ঢাকা ১০:২৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ২ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি :
সারাদেশের জেলা উপোজেলা পর্যায়ে দৈনিক স্বতঃকণ্ঠে সংবাদকর্মী নিয়োগ চলছে । আগ্রহী প্রার্থীগন জীবন বৃত্তান্ত ইমেইল করুন shatakantha.info@gmail.com // দৈনিক স্বতঃকণ্ঠ অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৭১১-৩৩৩৮১১, ০১৭৪৪-১২৪৮১৪

লালপুর বাজারে বছর জুড়ে জলাবদ্ধ; ভোগান্তিতে হাজারো মানুষ

লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত সময় ০৪:৩৯:৫৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / 55



নাটোরের লালপুর উপজেলার ছয় রাস্তার মোড় থেকে বাজারে ঢুকতে পুরাতন বাজার সহ উত্তর লালপুর এলাকায় একটু পানি হলেই বছরে নয় মাস জলাবদ্ধতা থাকে।

এতে লালপুর শ্রী সুন্দরী উচ্চ বিদ্যালয় ও লালপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে হাজার হাজার শিক্ষার্থীসহ শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ঐ এলাকায় প্রায় ৫০০শত পরিবারকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। অথচ নালাসহ মাত্র আধা কিলোমিটার সড়ক সংস্কার করা হলেই এ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব বলে মনে করেন স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বাসিন্দারা।

পুরাতন বাজার এলাকার বাসিন্দা শিক্ষক সৌমিত্র সরকার বলেন, জলাবদ্ধতার কারণে শিক্ষার্থীরা সময়মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারে না। সবাইকে নিয়ে ধর্মীয়, সামাজিক ও পারিবারিক অনুষ্ঠান করা যায় না।

ভুক্তভোগী বাসিন্দাদের ভাষ্য, নাটোর-লালপুর আঞ্চলিক সড়কের শেষ প্রান্তে ঐতিহ্যবাহী শ্রীসুন্দরী পাইলট উচ্চবিদ্যালয়। বিদ্যালয় ঘেঁষে উত্তর-পশ্চিমে দেড়শ বছরের ঐতিহ্যবাহী লালপুর বাজার। বাজারটি পুরাতন ও নতুন বাজার নামে দুই ভাগে বিভক্ত। বাজার ঘিরে গড়ে উঠেছে অভিজাত আবাসিক এলাকা। অথচ এখানকার প্রায় ৫০০ পরিবার ও শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে বছরের নয় মাস জলাবদ্ধতা লেগে থাকে। নতুন বাজারের উত্তরাংশের রিয়াজ স্টোর থেকে পুরাতন বাজারের ভেতর দিয়ে শিক্ষক শামসুল ইসলামের বাড়ি পর্যন্ত আধা কিলোমিটার সড়কটি একসময় পিচ কার্পেটিং করা ছিল। দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় সড়কের পাথর, খোয়া বিলীন হয়েছে অনেক আগেই।

লালপুর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য রাশেদুল ইসলাম বলেন, ড্রেনসহ সড়কটি উঁচু করে সংস্কার করা না হলে সমস্যার সমাধান হবে না। আমার জানা মতে রাস্তা সংস্কারের অর্থ বরাদ্দ হয়েছে।

দীর্ঘদিন ধরে এখানে নানা পেশাজীবী শ্রেণির বসবাস বলে জানালেন স্থানীয় বাসিন্দা ব্যবসায়ী ফরিদ আলী। তিনি বলেন, উপজেলার সবচেয়ে পুরোনো বাজারও এটি। অথচ এখানকার সমস্যা সমাধানে জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের নজর নেই বললেই চলে। স্থানীয় সরকারের অধীনে থাকা মাত্র আধা কিলোমিটার সড়কটি ড্রেন নির্মাণসহ সংস্কার করা হলে হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পেত।

মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিন দেখা যায়, লালপুর পুরাতন বাজারের উত্তরাংশের সড়কটি আশপাশের জায়গার তুলনায় নিচু হওয়ায় সড়কটি কাদা-পানিতে ডুবে আছে। ময়লা–আবর্জনা জমে সড়কের পানি পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। হেঁটে চলাও মুশকিল হয়ে পড়েছে। প্রাইভেট কার, অটো ভ্যান ও বাইক সড়কে ঢুকলে অধিকাংশ পরিবহনের চাকা ডুবে যাচ্ছে। এ কারণে এই সড়কে ভাড়ায় যানবাহন চলাচল করে না। এ যেন এক বিচ্ছিন্ন বসতি।

পুরাতন বাজার এলাকার বাসিন্দা বিলাস দাস বলেন, একটু বৃষ্টি হলেই সড়কের পানি উপচে আশপাশের বাড়িঘর ও দোকানপাটে ঢুকে পড়ে। তাঁরা হাট-বাজার, স্কুল-কলেজ ও থানা-হাসপাতাল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। বছরের মার্চ থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত এ অবস্থা চলতে থাকে।

স্কুল ছাত্র আদিত্য কৃষ্ণ সরকার বলেন, জলের মধ্যে দিয়ে স্কুল যেতে আর ভালো লাগেনা। পায়ে ঘা হয়ে গেছে।

লক্ষী ভান্ডারের মালিক আনন্দ সাহা বলেন, ‘জলাবদ্ধতার কারণে বাজারে লোকজন আসতে চায় না। ব্যবসা-বাণিজ্য নেই বললেই চলে। কর্মচারীদের ছুটি দিয়ে দোকান বন্ধ করে দিতে হবে।

স্থানীয় ব্যবসায়ী সুজন মাহমুদ বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে এর আগে ৪১ লাখ টাকা খরচে ড্রেন নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু অনিয়মের কারণে ড্রেনটি কাজে আসছে না।

লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, জলবদ্ধতার বিষয়টি তিনি জানেন। উপজেলা প্রকৌশলীকে সরজমিনে দেখার জন্য পাঠানো হয়েছিল। অর্থ বরাদ্দের জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে। প্রয়োজনে এডিপি অথবা জাইকা প্রকল্প গ্রহণ করে সমস্যার সমাধান করা হবে।

এই রকম আরও টপিক

লালপুর বাজারে বছর জুড়ে জলাবদ্ধ; ভোগান্তিতে হাজারো মানুষ

প্রকাশিত সময় ০৪:৩৯:৫৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫



নাটোরের লালপুর উপজেলার ছয় রাস্তার মোড় থেকে বাজারে ঢুকতে পুরাতন বাজার সহ উত্তর লালপুর এলাকায় একটু পানি হলেই বছরে নয় মাস জলাবদ্ধতা থাকে।

এতে লালপুর শ্রী সুন্দরী উচ্চ বিদ্যালয় ও লালপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে হাজার হাজার শিক্ষার্থীসহ শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ঐ এলাকায় প্রায় ৫০০শত পরিবারকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। অথচ নালাসহ মাত্র আধা কিলোমিটার সড়ক সংস্কার করা হলেই এ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব বলে মনে করেন স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বাসিন্দারা।

পুরাতন বাজার এলাকার বাসিন্দা শিক্ষক সৌমিত্র সরকার বলেন, জলাবদ্ধতার কারণে শিক্ষার্থীরা সময়মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারে না। সবাইকে নিয়ে ধর্মীয়, সামাজিক ও পারিবারিক অনুষ্ঠান করা যায় না।

