেলে না। এখন নামেই শুধু ‘মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র’।

কর্মরত পরিবার কল্যাণ পরিদর্শীকা আখতার বানু বললেন, ‘এখানে নিয়মিত নরমাল ডেলিভারী হয়। আমার দু’খান হাত ছাড়া আর কোন সহযোগী নেই। তাই একটু অন্যরকম মনে হলেই লালপুর হাসপাতালে পাঠিয়ে দেই।’

তিনি আরও জানান, বর্তমানে এখানে কোন ঔষধ নেই। গ্লাভস ও হেক্সাসলও কিনতে হয় বাইরে থেকে। প্রায় ৪ বছর ধরে এখানে লাইগেশন হয়নি।

উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রায়হানুল হক আব্দুলপুর মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের দুরবস্থার কথা স্বীকার করে বলেন, মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের ভবনটি পুনঃনির্মাণ জরুরি। জরাজীর্ণ ভবনের কারণে অপারেশন বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে সরকারী ঔষধ সরবরাহ নেই। তবে শিগগরই ঔষধ পাওয়া যাবে।

লালপুরে ডাক্তার ও ঔষধ ছাড়া মাত্র দু’জন কর্মী দিয়ে চলে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র

প্রকাশিত সময় ০৪:৩২:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫



একজন পরিবার কল্যাণ পরিদর্শীকা ও একজন মিডওয়াইফ দিয়ে চলছে নাটোরের লালপুর উপজেলার আব্দুলপুরে ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র।

১০ মাস ধরে ঔষধ সরবরাহ নেই, ডাক্তার নেই ২ যুগ ধরে। দুই জন দায় নার্সের পোস্টিং থাকলে প্রেষনে অনত্র দায়িত্ব পালন করছেন তারা।

উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ থেকে জানা যায়, ১৯৬৫ সালে আব্দুলপুর মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রটি প্রতিষ্ঠিত। ১০ শয্যা বিশিষ্ট এই চিকিৎসা কেন্দ্রে সকল বয়সের মা ও শুন্য থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত বয়সের শিশুদের চিকিৎসা ব্যবস্থা চালু আছে। তবে প্রায় দুই যুগের বেশী সময় ধরে এখানে কোন ডাক্তারের পোস্টিং নেই। একজন পরিবার কল্যাণ পরিদর্শীকা, ২জন দায় নার্স, একজন মিডওয়াইফ, একজন সুইপার ও একজন পিয়ন কাম চৌকিদারের পদ রয়েছে। এর মধ্যে পিয়ন কাম চৌকিদারের পদটি শুন্য রয়েছে। বাকি ৫টি পদের ২জন এই মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে কর্মরত আছেন। অন্যরা প্রেষনে অনত্র দায়িত্ব পালন করছেন।

সরেজমিন দেখা যায়, দ্বিতল বিশিষ্ট ভবনের এই চিকিৎসা কেন্দ্রের দু’টি ওয়ার্ডের সকল বেড গুটিয়ে রাখা হয়েছে। দোতালায় জরাজীর্ণ ভবনে নষ্ট হচ্ছে ওটি রুমের যন্ত্রপাতি। একজন পরিবার কল্যাণ পরিদর্শীকা ও একজন মিডওয়াইফ নিচতলার একটি রুমে বসে তাদের নিয়মিত কাজ কর্ম করছেন। পাশে লেবার রুম ও বিকল্প একটি ওটি রুম রয়েছে। এছাড়া অন্যান্য রুম ব্যবহারের অযোগ্য। ছাদের পলেস্তরা খসে খসে পড়ছে। পাশেই রয়েছে আবাসিক ভবন। সেটিও জরাজীর্ণ বসবাসের অযোগ্য।

মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র সূত্রে জানায়ায়, এখানে ১০ মাস ধরে সরকারী ঔষধ সরবরাহ নেই। নিয়মিত নরমাল ডেলিভারী হলেও প্রায় দুই বছর ধরে ডেলিভারী কিটস্ সরবরাহ নেই। এমনকি গ্লাভস ও হেক্সাসলও নেই। প্রসূতির লোকজনকে এসবও বাইরে থেকে কিনে আনতে হয়। ডক্তার না থাকায় প্রসূতি মা ও নবজাতক শিশু থাকে ঝুকিতে। ফলে রোগীর লোকজন আগেই প্রসূতিকে বেসরকারী ক্লিনিকে অথবা অন্য কোথাও নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। গত ৮ মাসে এখানে ২১টি নরমাল ডেলিভারী (স্বাভাবিক সন্তান প্রসব) হয়েছে। বেশ কিছু প্রসূতিকে লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে। এখানে পূর্বে নিয়মিত অপারেশন হলেও ৪ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। জন্ম নিয়ন্ত্রণ সামগ্রী সরবরাহও বন্ধ ছিল। গত মাসে (আগস্ট) কিছুটা পাওয়া গেছে।

স্থানীয়রা জানান, ৬০ এর দশক থেকে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রটি চালু আছে। আগে এখানে নিয়মিত ডাক্তার থাকতেন। মা ও শিশুদের চিকিৎসা সেবা ছাড়াও সরকারী ঔষধ পাওয়া যেত। নিরাপদে সন্তান জন্মদানের এক মাত্র ভরসাস্থল ছিল এটি। বর্তমানে এখানে ডাক্তার ঔষধ কিছুই মেলে না। এখন নামেই শুধু ‘মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র’।

কর্মরত পরিবার কল্যাণ পরিদর্শীকা আখতার বানু বললেন, ‘এখানে নিয়মিত নরমাল ডেলিভারী হয়। আমার দু’খান হাত ছাড়া আর কোন সহযোগী নেই। তাই একটু অন্যরকম মনে হলেই লালপুর হাসপাতালে পাঠিয়ে দেই।’

তিনি আরও জানান, বর্তমানে এখানে কোন ঔষধ নেই। গ্লাভস ও হেক্সাসলও কিনতে হয় বাইরে থেকে। প্রায় ৪ বছর ধরে এখানে লাইগেশন হয়নি।

উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রায়হানুল হক আব্দুলপুর মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের দুরবস্থার কথা স্বীকার করে বলেন, মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের ভবনটি পুনঃনির্মাণ জরুরি। জরাজীর্ণ ভবনের কারণে অপারেশন বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে সরকারী ঔষধ সরবরাহ নেই। তবে শিগগরই ঔষধ পাওয়া যাবে।