ভুক্তভোগী বাসিন্দাদের ভাষ্য, নাটোর-লালপুর আঞ্চলিক সড়কের শেষ প্রান্তে ঐতিহ্যবাহী শ্রীসুন্দরী পাইলট উচ্চবিদ্যালয়। বিদ্যালয় ঘেঁষে উত্তর-পশ্চিমে দেড়শ বছরের ঐতিহ্যবাহী লালপুর বাজার। বাজারটি পুরাতন ও নতুন বাজার নামে দুই ভাগে বিভক্ত। বাজার ঘিরে গড়ে উঠেছে অভিজাত আবাসিক এলাকা। অথচ এখানকার প্রায় ৫০০ পরিবার ও শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে বছরের নয় মাস জলাবদ্ধতা লেগে থাকে। নতুন বাজারের উত্তরাংশের রিয়াজ স্টোর থেকে পুরাতন বাজারের ভেতর দিয়ে শিক্ষক শামসুল ইসলামের বাড়ি পর্যন্ত আধা কিলোমিটার সড়কটি একসময় পিচ কার্পেটিং করা ছিল। দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় সড়কের পাথর, খোয়া বিলীন হয়েছে অনেক আগেই।

লালপুর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য রাশেদুল ইসলাম বলেন, ড্রেনসহ সড়কটি উঁচু করে সংস্কার করা না হলে সমস্যার সমাধান হবে না। আমার জানা মতে রাস্তা সংস্কারের অর্থ বরাদ্দ হয়েছে।

দীর্ঘদিন ধরে এখানে নানা পেশাজীবী শ্রেণির বসবাস বলে জানালেন স্থানীয় বাসিন্দা ব্যবসায়ী ফরিদ আলী। তিনি বলেন, উপজেলার সবচেয়ে পুরোনো বাজারও এটি। অথচ এখানকার সমস্যা সমাধানে জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের নজর নেই বললেই চলে। স্থানীয় সরকারের অধীনে থাকা মাত্র আধা কিলোমিটার সড়কটি ড্রেন নির্মাণসহ সংস্কার করা হলে হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পেত।

মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিন দেখা যায়, লালপুর পুরাতন বাজারের উত্তরাংশের সড়কটি আশপাশের জায়গার তুলনায় নিচু হওয়ায় সড়কটি কাদা-পানিতে ডুবে আছে। ময়লা–আবর্জনা জমে সড়কের পানি পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। হেঁটে চলাও মুশকিল হয়ে পড়েছে। প্রাইভেট কার, অটো ভ্যান ও বাইক সড়কে ঢুকলে অধিকাংশ পরিবহনের চাকা ডুবে যাচ্ছে। এ কারণে এই সড়কে ভাড়ায় যানবাহন চলাচল করে না। এ যেন এক বিচ্ছিন্ন বসতি।

পুরাতন বাজার এলাকার বাসিন্দা বিলাস দাস বলেন, একটু বৃষ্টি হলেই সড়কের পানি উপচে আশপাশের বাড়িঘর ও দোকানপাটে ঢুকে পড়ে। তাঁরা হাট-বাজার, স্কুল-কলেজ ও থানা-হাসপাতাল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। বছরের মার্চ থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত এ অবস্থা চলতে থাকে।

স্কুল ছাত্র আদিত্য কৃষ্ণ সরকার বলেন, জলের মধ্যে দিয়ে স্কুল যেতে আর ভালো লাগেনা। পায়ে ঘা হয়ে গেছে।

লক্ষী ভান্ডারের মালিক আনন্দ সাহা বলেন, ‘জলাবদ্ধতার কারণে বাজারে লোকজন আসতে চায় না। ব্যবসা-বাণিজ্য নেই বললেই চলে। কর্মচারীদের ছুটি দিয়ে দোকান বন্ধ করে দিতে হবে।

স্থানীয় ব্যবসায়ী সুজন মাহমুদ বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে এর আগে ৪১ লাখ টাকা খরচে ড্রেন নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু অনিয়মের কারণে ড্রেনটি কাজে আসছে না।

লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, জলবদ্ধতার বিষয়টি তিনি জানেন। উপজেলা প্রকৌশলীকে সরজমিনে দেখার জন্য পাঠানো হয়েছিল। অর্থ বরাদ্দের জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে। প্রয়োজনে এডিপি অথবা জাইকা প্রকল্প গ্রহণ করে সমস্যার সমাধান করা হবে।